ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

দিনের পর দিন যে কাজ ঘাম ঝরিয়ে করছেন, এই ৫টি এআই অ্যাপ তা করে দেবে মিনিটে!

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৯:৪৫, ৯ জুলাই ২০২৫

দিনের পর দিন যে কাজ ঘাম ঝরিয়ে করছেন, এই ৫টি এআই অ্যাপ তা করে দেবে মিনিটে!

ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন অস্বীকার করার মতো নয়। প্রায় সব বড় প্রযুক্তি কোম্পানি তাদের অ্যাপ ও সেবায় এআই প্রযুক্তি যুক্ত করেছে। নতুন প্রজন্মের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলোতেও এআই-ভিত্তিক ফিচার থাকছে আগের চেয়ে বেশি।

একজন প্রযুক্তি ব্যবহারকারী শেয়ার করেছেন, কীভাবে তিনি তার দৈনন্দিন কাজের তালিকায় কয়েকটি এআই অ্যাপ যুক্ত করে অনেক সহজেই কাজের গতি ও উৎপাদনশীলতা কয়েকগুণ বাড়িয়েছেন।

১. গুগল জেমিনি (Gemini): অফিসের সব কাজ সহজে সামলানো

গুগল জেমিনি অ্যাপ তার সবচেয়ে বড় সহায়ক। ইমেইল লেখা, ডকুমেন্ট সারাংশ তৈরি, ক্যালেন্ডার এন্ট্রি, এমনকি গুগল ড্রাইভের ফোল্ডার সারাংশ তৈরিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ব্যক্তিগত ও পেশাগত কাজে তিনি জেমিনির স্মার্ট ইন্টিগ্রেশন ব্যবহার করে স্মার্ট লাইট নিয়ন্ত্রণ, জিমেইলে নির্দিষ্ট বিষয়ক ইমেইল খোঁজা, ড্রাইভে ফাইল খুঁজে বের করা, এমনকি ছবির মাধ্যমে ক্যালেন্ডারে ইভেন্ট তৈরি করেন।

গুগল শিটস-এ জটিল ফর্মুলা ও স্ক্রিপ্ট তৈরি করেও সময় বাঁচান তিনি। যদিও অনেক কাজে চ্যাটজিপিটি-এর উত্তরে তিনি বেশি সন্তুষ্ট, তবে গুগল সেবার গভীর সংযোগের কারণে জেমিনি এগিয়ে।

২. নোটবুকএলএম (NotebookLM): ছড়ানো-ছিটানো নোটে শৃঙ্খলা

নোটবুকএলএম তার গবেষণা ও নোট ব্যবস্থাপনার ধরণ পাল্টে দিয়েছে। আগের মতো আলাদা আলাদা জায়গায় নোট না রেখে তিনি এখন সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একসঙ্গে রাখেন এখানে।

এআই-এর মাধ্যমে নোটবুকএলএম নোট ঘেঁটে প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই বের করে দেয়। ফলে, আলাদা করে অগণিত নোট ঘাঁটার ঝামেলা নেই। গুগল কিপ ও এভারনোটের নোটও এখানে এনে ব্যবহার করেন তিনি।

তার মতে, এই অ্যাপ ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক’-এর মতো কাজ করে, যেখানে সব তথ্য একত্রে পাওয়া যায়। ফলে, সময় বাঁচে, কাজের গতি বাড়ে।

৩. চ্যাটজিপিটি: সবসময় পাশে থাকা স্বাস্থ্য ও কাজের সহায়ক

চ্যাটজিপিটি তার কাছে দৈনন্দিন কাজে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। খাবারের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হাঁটু ও মেরুদণ্ডের ব্যথার জন্য উপযোগী খাবার ও ব্যায়াম পর্যন্ত পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি।

শুধু স্বাস্থ্যই নয়, পেশাগত কাজেও চ্যাটজিপিটি-এর সাহায্য নেন তিনি। ভয়েস মোড ব্যবহার করে নতুন আইডিয়া ভাবা, লেখা তৈরি, এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে চ্যাটজিপিটি তার ‘ডিজিটাল সহকর্মী’ হয়ে উঠেছে।

এছাড়া, আগের মতো আর বহু ওয়েবসাইট ঘেঁটে তথ্য খুঁজতে হয় না। এমনকি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে জটিল অটোমেশন সেটআপেও চ্যাটজিপিটি তাকে সাহায্য করেছে, যা আগে নিজে বারবার চেষ্টা করেও পারেননি।

৪. পারপ্লেক্সিটি (Perplexity): গভীর গবেষণার সেরা সহকারী

গুগল সার্চের পরিবর্তে পারপ্লেক্সিটি ব্যবহার করেন তিনি। নির্ভুল তথ্য খুঁজতে, সহজবোধ্য সারাংশ পেতে এবং সূত্র যাচাই করতে এই এআই অ্যাপ তার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।

তার স্ত্রী পেশায় আইনজীবী। তিনি আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে মামলা খুঁজতে হয় না; পারপ্লেক্সিটি কয়েক সেকেন্ডেই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে দেয়, সূত্রসহ।

এছাড়া, পারপ্লেক্সিটি ব্যবহার করে তিনি ছুটির ভ্রমণের বিস্তারিত পরিকল্পনাও তৈরি করেছেন, যেখানে রয়েছে বিমান, হোটেল, খাবারের দোকানসহ নানা তথ্য। এর আগে এসব করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগতো।

৫. নোশন এআই মিটিং নোটস (Notion AI Meeting Notes): সভার বিশৃঙ্খলা থেকে স্পষ্ট সমাধান

প্রতিদিনের প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় নোশনের এআই মিটিং নোটস তার অন্যতম ভরসা। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিটিং রেকর্ড করে ও সংক্ষিপ্তসার তৈরি করে দেয়।

বিভিন্ন ভাষার বিশৃঙ্খল আলোচনাও এই ফিচার সহজে পরিচালনা করে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এআই-এর তৈরি সারাংশে তার নিজের নোটও যুক্ত হয়, ফলে তা আরও কার্যকর হয়।

প্রতিটি মিটিংয়ের শেষে অ্যাকশন আইটেমসহ বিস্তারিত তালিকা পাওয়া যায়, যা সরাসরি কাজের নির্দেশনা দেয়।

নোশনের এআই মিটিং নোটস Zoom, Teams ও Google Meet-এ কাজ করে, আলাদা কোনো সেটআপ ছাড়াই।

এই ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা দেখাচ্ছে, এআই অ্যাপ শুধু কাজের গতি বাড়ায় না, বরং কাজের ধরণই বদলে দেয়। যদিও এখনো কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তবে এআই অ্যাপগুলোর উন্নতি অব্যাহত থাকছে।

তিনি মনে করেন, সময়ের সাথে এগুলো আরও দক্ষ হয়ে উঠবে এবং কাজের উৎপাদনশীলতা নতুন মাত্রা পাবে।

আবির

×