ছবি :সংগৃহীত
একদিকে মানুষ যখন মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করছেন একাধিক টিভি সাবস্ক্রিপশন ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে, তখন এক সুইস তরুণ উদ্ভাবক তৈরি করে ফেলেছেন একটি ছোট্ট ডিভাইস—যা দিয়ে একদম বিনামূল্যে দেখা যাবে সব টিভি চ্যানেল ও ভিডিও অ্যাপ, তাও আবার সম্পূর্ণ বৈধভাবে।
এই বক্সটির নাম Smart TV Box। এটি একটি ছোট প্লাগ-ইন ডিভাইস, যা যেকোনো টিভির HDMI পোর্টে লাগালেই কাজ করে। ব্যবহারকারী এতে বিনামূল্যে হাজারো চ্যানেল ও স্ট্রিমিং অ্যাপে প্রবেশ করতে পারেন—নেটফ্লিক্স থেকে শুরু করে ইউটিউব, ডিজনি+ পর্যন্ত সব কিছু।
কিভাবে কাজ করে এই বক্স?
স্মার্ট টিভি বক্সটি আসলে একটি প্রযুক্তিগত হাব হিসেবে কাজ করে। এটি নির্মাতারা হাজার হাজার চ্যানেল ও অ্যাপের সাবস্ক্রিপশন কিনে একটি সার্ভারের মাধ্যমে সেগুলোকে ব্যবহারকারীদের মাঝে পুনঃবণ্টন করে থাকেন। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহৃত হয়, যা নিশ্চিত করে নিরবিচারে স্ট্রিমিং অভিজ্ঞতা।
ডিভাইসটি ব্যবহার করতে শুধুই টিভির HDMI পোর্টে এটি প্লাগ ইন করতে হয়। এরপর কোনো সেটিং বা ঝামেলা ছাড়াই, টিভি চালু করলেই চালু হয়ে যায় সব চ্যানেল ও অ্যাপ।
কে এই তরুণ উদ্ভাবক?
এই স্মার্ট ডিভাইসের পেছনে রয়েছেন সুইজারল্যান্ডের তরুণ প্রকৌশলী রেমি। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিজের ব্যাচমেটদের থেকে দুই বছর আগে গ্র্যাজুয়েশন করেন তিনি। ২০২০ সালের শুরুতে তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে, স্টার্টআপের স্বপ্ন নিয়ে।
শুরুতে তিনি একটি সাশ্রয়ী দামের স্মার্ট টিভি তৈরির পরিকল্পনা করলেও, ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন নতুন এক ধারণা নিয়ে—একটি ছোট বক্স, যেটি সব ধরনের টিভিকে করে তুলবে “স্মার্ট”।
রেমি বলেন, “আমি এমন কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলাম যা সবার জন্য সহজলভ্য হবে—বয়স, প্রযুক্তি বা টাকার সীমাবদ্ধতা ছাড়াই।”
সুবিধাগুলো এক নজরে:
- হাজারো চ্যানেলের অ্যাক্সেস, যাদের মধ্যে অনেক বিখ্যাত চ্যানেলও রয়েছে
- জনপ্রিয় সব স্ট্রিমিং অ্যাপ (Netflix, Disney+, Amazon Prime, ইত্যাদি)
- গেম খেলার সুবিধা—টিভির বড় পর্দায়
- ওয়েব ব্রাউজার—ইমেইল, ইউটিউব, ব্রাউজিং
- মাত্র ২ মিনিটেই সেটআপ
- যেকোনো টিভিতে ব্যবহারযোগ্য
- ছোট ও জায়গা সাশ্রয়ী—টিভির পেছনে লুকিয়ে থাকে
- মাসে শত শত ডলার সাশ্রয়
- ১০০% বৈধ এবং নিরাপদ
দাম ও বৈধতা
এই স্মার্ট টিভি বক্সটির দাম ধরা হয়েছে মাত্র ৯৯ ডলার, যা অনেকের কাছে এককালীন বেশি মনে হলেও, মাসে মাসে আলাদা করে একাধিক সাবস্ক্রিপশন কেনার তুলনায় এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
সবচেয়ে বড় কথা, এটি সম্পূর্ণ বৈধ ও নিরাপদ। কোনো হ্যাক বা পাইরেসির মাধ্যমে এটি কাজ করে না। চাইলে ব্যবহারকারী এটি খুলেও ফেলতে পারেন—টিভির কোনো ক্ষতি হবে না।
টেলিভিশনের জগতে নতুন বিপ্লব?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিক যেভাবে অ্যামাজন বইয়ের বাজার বদলে দিয়েছে বা মিউজিক স্ট্রিমিং সিডির জায়গা নিয়েছে, সেভাবেই রেমির স্মার্ট টিভি বক্স টেলিভিশনের ধারণাকেই বদলে দিচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রযুক্তিবিদ ও গিক কমিউনিটিতে এটি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
কেউ কেউ বলছেন, এই কোম্পানির বাজার মূল্য তিন বছরের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সূত্র - Techno Mag
সা/ই
