
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকার সংগ্রামী নেতা মোহাম্মদ সিনোয়ার শহীদ হয়েছেন ইসরায়েলি বিমান হামলায়। গাজায় গত মঙ্গলবার চালানো ওই হামলায় ইউরোপিয়ান হাসপাতাল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ঘটনার চারদিন পর সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় মোহাম্মদ সিনোয়ার এবং তার ১০ জন সহযোগীর মরদেহ। সৌদি আরবভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল হাদাদ বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তেলআবিব এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি।
যখন অনেক হামাস নেতা বিদেশে বিলাসবহুল জীবন বেছে নিয়েছেন, তখন মোহাম্মদ সিনোয়ার থেকে গেছেন গাজাতেই, মাটি ও মানুষের পাশে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি ছিলেন এক নির্ভীক লড়াকু। যুক্তরাষ্ট্র তাকে সশস্ত্র আন্দোলন বন্ধের বিনিময়ে প্রস্তাব দিয়েছিল ২০০ কোটি ডলার ও পরিবারসহ বিদেশে নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা। কিন্তু মাতৃভূমির প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপসহীন। এই অবিচল নিষ্ঠা ও সাহসিকতায় তিনি অর্জন করেন অবিসংবাদিত নেতার মর্যাদা।
হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনোয়ারের মৃত্যুর পর সংগঠনটির নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন তার ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনোয়ার। ধ্বংসপ্রাপ্ত ও বিপর্যস্ত হামাসকে পুনর্গঠনের পেছনে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের শীর্ষ কমান্ডার। মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার পর তিনি সামরিক দায়িত্বও হাতে নেন। নিঃশব্দে, নিভৃতচারী কৌশলে পরিচালিত তার কার্যক্রমের কারণে তাকে ‘ছায়ামানব’ নামে ডাকতেন অনেকে।
গত মঙ্গলবার, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে সফরে ছিলেন, তখনই গাজায় মোহাম্মদ সিনোয়ারের অবস্থান লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। ইউরোপিয়ান হাসপাতালে নিক্ষেপ করা হয় অন্তত নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র। হামলায় মোহাম্মদ সিনোয়ার ছাড়াও শহীদ হন হামাসের রাফা উইংয়ের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ শাবান।
গাজার মাটি আজ শোকাহত, তবে গর্বিত—কারণ মোহাম্মদ সিনোয়ার শহীদ হয়েছেন লড়াইয়ের ময়দানে, মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষায়।
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=bCBAKdfzFjs
এম.কে.