
ঈশিতা বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন শিল্পী। ১৯৮৬ সাল থেকে ঈশিতা অভিনয়ের সাথে যুক্ত। নতুন কুঁড়ি টিভি অনুষ্ঠানে শিশু শিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম খ্যাতি লাভ করেন। এরপর তিনি অভিনেত্রী ও মডেল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নিতে নৃত্য এবং গান করেন।
বেসরকারি একটি গণমাধ্যমের আলাপচারিতায় জীবনের বিভিন্ন ঘতনা তুলে ধরেছেন।
ঈশিতা বলেন, আমার সাথে যারা ছিল, যাদের সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিল, আমরা যারা মোটামুটি একসাথে বড় হয়েছি শাওন, শ্রাবন্তী, তারিন আপু তাদের জীবনও আমার মতই ছিল তাই মনে হতো এই জীবনটা নরমাল। যার জন্য আমার পড়াশোনায় কখনো সমস্যা হয়নি। আমি মেট্রিক, ইন্টারমিডিয়েট সবকিছুতেই ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করেছি। কিন্ত আমার ধারণা আমি যদি ক্লাসের অন্যদের মত আরো বেশি সময় দিতে পারতাম পড়াশোনায়, তাহলে আমার রেজাল্ট আরো ভালো হতো। আমি পড়ার সময় খুব কম পেতাম।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ প্রদত্ত কিছু না থাকলে, এত কম পড়ে এতটা আসা যায় না এইটা আমি এখন বুঝি। তখন মনে হতো আমি এত খারাপ স্টুডেন্ট কেন! খারাপ স্টুডেন্ট মানে এই না আমার ফার্স্ট ডিভিশনের মার্ক্স থাকতো না এমন না, ফার্স্ট ডিভিশন সবসময় থাকতো। কিন্ত আমার মনে হতো আমি যাদের সাথে পড়ি ওদের মত পারি না কেন, কিন্ত এটা এখন বুঝি তারা যেটা ৪ ঘণ্টায় করতো আমি হয়তো সেটা ১ ঘণ্টায় করতাম। তাই আমি পড়াশোনার জন্য আরেকটু সময় পেলে আমার মনে হয় আমার রেজাল্ট আরো ভালো হতো।
ঈশিতা তার স্কুল জীবন সম্পর্কে বলেন, আমি হলি ক্রস স্কুলে পড়েছি ১-১০ শ্রেণী পর্যন্ত। হলি ক্রসে এখন যেমন ডিসিপ্লিন তখনও এমন ডিসিপ্লিন পরিবেশ ছিল। আর আমার এই পরিবেশটা ভালো লাগতো। হলি ক্রস স্কুলে কিছু নিয়ম ছিল যা অনেক স্কুলেই আমি দেখি না। আমরা নিজেদের ক্লাস নিজেরা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করতাম। সপ্তাহে ৫ দিনে পাঁচটা গ্রুপ ছিল। ওখানে একইসাথে মন্ত্রীর মেয়েরাও পড়তেন আবার সাধারণ পরিবারের মেয়েরাও পড়তেন। আমরা সবাই একসাথে ঝাড়ু দিয়ে ক্লাস পরিষ্কার করতাম। আমার মনে হয় এটা মানুষকে এমন জিনিস শেখায়, যেটা বই পড়ে শিখতে পারবেন না, এটার মনে হয় দরকার আছে।
স্কুলে আমি সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলাম, ব্যস্ততার কারণে স্কুলটা যেভাবে ইঞ্জয় করা যায় সেটা আমি করতে পারিনি।
এরপর কলেজ সম্পর্কে বলেন, কলেজের সময়টা খুবই কম ছিল, ভিকারুননিসা কলেজে এসে আমার মনে হলো জীবনটা আসলে অন্যরকম। কারণ, ইচ্ছা করলেই এখানে ক্লাসের পিছন দিয়ে বের হয়ে যাওয়া যায়। যেহেতু আমি হলি ক্রস থেকে এসেছি, এই সাহস আমার কোনদিন হয়নি। যারা ওখান দিয়ে বের হয়ে যেত তাদেরকে আমার কাছে সুপারম্যান, ব্যাটম্যানের মতো হিরো মনে হতো। তাদেরকে আমি এডমায়ার করতাম। আর বাসায় এসে ভাবতাম, কোন একদিন আমিও যদি এভাবে সাহস করে বের হয়ে যেতে পারতাম, কিন্ত সেটা কোনদিনই হয় নাই।
ঈশিতা বলেন, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক স্নেহ করতেন। একটা কথা বলতেই হবে, সারাজীবন আমার যারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন সবাই আমাকে অনেক স্নেহ করেছেন। এমন কারো নাম আমি বলতে পারব না, যাদের থেকে আমি আন্তরিকভাবে ভালোবাসা ও স্নেহ পাইনি।
রিফাত