ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিদায় জানালো ব্যান্ড ‘কাকতাল’

প্রকাশিত: ২১:০৬, ১৮ মে ২০২৫

বিদায় জানালো ব্যান্ড ‘কাকতাল’

ছবি : সংগৃহীত

চার বছর আগে সঙ্গীতাঙ্গনে পা রেখেছিল ব্যতিক্রমী ব্যাকস্টোরি নিয়ে গঠিত ব্যান্ড ‘কাকতাল’। ‘আবার দেখা হবে’, ‘গোলকধাঁধা’, ‘সোডিয়াম’-এর মতো গান দিয়ে তরুণদের মনে জায়গা করে নেওয়া এই ব্যান্ড হঠাৎ করেই তাদের কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে।

সম্প্রতি ব্যান্ডটির পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তারা লেখে, 'প্রায় চার বছরের এক দুর্দান্ত যাত্রা ছিল আমাদের- সেটা সম্ভব হয়েছে আপনাদের ভালোবাসা ও পাশে থাকার জন্য। এই যাত্রায় আমরা অনেক ভালোবাসা, প্রাপ্তি আর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি যা আমাদের কল্পনারও বাইরে ছিল। আমরা আশা করি, আমাদের গানগুলো আপনাদের স্মৃতির পাতায় কিছুটা হলেও জায়গা করে নিতে পেরেছে।'

ব্যান্ডটি আরও জানায়, যেই ‘শান্তি’র খোঁজে কাকতালের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেটি এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই, পথচলা থামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তবে বিদায়ী বার্তায় তারা সবাইকে নিজ নিজ জীবনে ‘শান্তির খোঁজ’ পাওয়ার শুভকামনাও জানিয়েছে।

তবে কাকতালের এই বিরতি স্থায়ী নাও হতে পারে। ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল ও প্রতিষ্ঠাতা আসিফ ইকবাল অন্তু জানিয়েছেন, “কাকতাল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না। আপাতত কার্যক্রম নেই। সব কিছু ঠিক হয়ে গেলে কাকতাল আবারও ফিরতে পারে।” যদিও কী কী কারণে এই বিরতি, কিংবা ‘সব ঠিক হয়ে যাওয়া’ বলতে তিনি কী বোঝাচ্ছেন, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ব্যান্ড কাকতালের জন্ম হয় ব্যতিক্রম এক প্রেক্ষাপটে—কারাগারে। মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসিফ ইকবাল অন্তু সেখানে থেকেই গঠন করেন ব্যান্ডটি। তার সঙ্গে ছিলেন আরও কিছু কারাবন্দি। কারাগারে থাকা অবস্থায় অন্তুর লেখা-সুরে তৈরি হয় দুই শতাধিক গান। কারা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বন্দিদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করতেই ওই সময় কিছু বাদ্যযন্ত্র আনা হয়। সেই সুযোগ থেকেই তৈরি হয় ‘মননচর্চা’ নামের একটি সংগঠন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সৃজনশীল চর্চার মাধ্যমে বন্দিদের মানসিক পুনর্গঠন।

২০২১ সালে আসিফ কারামুক্তির পর কাকতাল স্বাধীনভাবে পথচলা শুরু করে। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে পূর্ণাঙ্গ লাইনআপ—আসিফ ইকবাল অন্তু (ভোকাল ও গিটার), নাজেম আনোয়ার (বাঁশি), অ্যালেক্স জোভেন (ড্রামস ও পারকাশন), সৌম্য অনিন্দ্য ঋদ্ধ (বেস গিটার)। এছাড়া অন্তর ও জাভেদও এই সৃজনশীল যাত্রার সঙ্গী ছিলেন।

চার বছর পর কাকতালের থেমে যাওয়া যেন সঙ্গীতজগতে এক নিঃশব্দ অভাব হয়ে রইল—যা তৈরি হয়েছিল বন্দিত্ব থেকে, আর পৌঁছে গিয়েছিল মুক্ত মানুষের হৃদয়ে।

সা/ই

×