ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মাঝ আকাশেই যেভাবে ধ্বংস হয়ে গেল ভারতীয় রকেট

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ১৮ মে ২০২৫

মাঝ আকাশেই যেভাবে ধ্বংস হয়ে গেল ভারতীয় রকেট

ছবি: সংগৃহীত

ভোরের আকাশ তখনো আবছা অন্ধকারে ঢাকা। শ্রী হরিকোটার উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে শোনা যাচ্ছিল জ্বলন্ত রকেটের গর্জন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই নেমে এলো নিস্তব্ধতা। কারণ মহাকাশে পৌঁছানোর আগেই থেমে গেল ভারতের এই স্বপ্নযাত্রা। পিএসএলভি সি৬১ মিশনের রকেটটি ধ্বংস করে দেওয়া হলো মাঝ আকাশেই। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইস্রোর ইতিহাসে যোগ হলো আরেকটি ব্যর্থতার অধ্যায়। 

রবিবার (১৮ মে) ইস্রোর এক নতুন মহাকাশ মিশন ইওএস০৯ উৎক্ষেপণ চারদিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ সেটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় রূপ নিল পিএসএলভি সি৬১ রকেটটি উৎক্ষেপণের পর তৃতীয় ধাপে পৌঁছেই সমস্যার মুখে পড়ে। ইঞ্জিনের চেম্বার চাপ কমে যাওয়ার কারণে সেটিকে মহাকাশেই ধ্বংস করতে বাধ্য হয় বিজ্ঞানীরা। পরিকল্পিত কক্ষপথে পৌঁছাতে পারেনি উপগ্রহ। শেষ পর্যন্ত সমস্ত চেষ্টা বিফলে যায়। কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এই উপগ্রহ বড় ভূমিকা রাখার কথা ছিল। কিন্তু উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পর তৃতীয় ধাপে রকেটের ইঞ্জিনে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ে। চেম্বার প্রেসার হঠাৎ কমে যায়। 

মিশন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেয় রকেটটিকে ধ্বংস করতে হবে, যাতে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পৃথিবীর বুকে বিপর্যয় নামিয়ে না আনে। 

ইস্রোর চেয়ারম্যান ডক্টর ভি নারায়ণ বলেন, “মিশনটি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। আমরা ফেইলিওর এনালাইসিস কমিটি গঠন করছি। কি কারণে এই ব্যর্থতা তা বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হবে।” 

তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন প্রযুক্তিগত ভুল সূত্রে ফের ফিরবে ইস্রো। আরো উন্নত হয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে। 

এটাই প্রথম নয়। ইস্রোর ইতিহাসে ব্যর্থতার অধ্যায়ে আছে আরো কয়েকটি গল্প। এর আগে ২০১০ সালে জিএসএলভিডি৩ উৎক্ষেপণে ব্যর্থ হয় ইস্রো। প্রয়োজনিক ইঞ্জিনের ত্রুটিতে ধ্বংস হয় রকেট। এরপর ২০১৭ সালে আইআরএনএসএস ওয়ান এইচ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়। রকেটের ফেয়ারিং না খোলার কারণে এই বিপর্যয় ঘটে তখন। 

এছাড়াও ২০১৯ সালে চন্দ্রজান দুই এর ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে পৌঁছানোর আগেই হারিয়ে যায় সেটির নিয়ন্ত্রণ। তবে এই ব্যর্থতাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ইস্রো বারবার ফিরে এসেছে। ২০১৪ সালের মঙ্গল যাত্রা বা ২০২৩ সালের চন্দ্রজান তিন তারই উদাহরণ।

মিরাজ খান

×