ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০টি যুদ্ধবিমান, কোন কোন দেশ রয়েছে শীর্ষে?

প্রকাশিত: ১৬:০১, ১৮ মে ২০২৫; আপডেট: ১৬:০১, ১৮ মে ২০২৫

২০২৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০টি যুদ্ধবিমান, কোন কোন দেশ রয়েছে শীর্ষে?

ছবিঃ সংগৃহীত

আধুনিক প্রযুক্তি ও কৌশলের সমন্বয়ে সামরিক যুদ্ধবিমান এখন আকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার একক প্রতীক। স্টিলথ প্রযুক্তি, সুপারসনিক গতি, অটোমেটেড কমব্যাট সিস্টেম এবং মাল্টিরোল সক্ষমতা—সব মিলিয়ে যুদ্ধবিমানগুলো হয়ে উঠেছে আধুনিক যুদ্ধে বিজয় নির্ধারণের মূল হাতিয়ার। চলুন জেনে নেওয়া যাক ২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি শক্তিশালী যুদ্ধবিমান সম্পর্কে।

১. এফ-২২ র‍্যাপটর (F-22 Raptor) – যুক্তরাষ্ট্র
পঞ্চম প্রজন্মের এই স্টিলথ ফাইটার জেটটি শব্দের দ্বিগুণ গতিতে ঘণ্টায় প্রায় ১৫০০ মাইল অতিক্রম করতে সক্ষম। স্টিলথ প্রযুক্তি, সুপার ক্রুজ, অ্যাডভান্সড অ্যাভিয়নিক্স এবং এয়ার সুপিরিয়রিটির জন্য এটি এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে।

২. চেংডু জে-২০ (Chengdu J-20) – চীন
চীনের প্রথম স্টিলথ যুদ্ধবিমান, যার মূল লক্ষ্য এফ-২২ এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে এই এয়ারক্রাফ্ট, যদিও বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে এর অভিজ্ঞতা সীমিত।

৩. এফ-৩৫ লাইটনিং টু (F-35 Lightning II) – যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের একমাত্র আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টিরোল ফাইটার। স্থল, নৌ ও আকাশ—তিন রণাঙ্গনেই কার্যকর। উচ্চ প্রযুক্তির এই ফাইটার জেট ইতোমধ্যে ইসরাইলসহ বহু মিত্র দেশের রণাঙ্গনে প্রমাণ করেছে নিজেকে।

৪. এসইউ-৫৭ ফেলন (SU-57 Felon) – রাশিয়া
রাশিয়ার প্রথম স্টিলথ যুদ্ধবিমান। উচ্চ গতির সক্ষমতা, সুপার ক্রুজ এবং আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থায় সজ্জিত হলেও এর স্টিলথ কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। ইউক্রেন যুদ্ধে সীমিতভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

৫. ইউরোফাইটার টাইফুন (Eurofighter Typhoon) – ইউরোপীয় জোট
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি এবং স্পেনের যৌথ প্রকল্প। ৪.৫ প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানটি উচ্চ গতি ও অসাধারণ ফ্লাইট এজিলিটির জন্য সুপরিচিত। মধ্যপ্রাচ্যে বেশ কয়েকটি সফল মিশন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

৬. ডাসল্ট রাফাল (Dassault Rafale) – ফ্রান্স
সৌন্দর্য ও শক্তির অসাধারণ সংমিশ্রণ। স্পেক্ট্রা ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেমসহ উন্নত সেন্সর ও অস্ত্র ব্যবস্থায় সজ্জিত। যদিও পাকিস্তানের কাছে রাফালের কিছু দুর্বলতা প্রকাশ পায়, তবুও এটি একটি উল্লেখযোগ্য ফাইটার।

৭. এফ-১৫ ইগল টু (F-15EX Eagle II) – যুক্তরাষ্ট্র
পুরনো কিংবদন্তি ইগলের আধুনিক সংস্করণ। বিশাল পেলোড ক্ষমতা, উন্নত সেন্সর এবং দীর্ঘ পাল্লার আক্রমণ ক্ষমতা এটিকে এখনো আকাশে ভয়ঙ্কর প্রতিদ্বন্দ্বী করে রেখেছে।

৮. এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট (F/A-18 Super Hornet) – যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর প্রধান এয়ার ডিফেন্স যুদ্ধবিমান। ক্যারিয়ার ভিত্তিক এই এয়ারক্রাফ্টটি প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ দুই ক্ষেত্রেই পারদর্শী, যদিও প্রযুক্তিগত দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে এফ-৩৫-এর তুলনায়।

৯. সুখোই এসইউ-৩৫ (Sukhoi SU-35) – রাশিয়া
চতুর্থ প্রজন্মের এই মাল্টিরোল ফাইটার উন্নত রাডার, অত্যাধুনিক এভিয়নিক্স এবং বহু ধরনের অস্ত্র বহনে সক্ষম। ইউক্রেন যুদ্ধে কিছু ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়লেও এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অস্বীকারযোগ্য নয়।

১০. চেংডু জেএইচ-১৭সি (Chengdu J-17C) – চীন
চীনের ৪.৫ জেনারেশনের হোমগ্রাউন্ড ফাইটার, যা পাকিস্তানের সহযোগিতায় উন্নয়ন করা হয়েছে। উন্নত রাডার এবং পিএল-১৫ মিসাইলসহ আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এই যুদ্ধবিমান ইতোমধ্যে রাফালের বিরুদ্ধে বাস্তব সাফল্য দেখিয়েছে।


আধুনিক যুদ্ধবিমান কেবল যুদ্ধজয়ের মাধ্যম নয়, বরং রাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা ও কৌশলগত শক্তির প্রতিফলন। ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্রে এয়ার সুপিরিয়রিটি অর্জনে এসব যুদ্ধবিমানের ভূমিকা হবে নির্ধারক।

 

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/a-zg6jcVXMc?si=bs0Gy0_JaiOmSF7g

মারিয়া

×