ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সুখী হতে নিন ২৪ ঘণ্টার ডোপামিন রিসেট চ্যালেঞ্জ!

প্রকাশিত: ১৮:২০, ১৮ মে ২০২৫

সুখী হতে নিন ২৪ ঘণ্টার ডোপামিন রিসেট চ্যালেঞ্জ!

ছবি :সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে আপনি কি নিজেকে বারবার ক্লান্ত, অপ্রাণবন্ত বা মনমরা অনুভব করছেন? সামাজিক মাধ্যমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রল করছেন, সিরিজ দেখে সময় কাটাচ্ছেন, বা ঝটপট আনন্দ পাওয়ার আশায় বারবার ফোনের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন, কিন্তু সবশেষে থেকে যাচ্ছে একধরনের শূন্যতা?

এর কারণ হতে পারে ডোপামিন ডিজেনসিটাইজেশন, অর্থাৎ আপনার মস্তিষ্কের ‘পুরস্কার ব্যবস্থা’ এত বেশি উত্তেজিত হয়েছে যে, যেসব জিনিস আগে আনন্দ দিত বা অনুপ্রেরণা জোগাত, সেগুলো এখন আর তেমন কাজ করছে না। তবে সুখবর হলো—এ অবস্থার সমাধান আছে, এবং সেটা হলো ২৪ ঘণ্টার ডোপামিন রিসেট চ্যালেঞ্জ।

ডোপামিন রিসেট চ্যালেঞ্জ কী?
নিউরোসায়েন্টিস্ট ও লেখক টিজে পাওয়ার সম্প্রতি এই চ্যালেঞ্জটি তুলে ধরেছেন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে। তার মতে, এই চ্যালেঞ্জ মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক রাসায়নিকের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। ডোপামিন আমাদের অনুভূতি, মোটিভেশন এবং আনন্দের অনুভূতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

তিনি বলেন, আজকাল আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা—নিজের হাতে ধরা ফোন। স্ক্রিনে চোখ রাখা যতই আনন্দদায়ক মনে হোক না কেন, এটি আমাদের ডোপামিন ব্যবস্থাকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে এবং আমরা হয়ে পড়ছি বিমনা ও উদাসীন।

চ্যালেঞ্জের নিয়ম: মাত্র তিনটি
এই ২৪ ঘণ্টার চ্যালেঞ্জটি খুবই সহজ, এবং মাত্র তিনটি জায়গায় স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো:

১. খাবারের সময় স্ক্রিন নয়:
আপনি দিনে তিন বেলা খাবার খান—সেই তিনবারই কোনো স্ক্রিন (ফোন, টিভি, ট্যাবলেট) দেখা যাবে না। শুনতে সহজ মনে হলেও অনেকের জন্য এটি কঠিন হতে পারে, কারণ আজকাল খাওয়ার সময় ইউটিউব বা ফেসবুক ভিডিও দেখা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

২. ঘুমের ঘরে স্ক্রিন নিষিদ্ধ:
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ফোন বা ট্যাবলেট বিছানায় নেওয়া যাবে না। শান্তভাবে শুয়ে পড়তে হবে এবং ঘুমিয়ে পড়তে হবে কোনো রকম স্ক্রিন স্টিমুলেশন ছাড়া। এটি ঘুমের মানও উন্নত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

৩. টয়লেটেও স্ক্রিন নয়:
সবচেয়ে কঠিন অংশ সম্ভবত এটাই—টয়লেটে ফোন নেওয়া যাবে না! আমাদের মধ্যে অনেকেই টয়লেটে গিয়ে ফোন ঘাঁটতে অভ্যস্ত। কিন্তু এই অভ্যাসও ডোপামিন লেভেল নষ্ট করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন টিজে পাওয়ার।

কেন কাজ করে এই চ্যালেঞ্জ?
এই তিনটি জায়গা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে বেশি সময় ফোনে থাকার স্থান। যখন আমরা এই মুহূর্তগুলোতে স্ক্রিন এড়িয়ে যাই, তখন মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমে এবং ধীরে ধীরে ডোপামিনের স্বাভাবিক ভারসাম্য ফিরে আসে। এতে করে জীবনের ছোট ছোট বিষয়েও আনন্দ পাওয়া যায় এবং আগের মতোই উচ্ছ্বাস ফিরে আসে।

আপনি যদি প্রতিদিন ক্লান্ত, উদ্বিগ্ন বা বিষণ্ন অনুভব করেন, তবে এই ২৪ ঘণ্টার চ্যালেঞ্জ আপনার জীবনে ছোট্ট কিন্তু কার্যকর একটি পরিবর্তন আনতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ সময়ের দাবি। নিজেকে একটু সময় দিন, ফোনকে নয়। সুখী হতে হলে বড় পরিবর্তনের দরকার নেই, দরকার ছোট ছোট সিদ্ধান্ত—ঠিক যেমন এই চ্যালেঞ্জ।

সা/ই

×