
রাব্বির আইটি ফার্ম
ফ্রিল্যান্সিং হলো স্বাধীন বা মুক্তপেশা। এটা এক ধরণের ব্যবসা। এই পেশায় লোকেরা অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম-এর মাধ্যমে কাজ খুঁজে নিজের ইচ্ছে হিসেবে কাজ করেন। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন যে, আপনি কতটা সময় কত টাকার কাজ করতে চান।
উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী নিয়োগে যে পরিমান বেতনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে হয় তার মাত্র ১০-২০ শতাংশ ব্যয় করে প্রতিষ্ঠানগুলো তৃতীয় বিশ্বের দক্ষ প্রযুক্তিবিদদের মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছে আমাদের দক্ষ তরুণদের দিয়ে।
এ খাতে বাংলাদেশের দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের ট্রিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স আয়ের বিপুল সুযোগ বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এখন আমাদের সোসাইটিকে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজ সম্পর্কে সচেতন ও সচ্ছ ধারণা নিতে পারলে ভবিষ্যতে গামেন্টস সেক্টরের মতো সমান রেমিটেন্স আয়ের মাধ্যমে দেশের অথর্নীতিতে ভুমিকা রাখার বিশাল সম্ভাবনা ময় খাত হবে ফ্রিল্যান্সিং খাত। এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পালবাড়ি গ্রামে ফ্রিল্যান্সার প্রতিষ্ঠান রাব্বি আইটি ফার্মের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সার কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছেলেবেলা থেকেই ইন্টারনেটের প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল মোহাম্মদ রেজওয়ান আহমেদ রাব্বির। এর পরে ২০১৪ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে টাঙ্গাইলে চলে যান তিনি। শুরুতে বাড়িতে বসে গুগল অ্যাডন্সেন থেকে কিছু কিছু উপার্জন করতে থাকেন। এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন একটা টিম বানিয়ে বড় আকারে কাজ করবে। রাব্বি জানান, আমি ৩-৪ জন বন্ধুকে নিয়ে বাসায় একটা কক্ষে অফিস তৈরি করে কাজ শুরু করি।
তারপর, আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি ঢাকায় গিয়ে বিএসসি শেষ করব এবং পড়াশুনার পাশাপাশি কাজও করতে পারব। প্রথম সেমিস্টার করার পরে আমি আর কন্টিনিউ করতে পারিনি। কারণ তখন আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না।
২০১৮ সালের দিকে আমার ভালো ইনকাম হচ্ছিল ফাইবার এবং গুগল অ্যাডসেন্স থেকে। কিন্তু আবার কোনো কারণে সব কোম্পানি তাদের অ্যাডস সরিয়ে নেয়। এর পরে আমরা এসইও-এর কাজ শুরু করি এবং পাশাপাশি ফাইভের কাজ করা শুরু করি পুরোদমে। এরপর থেকে আমাদের আর পিছনে তাকাতে হয়নি। আমি নিজেও সরকারের আইসিটি বিভাগের ফ্রিলান্সার কার্ড পেয়েছি। উপজেলা পর্যায়ে তরুণদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেল রেমিটেন্স এনে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছি। আমি বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সদস্য।
রাব্বি আইটি ফার্মের কর্ণধার মোহাম্মদ রেজওয়ান আহমেদ বলেন, শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং এ বৈধ পথে দেশে রেমিটেন্স বা টাকা আনা যায়। প্রতিটি জেলায় যদি এক হাজার উদ্যোক্তা তৈরি হয় প্রতিটা জেলায় ৪০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ আসবে। দেশে বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স আসবে। দেশে এখনো রেমিটেন্স নিয়ে আসতে আমাদের প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ আমাদের দেশে পেপ্যাল নেই বলেই এত সমস্যা।
আমরা বর্তমানে রেমিটেন্স নিয়ে আসছি স্ট্যাইপ এবং প্যাডেলের ট্রান্সপার ওয়াইজ প্ল্যাটফর্ম দিয়ে নিয়ে আসি। সেখান থেকে ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স নিয়ে আসি বাংলাদেশ। আমাদের নিজস্ব অফিস ভবনে বর্তমানে ৬০ জনের বেশি স্থানীয় দক্ষ তরুণ তরুণীরা কাজ করছেন। আমাদের বর্তমানে হাতে যে কাজ আসছে তাতে নতুন করে আরো ৫০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ৫ শ তরুণের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে কাজ করছি।
আমরা বর্তমানে ১৭০ টারও বেশি দেশে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আইটি সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউআইএক্স ডিজাইন, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং, গেস্ট পোস্টিং, লিঙ্ক বিল্ডিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মতো নানান প্রযুক্তি সেবা।
এসআর