
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন বলেছেন, 'বৈষম্যবিরোধী' ও 'সমন্বয়ক' পরিচয়ের এখন আর অস্তিত্ব নেই, মার্চে নাহিদ যখন এমন ঘোষণা দিলেন, তখন বাধা হয়ে দাঁড়ান বামপন্থী নেতা মুখপাত্র উমামা ফাতিমা। গত ৫ মাস মূলত উমামার শেল্টারেই এই প্ল্যাটফর্মটা টিকে ছিল। তার একক ক্ষমতা চলতো সেখানে। বাকি সব শীর্ষ নেতা এনসিপি বা ছাত্র সংগঠন বাগছাসে যোগ দেয়।রোববার এক ফেসবুক পোস্টে এই মন্তব্য করেন তুহিন।
তিনি বলেন, এমনকি সারা দেশে এনসিপির কার্যক্রমেও উমামার ছেলেরা বাধাগ্রস্ত করেছে। নাহিদকেও হেনস্তা করেছে দুই জায়গায়। ওরা বাগছাসের বিরোধী, এনসিপি কেন হইলো এটা ওরা মানতে পারে না। ওরা বৈষম্যকেই চায় কারণ সমন্বয়ক পদে অনেক মজা। মূলত ফেব্রুয়ারি থেকেই এনসিপি ও বাগছাসের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীর আনুষ্ঠানিক ডিভোর্স হয়। আমাদের ছেলেরা এটা ছেড়ে যায়।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই সংগঠনটি নাহিদ ইসলাম বিলুপ্ত করতে চাইছিল এর কিছু অসৎ নেতাকর্মীর কারণে। উমামাকে আহ্বান জানানো হইছিল এনসিপিতে আসতে। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মকে সে একাই টিকিয়ে রাখে, এবং একের পর এক বিতর্কের জন্ম দেয়। নাহিদ বা এনসিপি চাইছিল অন্তত সারা দেশের কমিটি বিলুপ্ত করে কেবল কেন্দ্রীয় কমিটি থাকুক। কিন্তু নিজের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে উমামা ফাতিমা এটাকে কন্টিনিউ করে। তাই অন্তত মার্চ থেকে এই সংগঠনে যত অপকর্ম হইছে এটার দায় উমামা কখনোই এড়াইতে পারেন না। তিনি একাই এটাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং কারো বিরুদ্ধে কঠোর হননি। যখন সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেন, তখন কাউন্সিল দিতে রাজি হন। মাত্র কয়েকদিন আগে রিফাত রশিদ দায়িত্ব নেন এবং গতকাল কমিটি বিলুপ্ত করেন। সমস্যা হইলো, জনগণ জানেন না যে এনসিপির সঙ্গে বৈষম্যের কোনো সম্পর্ক নেই। ওরা রূপায়ণ টাওয়ারেও আর নাই। হলুদ মিডিয়া এটা জানতে দেয়নি। আবার নেতৃত্বে কে ছিল সেটাও জানায়নি। কারণ, উমামা ফাতিমা বাম করে আর তাদের নিয়ে কিছু বলা তো যাবে না। আবার এই সুযোগে একটু এনসিপিকেও সাইজ করা গেলো। অথচ প্রায় সব গণমাধ্যম জানে যে, এরা দল গঠনের পর থেকে পুরোপুরি আলাদা, এবং উমামা ফাতিমাই এটাকে চালাইছে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, উমামা কতগুলো অভিযোগ নিয়ে সামনে আসলো। কিন্তু যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন কিন্তু এগুলো বলেনি। কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। আবার নাহিদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সে এইটাকে চালাইছে। এখন দায় কেন তাহলে নিবে না? আমি বিশ্বাস করি, বিএনপির চাঁদার দায় তারেক রহমানের হলে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের দায় উমামা ফাতিমার। আরেকটা কথা হইলো, বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্মে আমাদের ছেলেরা এনসিপি ও বাগছাসে যোগ দিছে। শিবিরের ছেলেরা আপ বাংলাদেশ করে। আর ভালোদের একটা অংশও ওই দুই সংগঠনের ব্যানারে কাজ করে। কেবল অধিকাংশ উমামা ফাতিমার পন্থীরাই ছিল এইটার পক্ষে। [ভালোদের বড় একটা অংশ সিদ্ধান্তহীনতায় এবং ছাত্রদলের ছেলেরা ছাত্রদল করে। এই প্ল্যাটফর্মে সব মতের ছেলেরা ছিল। ভালো-খারাপ সবই ঢুকেছে এবং তখন অতটা যাচাই করার সুযোগ ছিল না।]
তুহিন বলেন, রিফাত গতকাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা আরও এক সপ্তাহ আগে নিলে ভালো হইতো। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা প্ল্যাটফর্ম পুরোপুরি গুটিয়ে আনা কঠিন— এটা রাজনীতি যারা করেন তারা বুঝেন। এবার উচিত একটা গণতদন্ত করে সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার সুপারিশ করা। উমামা ফাতিমা কেন এটাকে ভাংতে দিলেন না এবং প্রশ্রয় দিলেন সেই প্রশ্নও ছোড়া উচিত।
আফরোজা