
ছবি:সংগৃহীত
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিশ্লেষক আবু হেনা রাজ্জাকী সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে আলোচিত মন্তব্য করেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, তারা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করতে চেয়েও সময় পাননি। এ প্রেক্ষিতে উপস্থাপক জানতে চান, "তাহলে নাহিদ ইসলাম কীভাবে সাক্ষাৎ করলেন?"
প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাকী বলেন, “বিষয়টা হচ্ছে, আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই, যেমন বিগত সরকারের সময় আমরা সবাই দেখেছি, জনগণ দলমত নির্বিশেষে কীভাবে পিটার হাসকে গ্রহণ করছিল। কারণ, তখনকার শাসনব্যবস্থা এমন ছিল যে, অনেকের কাছে আমেরিকান ব্লক যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল। অথচ সরকারপক্ষ আবার পিটার হাসকে দাওয়াত দিয়ে হাঁসের মাংসও খাওয়াচ্ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আজ যখন কেউ পদত্যাগের কথা বলে বা সাক্ষাতের প্রসঙ্গ তোলে, তখন প্রশ্ন ওঠে, সে জানলো কীভাবে? যদি বলি এটি একটি নাটক, তাহলে প্রশ্ন আসবে, কার নাটক? নাটক যারা বলে তারাও সেই নাটকের অংশ।”
আবু হেনা রাজ্জাকী বলেন, “যদি কেউ নাটকে মীরজাফরের চরিত্রে অভিনয় করে আর দর্শক রাগে মারতে উদ্যত হয়, তখন সে বুঝে নেয় অভিনয়টা সফল হয়েছে। ঠিক তেমনি, আজকে অনেকে টনক নেড়েছে। প্রশ্ন হলো, কার টনক নড়েছে?”
তিনি নাহিদ ইসলাম প্রসঙ্গে বলেন, “নাহিদ ইসলাম একজন রাজনীতিক, তিনি জানেন কীভাবে তথ্য বের করতে হয়। কিন্তু তার দাবি করা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আসলেই সত্য কিনা, সেটিই মূল প্রশ্ন।”
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইউনূস সাহেব বলেছেন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে নির্বাচন দেবেন। কিন্তু অনেকেই তার কাছ থেকে নির্দিষ্ট তারিখ চায়। কেন তারিখ চায়? কারণ তারা চায় এটি লিখিত প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হোক, যা থেকে তিনি পরে সরতে না পারেন।”
তবে, নির্বাচনের পরিবেশ প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “ইউনূস সাহেব বলেছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবেন। কিন্তু সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার। সরকার তা দিতে চাইলেও প্রশাসনের একাংশ তা করছে না। তারা কার পক্ষে কাজ করছে, আমরা জানি না। কিন্তু এটা নিশ্চিত, তারা নন-কোঅপারেটিভ।”
রাজ্জাকী অতীত সরকারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “১৫ বছরের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন গুলি চালিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে। কারণ, প্রশাসন ছিল তাদের অনুগত, বিগত সরকার ছিল প্রশাসনের ১৭ লাখের সরকার। আর এখন জনগণের সরকার এসেছে, কিন্তু প্রশাসনের অনেক অংশ তাদের সহযোগিতা করছে না, এটাই দুর্ভাগ্যজনক।”
তিনি উপসংহারে বলেন, “এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, কিন্তু প্রজাতন্ত্রের অনেক চাকর এখনো সেই পুরনো মনোভাব বহন করছে। এটা নৈতিক নয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
আঁখি