
ছবি: সংগৃহীত
চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র "স্লোগান কন্যা" খ্যাত নাফসিন মেহেনাজ আজিরিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রশ্ন তুলেছেন, জুলাই উদযাপনের নামে এই আয়োজনে ড্রোন শো আর গানে গানে কেবল আনন্দ উদ্যাপনই হলো, কিন্তু যাঁরা আন্দোলনে শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাঁদের বিচার কোথায়?
নাফসিন লিখেছেন, “দারুণ ড্রোন শো! কিন্তু এখন যদি একটু জবাবদিহিও হতো!” এরপর তিনি সরাসরি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।
প্রথমত, তিনি বলেন— শহীদ আর আহত ভাইদের বাবা-মায়েদের সামনে এত গান-বাজনা করা হয়েছে, অথচ তাঁদের বেদনার কথা কি একবারও ভাবা হয়েছে? তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে এই আয়োজনকে কি ‘সংস্কৃতি’ বলা যায়? শহীদদের বিচার হয়নি, আহতদের ব্যথা উপশম হয়নি—তারপরও শুধু উদ্যাপন, ড্রোন শো আর বিনোদন? এটা কি আদৌ শ্রদ্ধা, নাকি একধরনের অপমান?
দ্বিতীয়ত, নাফসিন প্রশ্ন তোলেন, আয়োজনে দেখানো ডকুমেন্টারিতে কেন দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা উপেক্ষা করা হলো? চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশালের শিক্ষার্থীদের কথা সেখানে উঠে আসেনি। তিনি মনে করেন, এটি ঢাকাকেন্দ্রিক রেজিস্ট্যান্সকে সামনে আনার একটি সূক্ষ্ম চেষ্টা, যা ইতিহাস বিকৃতির সামিল। তাঁর প্রশ্ন—এই ডকুমেন্টারি তৈরির আগে কি ন্যূনতম গবেষণার প্রয়োজন অনুভব করা হয়নি?
তৃতীয়ত, তিনি বলেন, এই আয়োজনে ‘কার্ড সিস্টেম’ চালু করা হয়েছিল। দেশের সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাজার হাজার। তাহলে বড় ভেন্যু না নিয়ে কেন সীমিত মানুষকে কার্ড দেওয়া হলো? কেন নির্দিষ্ট কিছু নামই আমন্ত্রিত হলো?
নাফসিন লিখেছেন, “আমার নাম কেন রাখা হয়েছে, সেটা আমি জানি। কিন্তু ভুল করেছেন। প্রশ্ন আমি করবই।” তিনি বলেন, কেবল কোরাম বা সংগঠন ভিত্তিক কার্ড দেওয়ার পদ্ধতিকে তিনি সমর্থন করেন না। তাঁর প্রশ্ন, যাঁরা কোনো দলে বা সংগঠনে নেই—তাঁরা কি যোদ্ধা নন? তাঁরা কি এই আন্দোলনের অংশ নন?
নাফসিন জোর দিয়ে বলেন— “জবাব চাই।”
তাঁর এই পোস্ট ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তাঁর প্রশ্নের সঙ্গে একমত হয়েছেন এবং আয়োজকদের জবাবদিহির দাবি তুলেছেন।
এম.কে.