
ছবি: সংগৃহীত।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র ও “হাসির ফেরিওয়ালা” নামে পরিচিত শাকিল পারভেজ গত বছরের ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত আন্দোলনের সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই ছাত্রনেতা। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো থেকে শুরু করে মাঠে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ—সবখানেই ছিলেন সক্রিয়।
শাকিল পারভেজ নিয়মিতভাবে আন্দোলনের সার্বিক আপডেট ফেসবুকে শেয়ার করতেন। বিরুলিয়া, সাভার ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে তার সক্রিয় উপস্থিতি ছিল। মৃত্যুর সময়ও তিনি উত্তরার বিএনএস এলাকায় অবস্থান করছিলেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সেখানেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাকিলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল তার সাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা, টঙ্গীতে, রাত ১০টায়। তবে পরিবারের অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে জানাজা পড়ার অনুমতি দেয়নি। স্থানীয়রা জানান, ক্যাম্পাসের মূল ফটকে ৩–৪টি পুলিশের গাড়ি এনে প্রবেশ ও প্রস্থান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি মসজিদের মাইক থেকেও জানাজার ঘোষণা দিতে দেওয়া হয়নি।
অবশেষে এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে রাস্তায় শাকিলের নিথর দেহ রেখে জানাজার নামাজ আদায় করেন।
এ ঘটনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছিলো। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—একটি মৃতদেহের প্রতি কতটা ঘৃণা থাকলে তার জানাজাও পড়তে দেওয়া হয় না? বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে।
শাকিল পারভেজের আত্মত্যাগকে ঘিরে আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছিলো। সহপাঠী, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর চোখে তিনি ছিলেন এক সাহসী ও মানবিক ছাত্রনেতা—যিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জনগণের পাশে ছিলেন।
নুসরাত