ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়া ফিরছেন ৫ মে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ২ মে ২০২৫

খালেদা জিয়া ফিরছেন ৫ মে

বেগম খালেদা জিয়া

চিকিৎসা শেষে চার মাস পর সোমবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে আসছেন দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান এবং সৈয়দা শর্মিলা রহমান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ছেলে তারেক রহমান আপাতত আসছেন না। 
খালেদা জিয়া এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, উনি আগের চাইতে ভালো আছেন। কিভাবে তিনি দেশে ফিরছেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ম্যাডামের দেশে ফেরার ব্যাপারে কাতারের আমিরের কাছ থেকে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটায় উনাকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য পেয়েছিলাম সেটা এখন একটু বিলম্বিত হচ্ছে টেকনিক্যাল কারণে, সেজন্য ম্যাডাম ঠিক করেছেন এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায় তাহলে উনি বাংলাদেশ বিমানেই দেশে ফিরে আসবেন। বাংলাদেশ বিমানে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।  
মির্জা ফখরুল বলেন, ৪ মে উনি লন্ডন থেকে রওনা হলে ইনশাআল্লাহ ৫ মে বেলা ১১টার দিকে দেশে এসে পৌঁছাবেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফেরার আগেই তাঁর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ ম্যাডাম ৫ মে সকালে দেশে ফিরছেন। আমরা যতদূর জানি উনার সঙ্গে দুই বউমা (তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান) আসার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। ৮ জানুয়ারি লন্ডনে পৌঁছেই তিনি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে অবস্থান করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন।

এরপর ২৫ জানুয়ারি ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হয়। তবে বাসায় থেকেও ওই দুই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে  চিকিৎসাধীন ছিলেন। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবারই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্করেন খালেদা জিয়া।
সাংবাদিকদের খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন, এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সবকিছু জানানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি জানিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় সরকার তাঁকে বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি দেয়। এর পর থেকে তিনি বাসায় থাকলেও করোনায় আক্রান্ত হওয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য বেশ ক’বার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।

গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়া স্থায়ীভাবে মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুইটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিও বিএনস্থায়ী কমিসদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাদ হোসেন বলেছেন, লন্ডনে চিকিৎসা নেওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে। তাই আগের চেয়ে ভালো আছেন তিনি। এ পর্যন্ত করা স্বাস্থ্য পরীক্ষার সবগুলো রিপোর্টই ভালো এসেছে। লন্ডনের কিংস্টনে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসকদের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ সেবনের পাশাপাশি নাতনিদের সঙ্গে গল্প করে ভালো সময় কাটাচ্ছেন।

আরো পড়ুন  

×