
ছবি : সংগৃহীত
ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে পরিচালনার বিভিন্ন স্তরে খরচ কমায় ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে আইএসপিগুলো। তবে মোবাইল অপারেটররা এখনো তুলনামূলকভাবে চড়া মূল্য ধরে রেখেছে। মোবাইল ইন্টারনেটের উচ্চমূল্যের জন্য তারা উচ্চ হারে কর এবং অতিরিক্ত সেবা পরিচালন ব্যয়কে দায়ী করছেন। যদিও প্রযুক্তিবিদদের মতে, সেবার খরচ কমে আসায় গ্রাহক পর্যায়ে দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সুযোগ রয়েছে।
ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের পর মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিটিআরসি। অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয় ও সঞ্চালন ব্যবস্থার বাড়তি খরচকে ইন্টারনেটের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছিলেন মোবাইল অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা। তবে সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদ্যোগে পরিচালন ব্যবস্থার বিভিন্ন প্রান্তে খরচ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিচালনার বিভিন্ন স্তরে খরচ কমে এলেও, মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কেন কমছে না, সে প্রশ্ন এখনো রয়েছে।
মোবাইল অপারেটরদের দাবি, বর্তমানে প্রায় ৩৯ শতাংশ ট্যাক্স, ১০ শতাংশ স্পেকট্রাম খরচ, রাজস্ব শেয়ারিং, বিভিন্ন ফিস ও সারচার্জ মিলিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে, যা মূল দামের বড় অংশ দখল করে রাখে। তারা মনে করেন, স্পেকট্রামের দাম, ফিস ও ট্যাক্স কমানো হলে ইন্টারনেটের খরচে উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। ইতোমধ্যে ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমেছে, এবং এনটিএন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সঞ্চালন ব্যয় কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থায় ইন্টারনেট গেটওয়ে ও আন্তর্জাতিক টেরিস্টোরিয়াল সেবার খরচও ১০ শতাংশ কমেছে, যার ফলে মোবাইল অপারেটররা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।
এরপরও গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম না কমার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী। প্রযুক্তিবিদদের মতে, কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করে গ্রাহকের ওপর চাপ কমানো যেতে পারে। সরকারের ইতিবাচক একটি উদ্যোগ হলো লাইসেন্স ফি কমিয়ে আনা, যাতে সেবার স্তর কমে গিয়ে ট্যাক্স ও অপারেটিং খরচও হ্রাস পাবে। ইতোমধ্যে মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেট খরচ তিন থেকে চারটি স্তরে কমানো হয়েছে এবং ডিডবলিউডিএম ও ডার্ক ফাইবার সুবিধা দিয়েছে সরকার।
বিটিআরসি মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। যদিও মোবাইল ও ফিক্সড ইন্টারনেটের মূল্য কখনো এক হবে না, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যার দামের ওপর জোর দেওয়াটা জরুরি। মোবাইল অপারেটর ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে টানাপোড়েনও একটি বড় অন্তরায়। যদিও দাম না কমলেও, সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যান্ডউইথের পরিমাণ বাড়িয়েছে আইএসপিএবি এবং একটি মোবাইল অপারেটর।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাস শেষে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ১১ কোটি ৬০ লাখ এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র:https://youtu.be/UL3lidTJhGM?si=rgTopGAhkhzbFCS9
আঁখি