ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

নিজ আসনেই হার! ডাটনের ভরাডুবিতে হতবাক অস্ট্রেলিয়া

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:০১, ৪ মে ২০২৫

নিজ আসনেই হার! ডাটনের ভরাডুবিতে হতবাক অস্ট্রেলিয়া

ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ তথাকথিত ‘ক্ষমতাসীনদের অভিশাপ’ অতিক্রম করে বিপুল ব্যবধানে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। ভোট গণনা এখনো শেষ না হলেও পূর্বাভাস অনুযায়ী, অ্যালবানিজের মধ্য-বামপন্থী লেবার সরকার সংসদে উল্লেখযোগ্য আসন বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। বিপরীতে, রক্ষণশীল লিবারেল-ন্যাশনাল জোট দেশজুড়ে ভয়াবহ পরাজয়ের মুখে পড়েছে।

অ্যালবানিজ বিজয়োত্তর ভাষণে বলেন, “আজ অস্ট্রেলীয় জনগণ ন্যায়বিচার, আকাঙ্ক্ষা ও সবার জন্য সুযোগের পক্ষে ভোট দিয়েছে।”

জোট নেতা পিটার ডাটন, যিনি নিজে তার ২৪ বছরের আসন হারিয়েছেন, দলের পরাজয়ের দায় স্বীকার করে সংসদ সদস্যদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ফলাফলের পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এই নির্বাচনে জীবনযাত্রার ব্যয়, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসনের ব্যয়-সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মুখ্য ইস্যু ছিল। ডাটনকে অনেকেই অস্ট্রেলিয়ার ট্রাম্প হিসেবে দেখেছেন—যা ভোটারদের কাছে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যদিও তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তুলনা অস্বীকার করেছেন।

অ্যালবানিজ ২০ বছরে প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয় পেলেন। এবিসি পূর্বাভাসে লেবার ৮৬, জোট ৪০ এবং গ্রিন পার্টি ১–২ আসনে এগিয়ে। স্বতন্ত্ররা ৯টি আসনে এগিয়ে। এটি লেবারের জন্য ৯টি আসনের নব-অর্জন, কিন্তু গ্রিন পার্টির জন্য বড় ধস। বেশিরভাগ 'টিল' স্বতন্ত্ররা শহরের রক্ষণশীল আসন ধরে রেখেছে।

এই বিজয় এসেছে এক ঐতিহাসিক জনপ্রিয়তার নিম্নচূড়া থেকে নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে। অ্যালবানিজ তার ভাষণে বলেন, তিনি স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন ও আদিবাসীদের অধিকার ইস্যুতে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন।

তিনি বলেন, “আদিবাসী ও অ-আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যকার ব্যবধান ঘুচিয়ে আমরা আরও শক্তিশালী জাতি হবো।” এটি ২০২৩ সালের ব্যর্থ ‘ভয়েস’ গণভোট সম্পর্কেও ইঙ্গিত দেয়, যার মাধ্যমে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাওয়া হয়েছিল।

এখনো পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া কমনওয়েলথভুক্ত একমাত্র দেশ যারা আদিবাসীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি করেনি। ডাটনের প্রচারণায় নীতিমালার হঠাৎ পরিবর্তন, বিভ্রান্তিকর বার্তা ও এএফএল বল কাণ্ড ভোটারদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অধ্যাপক জন ওয়ারহার্স্ট বলেন, “ডাটন নিজেই নিজের পরাজয়ের কারণ। বিরোধী জোট ছিল বিশৃঙ্খল, আর সরকার ছিল সুশৃঙ্খল কিন্তু সাহসহীন।” ভবিষ্যতে জোটের নতুন নেতৃত্ব ও কৌশল খুঁজে বের করতে হবে।

টনি ব্যারি বলেন, “আমরা যদি ভাবি কিছু কৌশলেই জয় আসবে, তাহলে নিজেদের প্রতারিত করছি।” অন্যদিকে, লেবার এখন এই বৃহৎ জনসমর্থনকে কাজে লাগিয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিতে পারে। অ্যামি রেমেইকিস বলেন, “এখন প্রশ্ন হলো—লেবার কি সত্যিই ক্ষমতা পেয়ে কিছু করবে?”
 

শহীদ

×