ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

মাদকের থাবা

তারুণ্যের ভবিষ্যৎ কোন পথে?

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ২৫ জুলাই ২০২৫

তারুণ্যের ভবিষ্যৎ কোন পথে?

সভ্যতার সকল সত্য-সুন্দর-কল্যাণ-আনন্দের প্রাণস্পন্দনে ভরা সদাদীপ্ত অনুষঙ্গগুলো ধীরে ধীরে নিষ্প্রভের পথে এগোচ্ছে। অর্থলিপ্সু মানবরূপী হিংস্র দানবদের কদর্য অভিপ্রায়ে পুরো সমাজ যেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। তরুণ সমাজের উচ্ছ্বাস-গতিময়তার সৃজন-মননশীল প্রজ্ঞা ও মেধা ধূসর মেঘের আড়ালে ক্রমান্বয়ে মুখ লুকোচ্ছে। মূলত এসবের মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে ঘৃণ্য মাদক বাণিজ্য। জ্ঞান উৎপাদন-সৃজন-বিতরণের প্রধান অন্তরায় হিসেবে মাদকের বেপরোয়া বিস্তার শুধু বাংলাদেশ নয়; সমগ্র বিশ্বকে গভীর অন্ধকারে নিপতিত করার কুৎসিত ভূমিকা পালন করছে। একদিকে বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি-আধুনিক শিক্ষার মোড়কে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী-গবেষক উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাকে প্রবল শাণিত করছে; অন্যদিকে সমাজের বৃহত্তর অংশ মাদকের বেড়াজালে মনুষ্যত্ব-মানবিকতার চরম বিপর্যয়ে সর্বনিকৃষ্ট অতিমারির ভয়াবহ রূপ ধারণে সহায়তা করছে। পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণ-তদারকি-আইনের প্রয়োগ-সমাজ ও পরিবারের উদাসীনতায় দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার-যোগ্য-মেধাবী-দক্ষ মানবসম্পদ উৎপাদন কোন পর্যায়ে সভ্যতাকে পথ দেখাচ্ছে তা নিবিড় বিশ্লেষণের দাবি রাখে। আগামী দিনের জাতিরাষ্ট্র পরিচালনা ও সুষ্ঠু-স্বাভাবিক-সাবলীল সমাজ পরিক্রমায় সুস্থ দেহ-মনের অধিকারী যথার্থ অর্থে সমাজ প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে তোলতে ব্যর্থ হলে বিকৃত-অসংলগ্ন-অসংযত পরিবেশ সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে দুর্ভেদ্য প্রাচীর নির্মাণ করবেই- নিঃসন্দেহে তা বলা যায়। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থা সর্বোপরি বিরাজমান পরিস্থিতি কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনা না হলে মাদকের ভয়ংকর থাবা বিস্তৃত হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।  
গণমাধ্যমে প্রকাশিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে এখন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মাদকের মধ্যে ৩২ ধরনের মাদকের সন্ধান পাওয়া যায়। এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, চোলই-দেশি-বিদেশি মদ, দেশি-বিদেশি বিয়ার, রেক্টিফাইড স্পিরিট, ডিনেচার্ড স্পিরিট, তাড়ি, প্যাথেডিন, বুপ্রেনরফিন (টি.ডি জেসিক ইঞ্জেকশন), ভাং, কোডিন ট্যাবলেট, ফার্মেন্টেড ওয়াশ (জাওয়া), বুপ্রেনরফিন (বনোজেসিক ইঞ্জেকশন), মরফিন, আইচ পিল, ভায়াগ্রা, সানাগ্রা, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট ও মিথাইল-ইথাইল কিটোন ইত্যাদি। কালক্রমে নতুন করে আবির্ভাব হয়েছে এলএসডি, ব্রাউনি, ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, এমফিটামিন পাউডার, ডায়েমেখিল ট্রাইপ্টেমিন, এস্কাফ ও ম্যাজিক মাশরুমের মতো ভয়ানক আরও বেশকিছু মাদক। উক্ত সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আইস একটি শক্তিশালী আসক্তি সৃষ্টিকারী মাদক। এতে আসক্ত ব্যক্তির ক্ষুধামান্দ্য ও প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। অতিরিক্ত উত্তেজনা সৃষ্টি করে উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে অনেকে সহিংস আচরণও করে থাকে। উল্লেখ্য, ১৮৮৭ সালে জার্মানিতে জঙ্গিবিমানের পাইলটদের দীর্ঘক্ষণ নির্ঘুম-নির্ভয়-উত্তেজিত রাখতে সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে আইস ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় এর ব্যবহার আরও ছড়িয়ে পড়ে। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এটিকে নিষিদ্ধ করা হয়।  
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ (মিয়ানমার-থাইল্যান্ড-লাওস) এবং ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’র (পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ইরান) মাঝামাঝি অবস্থানে হওয়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে অরক্ষিত সীমান্ত পথে সবচেয়ে বেশি মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকের প্রবেশপথ হিসেবে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৩২টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা এবং মিজুরামের চারটি পয়েন্ট দিয়ে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং ফেনীতে মাদক ঢুকছে। বিজিবির প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, মিয়ানমারে ইয়াবা তৈরির কারখানা আছে ২৯টিরও বেশি। এসব কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবার সিংহভাগ পাচার হয় বাংলাদেশে। মিয়ানমারের আইসের বাজারও এখন বাংলাদেশমুখী।  
২১ মার্চ ২০২৫ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বেসরকারি সংগঠন মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা ‘মানস’র সূত্রমতে, দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি মাদকাসক্ত এবং বাকি ৫০ লাখ মাঝেমধ্যে মাদক সেবন করে। মাদকাসক্তদের ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ। তন্মধ্যে ৬০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তাছাড়া মাদকাসক্তদের মধ্যে ৩০ শতাংশ শুধু নেশার খরচ জোগাতে অপরাধ ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সাম্প্রতিক সমীক্ষার প্রাক্কলন অনুসারে দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৮৩ লাখ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ লাখ ৬০ হাজার, নারী ২ লাখ ৮৫ হাজার এবং শিশু-কিশোর ২ লাখ ৫৫ হাজার। সমীক্ষায় আরও বলা হয়, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৬১ লাখ গাঁজায় (৫২ শতাংশ), ২৩ লাখ ইয়াবায় (২০ শতাংশ), ২০ লাখ ২৪ হাজার মদ্যপানে (১৭ শতাংশ) আসক্ত। ৩ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি ফেনসিডিল ও সমজাতীয় মাদকে এবং ৩ লাখ ২০ হাজার হেরোইনে আসক্ত। ঘুমের ওষধ ও ড্যান্ডির মতো আঠাকে মাদক হিসেবে গ্রহণ করছে যথাক্রমে তিন লাখ ও ১ লাখ ৬০ হাজারের মতো। শিরায় মাদক গ্রহণ করে প্রায় ৩৯ হাজার মানুষ। আবার একই ব্যক্তি একাধিক মাদকেও আসক্ত।  
বিভিন্ন পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোট মাদকাসক্তদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেকার, ৬৫ দশমিক ১ শতাংশ আন্ডার গ্রাজুয়েট, ১৫ শতাংশ উচ্চ শিক্ষার্থী, ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ ব্যবসায়ী, ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ চাকরিজীবী, ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ছাত্র এবং ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ শ্রমিক। সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্রটি হচ্ছে ইয়াবা গ্রহণকারী ৮৫ শতাংশই দেশের তরুণ যুবসমাজ। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্র অনুসারে দেশে ইয়াবা আসক্তির সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্মের এক-চতুর্থাংশই কোনো না কোনো ধরনের নেশায় আসক্ত। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রতি ১৭ জনে একজন তরুণ মাদকাসক্ত। ছিন্নমূল শিশু-কিশোররাও জুতা তৈরির গাম দিয়ে নিয়মিত নেশায় মত্ত রয়েছে। সম্প্রতিকালে ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়ংকর মাদক আইস সেবনকারীর সংখ্যাও। এছাড়া প্রায় ৫৭ শতাংশ মাদকাসক্ত যৌন অপরাধী, যাদের ৭ শতাংশ এইচআইভি ভাইরাসে সংক্রমিত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকাসক্তরা নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্তসহ মস্তিস্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 
বিজ্ঞজনদের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বে শিথিলতায় অসাধু মাদক কারবারীদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে মাদক দেশে ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করেছে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি নগর-শহরের অলিগলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। শহরের বাইরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও মাদক এখন সহজলভ্য। পাশাপাশি তরুণদের অনেকেই অনলাইনেও রমরমা মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছে। অতীতে মাদক সেবনের সঙ্গে শুধু ছাত্ররা জড়িত থাকলেও বর্তমানে ছাত্রীরাও মাদক সেবন করছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো হলেও বিভিন্ন কৌশলে মাদক কারবারিরা দেশে মাদকের চালান স্থানান্তর করছে। অ্যাম্বুলেন্স, সবজিসহ নিত্যপণ্যের গাড়িতে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইনসহ নানা মাদক তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতেও মাদকের বিপুল প্রভাব পরিলক্ষিত। অবৈধ মাদক আমদানির জন্য দেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আংকটাড) প্রতিবেদনে উপস্থাপিত হয় যে, শুধু মাদকের কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫ হাজার ৮৪১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ পাচার হয়ে যায়। অবৈধ মাদক কারবারের মাধ্যমে অর্থপাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম এবং এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।                                                                                                                                                                                           
২৬ জুন ২০২৫ ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, যে কোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদের এই তরুণ সমাজকে অবশ্যই মাদক থেকে মুক্ত রাখতে হবে। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানাভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু এবং কিশোরদের এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রযুক্তর উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগসের আবির্ভাবের ফলে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। নতুন নতুন এসব মাদক নিয়ে আমাদেরকে নতুনভাবে কর্মকৌশল তৈরি করতে হচ্ছে। নতুন ধরনের মাদক সম্পর্কে দেশের সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থা সজাগ রয়েছে এবং এগুলোর বিস্তার রোধে উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।’
সার্বিক পর্যালোচনায় এটি সুস্পষ্ট যে, ধর্ষণ-হত্যা-ছিনতাই-রাহাজানিসহ বহুমাত্রিক অপরাধের মূলে রয়েছে এই মাদক। বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে ভয়াবহ এসব মাদকের চালান-বাহকরা গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা ও মাদক কারবারির পৃষ্ঠপোষকরা হাতের নাগালের বাইরেই থেকে যাচ্ছে। ফলে থামানো যাচ্ছে না মাদকের বিস্তার। দেশের সচেতন-বিজ্ঞজনের দাবি, মাদক পাচার-সেবন বন্ধ করতে মাদকের চাহিদা কমানোর পাশাপাশি জোগানও হ্রাস করতে হবে। নিতে হবে হতাশা-বিষাদ-অবসাদ-বিশৃঙ্খলমুক্ত জীবনযাপনের মাধ্যমে মাদকের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এছাড়াও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের (১৯৯০) ধারাগুলো সময়োপযোগী করে এর প্রয়োগ ও অনমনীয় বাস্তবায়ন, মাদক ব্যবহারের ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরি, সীমান্ত এলাকা সুরক্ষিত করে মাদক চোরাচালান কমানো এবং মাদকাসক্তদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ক্রীড়ায় সম্পৃক্তকরণসহ যথাযথ পুনর্বাসন করা গেলে মাদকের বেপরোয়া আগ্রাসন অনেকটা রুদ্ধ করা সম্ভব। মোদ্দাকথা সবকিছু পরিপূর্ণ রসাতলে যাওয়ার পূর্বেই যথাযথ প্রায়োগিক ব্যবস্থা গ্রহণে রাষ্ট্র-সমাজ-পরিবারের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অনিবার্য। এই যৌক্তিক ব্যাখ্যাটুকু সংশ্লিষ্ট সবার বোধোদয়ে নবজাগরণ সৃষ্টিতে কাক্সিক্ষত সফলতা ও সার্থকতায় অত্যুজ্জ্বল থাকুক।  
 লেখক : শিক্ষাবিদ

প্যানেল/মো.

×