ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

গ্রীষ্মকালের উত্তাপ নয়, হোক সচেতনতার উষ্ণতা

মোসা. সারা খাতুন

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ১০ মে ২০২৫

গ্রীষ্মকালের উত্তাপ নয়, হোক সচেতনতার উষ্ণতা

বাংলাদেশের ঋতুচক্রে গ্রীষ্ম একটি পরিচিত মুখ। কখনো তা প্রাণবন্ত রোদেলা দিন, কখনো আবার অসহনীয় দাবদাহ। এই ঋতুটি আমাদের শরীর ও মনের ওপর যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনি জীবনধারায় সচেতনতারও প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তোলে। গ্রীষ্মের কঠিনতাকে উপেক্ষা না করে, বরং কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে এ সময়টাও হয়ে উঠতে পারে সুস্থ, সুন্দর ও স্বস্তিদায়ক। প্রথমেই আসে পানিশূন্যতার কথা। এই সময় শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়, যা হিটস্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি, লেবুপানি, ডাবের পানি কিংবা ঠান্ডা শরবত গ্রহণ করা উচিত। এতে শরীর যেমন ঠান্ডা থাকে, তেমনি মনও থাকে প্রফুল্ল। খাবারদাবারেও সচেতনতা জরুরি। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত, ঝাল ও তৈলাক্ত খাবার এই সময় এড়িয়ে চলা শ্রেয়। তার বদলে হালকা, সহজপাচ্য খাবার ও তরমুজ, শসা, আনারসের মতো পানিময় ফল রাখা যেতে পারে প্রতিদিনের তালিকায়। বলা হয়ে থাকে, সুস্থ দেহেই সুস্থ মন বাস করে, আর এই ছোট ছোট অভ্যাসই আমাদের বড় সুস্থতার পথে নিয়ে যেতে পারে।
বাইরের কর্মব্যস্ততায় যারা প্রতিদিন রোদে বের হন, তাদের জন্য ছাতা, সানগ্লাস ও হালকা রঙের সুতি কাপড় একান্ত প্রয়োজন। তাপ ও রোদের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার এটাই সহজ পন্থা। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার একটি বড় দিক হলো গাছ লাগানো। গাছের ছায়া শুধু আমাদের নয়, পশু-পাখি এবং পথের গরিব মানুষদের জন্যও আশ্রয়স্বরূপ। তাই গ্রীষ্মকালে গাছ লাগানো যেমন সচেতনতা, তেমনি এটি একটি মানবিক দায়িত্বও। শিশু ও বৃদ্ধদের গরমে বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। তারা নিজেদের প্রয়োজন নিজে বুঝে উঠতে না পারায়, সময়মতো পানি, হালকা খাবার ও শীতল পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য। আর সারাদিনের পর ঘাম ঝরানো ক্লান্তি দূর করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম। সবশেষে, গ্রীষ্ম শুধু একটি ঋতু নয়, এটি আমাদের মানবিকতা, সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের পরীক্ষাও বটে। এই ঋতুকে যদি আমরা সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারি, তবে গ্রীষ্মও হয়ে উঠতে পারে আরামদায়ক ও মানবিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি সময়।

শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ

প্যানেল

×