
বর্তমানে সড়কের সবচেয়ে আতঙ্কের যানবাহন হচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিক্সা। মানুষ তার সময়-স্বল্পতা দূর করার জন্য ব্যাটারিচালিত রিক্সা ব্যবহার করলেও বর্তমানে এটি জীবন কেড়ে নেওয়ার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর বেপরোয়া গতির কারণে মূহুর্তের মধ্যেই মানুষের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরের কাপাসগোলায় বেপরোয়া গতির একটি ব্যাটারিচালিত রিক্সা খালে পড়ে ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। এরকম আরো অনেক দুর্ঘটনার কবলে প্রতিদিনই পড়ছে সাধারণ জনগণ । কেউ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে, কেউ বরণ করে নিচ্ছে আজীবনের পঙ্গুত্ব। ব্যাটারিচালিত রিক্সার চলাচল ঢাকা শহরসহ দেশের অন্যান্য শহর এবং গ্রামেও অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। ট্রাফিক আইন না মেনে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সেখান দিয়েই তারা গাড়ি চালাচ্ছে। ফলে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা শহরে প্রায় ১০ লাখের বেশি ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল করছে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিক্সার ব্যাটারি চার্জ করতে প্রচুর বিদ্যুৎ অপচয় হয়। যা দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ দারিদ্র্য জর্জরিত একটা দেশ। এদেশে জীবিকার তাগিদে মানুষ যখন যেই কাজ পায় সেই কাজই করে। ক্ষতির বিষয়ে ভাবার আগে তারা জীবিকার কথা চিন্তা করে। কারণ তাদের অধিকাংশ দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসে। তাই চালকদের জীবিকার কথা চিন্তা করে এবং সড়কের দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা মোকাবিলা করতে আগে সরকারকে সজাগ হতে হবে। সর্বপ্রথম তাদের জন্য নতুন জীবিকার বন্দোবস্ত করতে হবে। চলাচলের প্রধান প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিক্সার অবাধ চলাচল বন্ধ করতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চালকদের দ্বারা সড়কে দুর্ঘটনারোধ করা সম্ভব এবং পথচারী ও যাত্রীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়। ট্রাফিক আইন ব্যবস্থা আরও বেশি কঠোর করতে হবে। ব্যাটারিচালিত রিক্সা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করলে দেশে আর্থসামাজিক সংকট দেখা দিতে পারে। এইজন্য দেশের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকারকে আশানুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। সময় নিয়ে হলেও সরকারকে ব্যাটারিচালিত রিক্সার বিষয় নিয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান করতে হবে। সড়কের শৃঙ্খলাই দেশের সৌন্দর্য।
ফেনী সরকারি কলেজ, ফেনী থেকে
প্যানেল