ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের সমস্যা

জিহান চৌধুরী

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের সমস্যা

জিহান চৌধুরী

বিংশ শতাব্দীতে এসে প্রযুক্তি আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। আমরা ঘরে বসেই হাতের স্মার্টফোন ব্যবহার করে অনলাইনে ফুড ডেলিভারি অ্যাপসে খাবার অর্ডার করে হাতে পাই। আবার বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং অ্যাপসও ভ্রমণ সহজ এবং নিরাপদ করেছে। অতীতের তুলনায় ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং ব্যবহার বেড়েছে। যা নাগরিকের জীবনযাপনকে উন্নত ও সহজ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন চিঠির পরিবর্তে মেইলে, টেলিফোনের পরিবর্তে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, নগদ টাকা পকেটে রাখার পরিবর্তে বিকাশ, নগদসহ নানা অ্যাপসে নির্ভরশীল।  স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের সহজলভ্যতার কারণে মানুষ একদিকে যেমন এর ব্যবহার শিখেছে, পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। যার ফলে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে তথ্যের আদান-প্রদান ও যোগাযোগ সহজ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ইনফো সরকার-০২, ইনফো সরকার-০৩ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৮ মন্ত্রণালয়, ২২৭ অধিদপ্তর, ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ১৮ হাজার ৫০০টি সরকারি অফিস নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। এখন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ কনফারেন্স অনলাইনে হয়ে থাকে, যা সময় এবং ব্যয় সাশ্রয়ী। ডি নথিসহ বিভিন্ন সফটওয়্যারের ব্যবহার সরকারি এবং বিভিন্ন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দ্রুতসহ সেবাগ্রহণকারীর সন্তুষ্টি বেড়েছে।
১৯৯১ এবং ১৯৯৪-তে বিএনপি সরকার তথ্য চুরির অজুহাতে বিনা অর্থে সুযোগ পাওয়া সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৯৯৬-তে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ নির্ভর ভি-স্যাটের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য ইন্টারনেট উন্মুক্ত করে। পরবর্তীতে ২০০৬ এবং ২০১৭ সালে দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হয় প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে ফোর-জি চলমান। খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ ৩টি বেসরকারি কোম্পানির উদ্যোগে ৪৫ হাজার জিবিপিএস ধারণ ক্ষমতার সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২৮টি আইটি পার্ক কাজ চলমান এবং সম্পাদনের পথে। যার ফলে দেশের আইটি শিল্পের বিকাশ বাড়ছে। প্রচুর বেকার যুবকের ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সমূহ সম্ভাবনার দ্বার সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টর ইন্টারনেট সেক্টরের ওপর নির্ভরশীল। স্মার্ট বাংলাদেশের মূল উপাদান হচ্ছে ইন্টারনেট। তবে প্রযুক্তি বিকাশিত হলেও বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ সেক্টরের গ্রাহক পর্যায়ে অবস্থা নাজুক বলা চলে। কারণ, গুণগতমানের ব্যান্ডউইথ সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাওয়া দুষ্কর। এই সেক্টরে রয়েছে দক্ষ জনবল সৃষ্টির প্রতিষ্ঠান স্বল্পতা, আইনগত ঝামেলা, বিটিআরসির অফিস স্বল্পতা, ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সুবিধার অভাব, গ্রাহক সচেতনতাসহ নানা সমস্যা। আমাদের মতো ক্ষুদ্র ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী ব্যবসায়ীরা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অস্তিত্ব সংকটের পথে। 
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুনজর টেলিযোগাযোগ সেক্টরের সমস্যা দূরীকরণে যথেষ্ট। যার ফলে আমাদের মতো অসংখ্য সেবা প্রদানকারী বাঁচবে। এতে দেশের জনগণ গুণগত ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি দেশের আয়, রাজস্ব, রেমিটেন্সও বাড়বে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিতে সমানতালে উন্নতির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হয়ে বিশ্বের বুকে হবে রোল মডেল।
লেখক : প্রভাষক, উখিয়া, কক্সবাজার

[email protected]

×