ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে কেন অপপ্রচার

মো. আবদুর রহিম

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে কেন অপপ্রচার

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পটভূমি তৈরির জন্য অনেক অপকৌশল বেছে নেওয়া হয়েছিল

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা সদালাপী আর সাদামাটা জীবনের অধিকারী। তাঁদের অনেকেই পঁচাত্তরে শহীদ হয়েছেন আর সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে আছেন কেউ কেউ। এই পরিবারের প্রতিটি সদস্য বাংলাদেশ ও বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অথচ নিয়তি হলো অকৃতজ্ঞ বাঙালি তার প্রতিদান দিয়েছে ও দিচ্ছে নৃশংস হত্যা ও চরিত্র হননের মাধ্যমে। সব জেনে-বুঝেও চোখ থাকতে অন্ধ, পাকিস্তানি দোসর ও মতলববাজ কিছু লোক আবারও যখন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে যাচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা জাগে মনে বৈকি

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পটভূমি তৈরির জন্য অনেক অপকৌশল বেছে নেওয়া হয়েছিল। এসবের মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্যতম পন্থা ছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের চরিত্র হনন। দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধুর শাসনতন্ত্রের ভুল ব্যাখ্যা করে হেট ক্যাম্পেন করা। তৃতীয়ত, উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মুখোশধারী আমলাতন্ত্রের অপকর্মকে আওয়ামী শাসনের ব্যর্থতা হিসেবে প্রচার। অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপের ভুল ব্যাখ্যা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা। চতুর্থত, বিভিন্ন দূতাবাসে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে নীলনকশা বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ। বিশেষ করে পরিকল্পনা সফল বা ব্যর্থ হলে কোন্্ পন্থা অবলম্বন করা হবে, তা ঠিক করা। ঠিক একই ধরনের অপপ্রচার বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, এসব আক্রমণ ততই তীব্র হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারেরই সূচিত ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাসমূহ ব্যবহার করে অসত্য তথ্য ও গুজব প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের ঘৃণ্য পন্থা বেছে নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে খানিকটা আলোকপাত করা হয়েছে বর্তমান নিবন্ধে। 
বঙ্গবন্ধু সরকারে বিরুদ্ধে অপপ্রচারের ক্ষেত্র হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে মানুষের প্রাথমিক দুঃখকষ্টকে কাজে লাগানো হয়েছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি বুঝতে পেরে পাকিস্তানিরা এদেশের ব্যাংক-বীমায় গচ্ছিত টাকা-পয়সা সব পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করে নিয়ে যায়। পরাজিত শক্তির এদেশীয় দোসররা ব্যক্তি মানুষের সহায় সম্বল সব লুটে নেয়। এক কোটির বেশি মানুষ, যারা দেশান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছিল, তারা দেশে ফিরে এসে সহায় সম্বল কিছুই পায়নি। হিন্দু জনগোষ্ঠীর বাস্তুভিটা পর্যন্ত রাজাকার আলবদররা দখল করে নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নবগঠিত সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত বিরানভূমি আর নিরন্ন মানুষের হাহাকারকে সঙ্গী করে দেশ পুনর্গঠন শুরু করে।

সরকার লঙ্গরখানা খুলে মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে আত্মনিয়োগ করে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে সচল করার জন্য অবকাঠামো, যোগাযোগ, উৎপাদন ব্যবস্থা, কৃষি, শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য সচল করতে সচেষ্ট হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র নির্মাণ ও বিনির্মাণে প্রাণান্ত চেষ্টা করে। সে সময়ে বঙ্গবন্ধুকে সহায়তা না করে আওয়ামী এবং ছাত্রলীগের তথাকথিত কয়েকজন নেতা মুক্তিযুদ্ধে কার কি ভূমিকা, সেসব নিয়ে অহেতুক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। অবশেষে এসব ব্যক্তি ১৯৭২ সালে দল থেকে বেরিয়ে সমাজতান্ত্রিক দল গঠন করে ভাতৃঘাতী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এসবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সেনাবাহিনীর উচ্চাভিলাষী কিছু অফিসার।

সরকারের চেন অব কমান্ডের তোয়াক্কা না করে সুশৃঙ্খল একটি বাহিনীর সদস্যরা অবৈধভাবে গড়ে তোলে তথাকথিত ‘সেনাপরিষদ’। সরকারের ভেতরে সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তারা শেখ মুজিবের ওপর নানা চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, নিয়মতান্ত্রিক একটি সরকারের পক্ষে যা কোনোভাবেই মানা সম্ভব ছিল না। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মাওবাদী উগ্রপন্থি নেতৃত্ব, ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতৃত্ব, জাসদের গণবাহিনীসহ বিভিন্ন গোপন সংগঠন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি-রাজাকার, আলবদর, আলশামস,  আইএসআই ও সিআইএ-এর এজেন্ট এবং ধর্মীয় উগ্রবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো। এরা মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্ত্রশস্ত্র জমা না দিয়ে এসব অস্ত্রের মাধ্যমে লুটপাট, থানা আক্রমণ, চুরি ডাকাতির মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সব বিরোধিতা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন।

যুদ্ধের অভিঘাত এবং মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ অবস্থা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের জন্য খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিশ্ব মোড়লদের লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা দূর করে সাধারণ মানুষের অন্নের সংস্থান নিশ্চিত করে তিনি দেশের উৎপাদনের সূচকসমূহ ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। সমস্ত খানাখন্দ ভরাট করে উন্নয়নের ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা সবেমাত্র শুরু হয়েছে। এমন সময় সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানেও ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য কী একই নয়? সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারপ্রধান হিসেবে গণভবনে না গিয়ে ধানম-ি ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে বাঙালির সাদামাটা জীবন বেছে নেন। এটিই ছিল বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের পাওয়ার হাউস। এখানে বসেই জাতির পিতা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন করেছিলেন। এখানে বসেই তিনি সব হারা বিপন্ন মানুষের দুঃখবেদনার গল্প শুনতেন এবং তাদের দুঃখ-কষ্ট খানিকটা হলেও লাঘব করতেন। এ বাড়িটিই মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রমহারা নারীদের ঠিকানা হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতির প্রোটোকল আর নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি না থাকায় এ বাড়িটিতে সাধুবেশী ষড়যন্ত্রকারীদের অবাধে আসা-যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এভাবে তারা অতি সাধারণ এ বাড়ির নাড়িনক্ষত্র সব জেনেছিল।

তারা ভালোভাবেই জেনেছিল যে, এটি আটপৌরে বাঙালির জৌলুসহীন সাদামাটা একটি আবাসমাত্র। এখানে ছিল না বিত্ত-বৈভবের কোনো বাড়াবাড়ি। সব জেনেও এ বাড়িকে ঘিরে নানা গল্প আর কেচ্ছা কাহিনী বাজারে ছাড়া হয়েছিল সুপরিকল্পিতভাবে। এসব গল্পের রূপকাররা ছিল সুচতুর আর গোয়েবলসীয় অপকৌশলে পারদর্শী। এ বাড়িতে তাদের ছিল নিত্য আসা-যাওয়ার সুযোগ। কাজেই সাধারণ মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। তারা বলেছে, বঙ্গবন্ধু পরিবার নাকি সম্পদের পাহাড় গড়েছিল। সোনার মুকুট পরিয়ে শেখ কামাল এবং শেখ জামালের বিয়ের মুখরোচক গল্প প্রচার করা হয়েছিল। ব্যাংক লুটের গল্প, মেজর ডালিম এবং তার স্ত্রীকে অপহরণের কাহিনীতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও সংশ্লিষ্টতার কাল্পনিক কাহিনী এক সময় প্রচলিত ছিল।

বাকশাল কায়েমের মধ্যদিয়ে শেখ মুজিব কর্তৃক রাষ্ট্রক্ষমতা চিরস্থায়ী করাসহ কত গালগল্প প্রচার করে মানুষের মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ বপন করা হয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশকে রুশ-ভারতের প্রভাবাধীন তাঁবেদার রাষ্ট্র বানানোর অপপ্রচার। কানপাতলা বাঙালি নাকি এসব গল্প বিশ্বাসও করতে শুরু করেছিল। এডলফ হিটলারের প্রধান সহযোগী যোসেফ গোয়েবলস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি পার্টি এবং হিটলারের পক্ষে প্রোপাগান্ডার জন্য তৎকালীন যুগের প্রচার মাধ্যম রেডিও এবং চলচ্চিত্রকে বেছে নিয়েছেন। শেষ রক্ষা হয়নি, হিটলার এবং গোয়েবলস দুজনকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়েছিল। 
গোয়েবলসের-গোয়েবলসীয় থিওরি আজও রয়ে গেছে। গোয়েবলস যেমন যে কোনো মিথ্যাকে বারবার প্রচারের মাধ্যমে মিথ্যাটিকে মানুষের কাছে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করত, সে ধরনের অপপ্রচার এখনো চলছে। প্রচার মাধ্যম হিসেবে তৎকালীন সময়ের আকর্ষণীয় মাধ্যম রেডিও বা চলচ্চিত্রকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানকালে তথোধিক কার্যকর সামাজিক গণমাধ্যমকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিছুদিন ধরে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল ও তার সমর্থকদের ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদকে ঘিরে ১৫০০ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের খবর প্রচার করা হচ্ছে। এটি প্রচারের মূল উদ্দেশ্য হলো, সেই পার্টি প্রধানের বখে যাওয়া মি. টেন পার্সেন্ট পুত্রের বিশেষ ভবনকে ঘিরে গড়ে ওঠা সমান্তরাল সরকার এবং তাদের দুর্নীতির  স্মৃতি মানুষের মন থেকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা।

দেশী-বিদেশী আদালতে প্রমাণিত মানিলন্ডারিং এবং অবৈধ অর্থ উপার্জন ও পাচারের প্রতিষ্ঠিত সত্যকে কাউন্টার করে জনমনে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করা। এ ধরনের গল্প শেখ রেহানা এবং তার সন্তানদের ঘিরেও বলা হচ্ছে। বাস্তবতা হলো, সজীব ওয়াজেদ কোনো বিশেষ ভবনের প্রতিভূ নয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনারারি আইটি উপদেষ্টা হিসেবে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করছেন। এক সময়ের এনালগ বাংলাদেশ বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে প্রচারবিমুখ সজীব ওয়াজেদের কল্যাণে। তিনি মাইক্রোফোন হাতে কথার ফুলঝুরি না ছড়িয়ে বরং নীরবে সঙ্গোপনে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজটি করে যাচ্ছেন।

বাহবা অর্জনের জন্য চটকদার কথার মোহে মানুষকে আকৃষ্ট করার চাতুরীপনা তিনি শেখেননি। তিনি গ্রহণ করেছেন মানবকল্যাণের শিক্ষা পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। সজীব ওয়াজেদ ব্যাঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সজীব ওয়াজেদের জন্ম যুদ্ধকালীন বাংলাদেশে। পরাধীন দেশে জন্ম নেওয়া শিশুটির নাম রাখা হয় জয়Ñ বিজয়ের প্রতীক হিসেবে। তিনি ক্যান্টনমেন্টের শৌখিন পরিবেশের রাজকীয় জীবন নয়Ñ জন্মের পর ¯েœহময়ী মায়ের সঙ্গে বন্দিদশা ভোগ করেছেন। 
১৯৭৫ সালের পরে মায়ের সঙ্গে তাকেও অ্যাসাইলাম জীবন বরণ করতে হয়েছিল। তার বেড়ে ওঠার জীবন সংগ্রাম সব হারা মা-ফুফুর জীবন সংগ্রামের মতো একই সুতোয় বাঁধা। এহেন এক মানব শিশুর বখাটে হওয়া আর টাকা-পয়সার লোভলালসায় ভেসে যাওয়ার সুযোগ নেই। হরতাল ডেকে গরিব মানুষের সঙ্গে পরিহাস করে রাজপথে ক্রিকেট খেলার শিক্ষাও তিনি পাননি। বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানাও লন্ডনে চাকরি করে জীবন নির্বাহ করেছেন। এখনো করছেন। তার দুই কন্যার একজন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের গর্বিত সদস্য এবং ছায়ামন্ত্রী, অন্য কন্যাও সম্মানজনক চাকরি করেন সেখানে। কালেভদ্রে বাংলাদেশে আসেন কি-না, টের পাওয়া যায় না।

প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নী পরিচয়ের চেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে তার পরিচয় কিছু কম নয়। কত বিনয়ী চাল-চলনে। তার ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে কমপ্যারেটিভ পলিটিকস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের এ টু আই প্রজেক্টসহ, ইয়ং বাংলা, জয়বাংলা কনসার্টসহ তরুণ প্রজন্মের অগ্রগতির জন্য প্রমোশনাল কাজে যুক্ত রয়েছেন। যেমন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বড় পুত্র শেখ কামাল। প্রধানমন্ত্রীকন্যা স্কুল সাইকোলজিস্ট সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ক্লিনিক্যাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে অবহেলিত অটিজম শিশুদের উন্নয়নে কাজ করছেন। তার কাজের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। সম্প্রতি তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন।  
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা সদালাপী আর সাদামাটা জীবনের অধিকারী। তাঁদের অনেকেই পঁচাত্তরে শহীদ হয়েছেন আর সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে আছেন কেউ কেউ। এই পরিবারের প্রতিটি সদস্য বাংলাদেশ ও বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অথচ নিয়তি হলো অকৃতজ্ঞ বাঙালি তার প্রতিদান দিয়েছে ও দিচ্ছে নৃশংস হত্যা ও চরিত্র হননের মাধ্যমে। সব জেনে বুঝেও চোখ থাকতে অন্ধ, পাকিস্তানি দোসর ও মতলববাজ কিছু লোক আবারও যখন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে যাচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা জাগে মনে বৈকি। 

লেখক : অধ্যাপক, প্রাধ্যক্ষ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

×