ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাফিক আইন মানুন

মো. আব্দুর রহমান

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ট্রাফিক আইন মানুন

এখনও পরিবহনে উঠলে ছেলের চিন্তায় কাতর থাকে মা, স্বামীর জন্য অস্থির থাকে স্ত্রী আর মেয়ের জন্য বাবা!

এখনও পরিবহনে উঠলে ছেলের চিন্তায় কাতর থাকে মা, স্বামীর জন্য অস্থির থাকে স্ত্রী আর মেয়ের জন্য বাবা! এটাই তো হলো বাংলাদেশের গণ পরিবহনগুলোর অবদান। দেশ স্বাধীন হয়েছে, সভ্যতার উন্নতি হয়েছে- তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতি এখনও আস্থা রাখতে পারছে না এদেশের মানুষ। যার বাস্তবচিত্র বোঝা যায়, পত্রিকা আর টিভির শিরোনামে-প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া একের পর এক দুর্ঘটনায়!
এই গণপরিবহনগুলোর যাতায়াতে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। তারমধ্যে প্রধান কারণ হলো বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো- যার জন্য সড়ক দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে। এর আরও একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো, চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালনা। অর্থাৎ, এই চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালনায় মালিককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রতিদিন পরিশোধ করতে হয়। যার ফলে চালক বেপরোয়াভাবে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করে। পাশাপাশি শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে  ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটে। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই বেতনের মাধ্যমে চালকদের নিয়োগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আর সড়কের পরিবেশ ও স্থান অনুযায়ী, গাড়ি চালানোর গতিটা নির্ধারিত করা যেতে পারে। অর্থাৎ, কোনো রাস্তায় কতটুকু গতিতে গাড়ি চালানো উচিত। আমাদের দেশে প্রতিনিয়তই নতুন গাড়ি রাস্তায় নামানো হচ্ছে, এটা খুব ভালো সংবাদ। তবে পাশাপাশি যে সকল গাড়িগুলো পুরাতন বা চলার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সেগুলোকে বাতিল না করে, পুনরায় সচল রাখার চেষ্টা করছে মালিকরা। ফলে রাস্তায় যেমন যানজট বাড়ছে, পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনাও বেশি ঘটছে। তাই অচিরেই অনুপযোগী গাড়িগুলো সড়ক থেকে অপসারণের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চালকরা হেল্পারের উপর গাড়ি চালনার ভার দিয়ে নিজে বিরতিতে  বা বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করে। যার ফলে অদক্ষ গাড়ি চালকের অদক্ষতাতেও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আবার বর্তমানে আরও একটি বড় সমস্যা হলো সন্ত্রাসবাদ। রাস্তায় ডাকাত কর্তৃক যাত্রীদের সর্বস্ব লুট হওয়া। অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীদেরকে মেরে গাড়ি থেকে লাশ পর্যন্ত ফেলে দেওয়া হয়! এসব গাড়ির শ্রমিকদের সঙ্গেও যাত্রীদের অনেক সময়- নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে অনেক মহিলারাও বাসের শ্রমিক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হন। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করার প্রয়োজন। মাঝে মাঝে একটি পরিসংখ্যান আমাদের ভাবায়। সেটা হলো উন্নত বিশ্বে অনেক দেশেই ধনীরাও গণপরিবহনগুলোতে বেশি চলাচল করেছে। অর্থাৎ, সেসব দেশে তুলনামূলকভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কম। এতে যানজটও কম হয়। এটা আমাদের দেশেও করা সম্ভব বা দেশের স্বার্থে আমরাও ভবিষ্যতে চিন্তাভাবনা করতে পারি।
সবচাইতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সকল চালককে ট্রাফিক রুলস জানা এবং সঠিকভাবে মেনে চলা। আর এই নিরাপদ যাত্রার জন্য ট্রাফিক রুলস মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সর্বসাকুল্যে এই সমস্যা সমাধান শুধু সরকারের একার পক্ষেই করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা এবং একটি পরিচ্ছন্ন বিবেক। তাহলেই একটি নিরাপদ যাত্রার পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব।

বালিয়াডাঙ্গা, কালীগঞ্জ থেকে

×