
ছবি:সংগৃহীত
গরমের দিনে বা ব্যায়ামের পর শরীরকে হাইড্রেট করতে অনেকেই নারকেল জলকে ভরসা করেন। এটি সত্যিই একটি প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর বিকল্প, তবে এটাই একমাত্র উপায় নয়। এমন আরও কিছু পানীয় আছে যেগুলো ইলেকট্রোলাইটে ভরপুর এবং নারকেল জলের থেকেও ভালোভাবে শরীরকে হাইড্রেট করতে পারে।
১. দুধ
ইলেকট্রোলাইট উপাদান (১ কাপ লো-ফ্যাট দুধে):
- ক্যালসিয়াম: ৩১০ মিগ্রা
- ম্যাগনেশিয়াম: ২৯ মিগ্রা
- ফসফরাস: ২৫৩ মিগ্রা
- পটাসিয়াম: ৩৯১ মিগ্রা
- সোডিয়াম: ৯৫ মিগ্রা
এক কাপ দুধে প্রায় ২২১ গ্রাম জল থাকে, যা দুধকে একটি হাইড্রেটিং পানীয় করে তোলে। শুধু জল নয়, এতে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটও থাকে, যা ব্যায়ামের পর পেশি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। চাইলে কোকো পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন—ফ্লেভারও বাড়বে, সাথে মিলবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। দুধ খেতে না চাইলে সোয়া দুধও একটি ভালো বিকল্প।
২. ১০০% ফলের রস
ইলেকট্রোলাইট উপাদান (১০০ গ্রামে):
- ক্যালসিয়াম: ১৩ মিগ্রা
- ম্যাগনেশিয়াম: ১০ মিগ্রা
- ফসফরাস: ১৮ মিগ্রা
- পটাসিয়াম: ১৮০ মিগ্রা
- সোডিয়াম: ৫ মিগ্রা
কমলার রস, টমেটো, তরমুজ, গাজর বা বিটের রস—সবই ইলেকট্রোলাইট সরবরাহ করতে সক্ষম। যদিও রসে আঁশ কম থাকে, তবু এতে থাকে ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রাকৃতিক চিনি যা শরীরের জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। বাজার থেকে কিনলে দেখে নিন যেন বাড়তি চিনি না থাকে।
৩. স্মুদি
উল্লেখযোগ্য উপাদান ও ইলেকট্রোলাইট:
- ১টি মাঝারি কলায়: ৪৫১ মিগ্রা পটাসিয়াম
- ৮ আউন্স গ্রীক দইয়ে: ২৬১ মিগ্রা ক্যালসিয়াম
- ১০০ গ্রাম পিনাট বাটারে: ২২১ মিগ্রা সোডিয়াম, ১৯৩ মিগ্রা ম্যাগনেশিয়াম, ৩৯৩ মিগ্রা ফসফরাস
স্মুদি মানেই এক ঢোঁকে অনেক উপকার। কলা, দই, বাদামবাটার বা অন্য যেকোনো ফল-মূল বা প্রোটিন মিশিয়ে বানানো যায় এই শক্তিশালী পানীয়টি। চাইলে এতে জল বা দুধ মিশিয়ে হাইড্রেশন বাড়ানো যায়।
৪. হাড়ের বা সবজির ঝোল
ইলেকট্রোলাইট উপাদান (৪৭৯ গ্রামে):
- সোডিয়াম: ৭৪০ মিগ্রা
- ক্যালসিয়াম: ৫০ মিগ্রা
- পটাসিয়াম: ১৯০ মিগ্রা
গরমে গরম ঝোল শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটি ইলেকট্রোলাইটের চমৎকার উৎস। চাইলে ঠান্ডা করেও খেতে পারেন। ঝোলের সোডিয়াম ও পটাসিয়াম শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ঘরে বানালে লবণের পরিমাণ নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, এবং এতে প্রাকৃতিক কোলাজেনও থাকে যা ত্বক ও হাড়ের জন্য উপকারী।
ইলেকট্রোলাইট কী?
ইলেকট্রোলাইট হলো এমন কিছু খনিজ পদার্থ যা শরীরের স্নায়ু ও পেশির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- সোডিয়াম
- পটাসিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- ম্যাগনেশিয়াম
- ক্লোরাইড
- ফসফেট
- বাইকার্বনেট
নারকেল জল পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ হলেও এতে সোডিয়ামের পরিমাণ তুলনামূলক কম। তাই কখনো কখনো এই বিকল্প পানীয়গুলো হতে পারে আরও কার্যকর।
সতর্কতা
এই তথ্যগুলো শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে এবং কোনো চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
মারিয়া