
আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনা ও জায়নামাজ বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রুহুল কবির রিজভী
দেশের অর্থনীতিতে করুণ অবস্থা চলছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষের আলামত দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. আব্দুল কুদ্দুসের রোগ মুক্তি কামনা এবং দুস্থদের মাঝে জায়নামাজ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আজকে অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতে না পারে তাহলে কিন্তু দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে। এই আলামত তৈরি হলে কেউই কিন্তু রেহাই পাবে না। তখন হাততালি দিবে পতিত ফ্যাসিস্টরা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের যে দোসরা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে নাম মাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান একই কাজ করেছে। সরকার ইচ্ছা করলে প্রশাসক নিয়োগ করে সেই প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে পারে। গার্মেন্টস কারখানাগুলো যাতে বন্ধ না হয় সরকার এটাকে নানাভাবে টেকওভার করতে পারে।
তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় স্বৈরাচারের দোসররা থেকে থাকলে তাদের বিচার করতে হবে। দেশের অর্থনীতির কঠিন ও করুণ অবস্থা। এটা শুধু মুখের কথা নয়। সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না এইটা এখন মানুষের মনে মনে। তাই আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না করলে জনগণ কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেবে না।
রিজভী বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করছে। আমরা মানবিক সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়ছি। আমরা আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। এ জন্য দরকার চিরায়ত গণতন্ত্র, প্রকৃত গণতন্ত্র, খাঁটি গণতন্ত্র। এটা বৃহত্তর আদর্শের লড়াই, যেখানে জনগণের মালিকানা জনগণ ফিরে পাবে। সেই মালিকানা আটকে রাখা তো বড় ধরনের ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রতিটি পদে পদে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সেই জবাবদিহিতা এখন নেই। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও আমরা মনে করি জনসমর্থিত, কারণ শুধু আওয়ামী লীগ আর তাদের কয়েকটি দোসর দল ছাড়া সবাই এই সরকারকে সমর্থন করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে আমরা সবাই সমর্থন করে যাচ্ছি। কিন্তু এটাও তো ঠিক দুর্ভিক্ষের আলামত যদি আমরা দেখতে পাই, শুনতে পাই তাহলে তো জনগণ আমাদেরও ছেড়ে দেবে না।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বা জুলাই ঘোষণাপত্রকে মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্তির কথা বলা বিভ্রান্তিমূলক। জুলাই সনদের অনেক বিষয় বিএনপি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি মূলনীতির মধ্যে নিতে হবে কেন? যুগে যুগে দেশে আরও সংস্কার হবে। সংস্কার কোনো থাই পর্বতমালার মতো স্থির বিষয় নয়, এটি একটি গতিশীল ব্যাপার। বিএনপির পক্ষ থেকে তো সংস্কারবিরোধী কোনো কথা বলা হয়নি, সংস্কারের পক্ষেই বলা হয়েছে। বিএনপি চায় জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. শফিকুল ইসলাম, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দল্লাহহিল মাছুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
প্যানেল