ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্যারিস্টার ফুয়াদ

আমি রাজনৈতিক নেতাকর্মী,প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিপক্ষে

প্রকাশিত: ১২:৫১, ১৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:৫২, ১৩ জুন ২০২৫

আমি রাজনৈতিক নেতাকর্মী,প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিপক্ষে

রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রের কর্মচারীরা যেন আর বিদেশে চিকিৎসা নিতে না পারেন এই আহ্বান জানিয়েছেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিপক্ষে।’’

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘‘প্রথম কথা হচ্ছে যে, উনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে বলে আমি জানি না। একটা বিষয় হচ্ছে যে আওয়ামী রেজিমের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বৈধতার প্রশ্নের আগে আমরা তুলেছি যে, একটা অবৈধ সংসদ বৈধ প্রেসিডেন্টকে জন্ম দিতে পারে কিনা। এটা একটা পলিটিক্যাল কোশ্চেন।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যেই লোকের বিরুদ্ধে মামলা নাই, তার সংবিধানে রাইট বলে দেওয়া আছে যে, এই জমিনে, এই ভূমিতে তিনি বের হয়ে যেতে পারবেন স্বাধীন মত, আবার ঢুকতে পারবেন। এইটাকে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না।’’

ফুয়াদ বলেন, ‘‘ইন প্রিন্সিপাল, আমি রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিপক্ষে। সেটা খালেদা জিয়ার জন্য আমি বিপক্ষে, আব্দুল হামিদের জন্য বিপক্ষে, যে যত বড় নেতা হোক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হোক। শুধু বিদেশে না, তার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার ব্যাপারেও আমি বিপক্ষে।’’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এবং সেবকরা যদি সরকারি সেবা ব্যবহার না করেন, তাহলে দুইটা ক্ষতি আছে। একটা ক্ষতি হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর উপরে জনগণের কখনো কোনোদিন আস্থা তৈরি হবে না। কারণ তারা মনে করবে, আমার যদি শান্তিতে মরতে হয়, তাহলে মাউন্ট এলিজাবেথে গিয়ে মরতে হবে, না হলে ব্যাংককে গিয়ে মরতে হবে। সদর হাসপাতালে মরলে আমার ইজ্জত থাকবে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘পরকালে গিয়ে আমি আল্লাহর কাছে কী বলবো? তুমি এরকম একটা বড় নেতা ছিলা, কিন্তু একটা গরিব হাসপাতালে গিয়া মরলা! তুমি একটা বড় লোকের হাসপাতালে গিয়া মরবা না?’’

ফুয়াদ আরও বলেন, ‘‘আপনি যখন জানবেন যে এই হাসপাতালে এমপি, মন্ত্রীরা ট্রিটমেন্ট নেয়, শহরের মেয়র, লোকাল এমপি, পিএসসিপিরা ট্রিটমেন্ট নেয়, তখন দেখবেন আমলারাও কিন্তু হাসপাতালটা ভালোভাবে চালাবে। ভালো সার্ভিস দেবে, কারণ তাদের ভয় করবে।’’

‘‘এই বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার কালচারটা বাদ দিতে হবে। এটা আইন করে করা যাবে না, এটা একটা নৈতিকতার প্রশ্ন। ইন প্রিন্সিপাল এই পজিশনটা নিতে হবে পলিটিকে,’’ বলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ।

তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশে অ্যাননেসেসারি কিছু হাইপ তোলা হয়, অযৌক্তিকভাবে তোলা হয়, অপ্রয়োজনে তোলা হয় এবং আপনাদের প্রচুর মিডিয়ার ওয়ার্কিং আওয়ার নষ্ট হয়। এর ভিতরে আমি কোনো বেনিফিট দেখি না।’’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘‘উনার (সাবেক রাষ্ট্রপতির) বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা করবার মতো কোনো ইস্যু থাকে, ফৌজদারি অপরাধ করা হয়ে থাকে, তাহলে ইনভেস্টিগেশন করা হোক। সেটা রাষ্ট্র বিচার দেখবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘তার যাওয়ার উপরে তো কোনো এমবারগো ছিল না, এটা আমাদের জানা নাই। যে তিনি দেশত্যাগ করতে পারবেন না এই মর্মে কোনো এমবারগো ছিল না। অথবা তার পাসপোর্ট সিজ করা হয়েছিল, কিংবা তার বিরুদ্ধে মামলা ছিল, তাকে রেস্ট্রিকশন দেওয়া ছিল, তিনি অবৈধভাবে গেছেন এমন কিছু প্রতিয়মান হয় না।’’

ফুয়াদ বলেন, ‘‘তাহলে যদি কারো চাকরিচ্যুতি করা হয়, তাকে ক্ষমা চেয়ে তার চাকরি ফেরত দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ করতে হবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।’’


ব্যারিস্টার ফুয়াদের এই বক্তব্য আবারও আলোচনার কেন্দ্রে এনেছে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের চিকিৎসা সুবিধা প্রসঙ্গে জাতীয় নৈতিক অবস্থান ও সেবাব্যবস্থার প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার প্রশ্ন।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/zpmk6uvf

আফরোজা

আরো পড়ুন  

×