
ছবিঃ সংগৃহীত
এবার জমির মৌজামূল্য বাজারভিত্তিক করার পথে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। মূলত আইএমএফ-এর ঋণচুক্তির শর্ত প্রতিপালনের অংশ হিসেবেই নেওয়া হচ্ছে এই উদ্যোগ। সেই অনুযায়ী, আসছে অর্থবছর থেকে সম্পত্তির দাম নির্ধারিত হবে নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে। যেখানে আমলে নেওয়া হবে শেষ দুই বছরের দলিলমূল্য। এছাড়া পরিবর্তন আসছে রেজিস্ট্রেশন ফিতেও।
বাংলাদেশে জমি বেচাকেনার ক্ষেত্রে সাধারণত দাম নির্ধারিত হয় ক্রেতা ও বিক্রেতার দর-কষাকষির মাধ্যমে। জমির অবস্থান, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও গুরুত্ব বিবেচনায় এসব নির্ধারিত হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকার নির্ধারিত দর বা মৌজামূল্য আমলে নেওয়া হয় না। তবে আসছে বাজেটে সেই প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বিধিমালায় যুক্ত করা হচ্ছে বেশ কিছু অনুসঙ্গ। যেখানে কোনো মৌজার একই শ্রেণির জমির শেষ দুই বছরের সমস্ত দলিলের গড় মূল্যকে ভিত্তি ধরে নির্ধারিত হবে সর্বনিম্ন দাম। এরপর গণশুনানির মাধ্যমে দাম নির্ধারণের পর চূড়ান্ত হবে লেনদেন। তবে কোনো অবস্থাতেই বিক্রিমূল্য গড় দামের নিচে হতে পারবে না। আর দ্বিগুণের বেশি দাম হলে তা উল্লেখ করতে হবে সুনির্দিষ্ট কারণসহ।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বাজারমূল্য গোপন রেখে মৌজামূল্যে লেনদেনে বাড়ে কালো টাকার ব্যবহার, যা কমাতেই নেওয়া হচ্ছে এমন পদক্ষেপ।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এটা বলা যায় যে, কালো টাকার অন্যতম উৎস হচ্ছে জমি বেচাকেনা। দীর্ঘদিন ধরে এটা চলে আসছে। ফলে একে প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা যথার্থ।”
জমির সর্বনিম্ন দামের মানদণ্ড ছাড়াও আসছে বাজেটে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন ফিতে। যেমন: ১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আগে ২ শতাংশ মূসক ছিল, তা কমে হচ্ছে ১ শতাংশ। একই হারে কমছে ভূমি উন্নয়ন ফি—২ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ হচ্ছে স্ট্যাম্প ফি। একই সঙ্গে গেইন ট্যাক্স বা উৎসে কর কমছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন পৌরসভায়।
সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার মৌজামূল্য সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। আইএমএফ-এর ঋণচুক্তির শর্ত ছিল জমির দর বাজারভিত্তিক করে দেওয়া। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ চারবার এমন উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আইএমএফ-এর শর্ত মানতে এবার তাই অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে এ খাতে।
ইমরান