
সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না
সরকার বদল হলেও সিন্ডিকেটের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম বৃহত্তম খাত শ্রমবাজার। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাদের দখলে থাকা সিন্ডিকেটটি হাতবদল হয়ে নতুন রূপে সংগঠিত হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর দেশের মানুষ রেহাই পেলেও বিদেশে কাজে যাওয়া মানুষের কোনো নিস্তার নেই।
ফলে, জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসার সিন্ডিকেট নামের মরণ ঘাতকটি ফিরে আসছে মারাত্মকভাবে। সিন্ডিকেটের কারণে শ্রমিকদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে, এক কথায় বলা যাচ্ছে যেন, পুরাতন বোতলে নতুন মদ।
প্রবাসী শ্রমিক ও শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় একজন কর্মীকে যেতে হলে বাধ্যতামূলক খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে একজন প্রবাসীকে টাকা খরচ করতে হচ্ছে ৪-৫ লাখ টাকা। জায়গা ভেদে আরও অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকা এক প্রকার বাধ্য করেই আদায় করে নিচ্ছে এসব অসাধু সিন্ডিকেট।
অভিযোগ রয়েছে, ৫ আগস্টের পর সেই রুহুল আমিন স্বপন ও তার সহযোগীরা তাদের মালয়েশিয়ার পার্টনার দাতুশ্রী আমিন বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁ করে পুনরায় অসাধু সিন্ডিকেট করে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বায়রার সাবেক পরিচালক জনকণ্ঠকে বলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির এক সদস্যের নেতৃত্বে আবারও সেই সিন্ডিকেট চক্র মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারকে নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত। যদিও বর্তমানে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। তবে অচিরেই সরকারের চেষ্টায় চালুর প্রস্তুতি চলছে। সে সুযোগকে কাজে লাগাতেই পুনরায় নতুন সিন্ডিকেট তৎপর।
কোন্ দেশে যেতে কত খরচ ॥ ২০২১ সালে সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া অভিবাসন খরচ হচ্ছে সিঙ্গাপুরে (প্রশিক্ষণসহ) ২ লাখ ৬২ হাজার ২৭০ টাকা, সৌদি আরবে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা, মালয়েশিয়ায় নির্মাণ শ্রমিকের জন্য এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ও কৃষিকাজের ক্ষেত্রে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, লিবিয়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০ টাকা, বাহরাইনে ৯৭ হাজার ৭৮০ টাকা, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক লাখ ৭ হাজার ৭৮০ টাকা, কুয়েতে এক লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা, ওমানে এক লাখ ৭৮০ টাকা, ইরাকে এক লাখ ২৯ হাজার ৫৪০ টাকা, কাতারে এক লাখ ৭৮০ টাকা, জর্দানে এক লাখ ২ হাজার ৭৮০ টাকা, মিসরে এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০ টাকা, রাশিয়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৪০ টাকা, মালদ্বীপে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮০ টাকা, ব্রুনাইয়ে এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০ টাকা এবং লেবাননে এক লাখ ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দক্ষতা ভেদে নিয়োগ ব্যয়ের ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। অদক্ষ অভিবাসী কর্মীর গড় নিয়োগ ব্যয় সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ছিল। যেখানে দক্ষকর্মীর ক্ষেত্রে ৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা এবং গৃহকর্মীর ক্ষেত্রে তা ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা। গন্তব্য দেশের ভিত্তিতে একজন অভিবাসী কর্মীর সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা গড় নিয়োগ ব্যয় হয়ে থাকে।
যেখানে সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে ৪ লাখ ৪ হাজার টাকা, কাতারের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ২ হাজার টাকা এবং ওমানে যাওয়ার ক্ষেত্রে ৩ লাখ ৮ হাজার টাকা গড়ে নিয়োগ ব্যয় হয়ে থাকে।
অভিবাসন ব্যয়, বাস্তবতা কী ॥ অনুসন্ধান এবং বিদেশফেরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৌদি আরব যেতে একজন পুরুষ শ্রমিককে খরচ করতে হয় ৫ থেকে ৯ লাখ টাকা, মালয়েশিয়ায় যেতে খরচ করতে হয় সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। সবশেষে মালয়েশিয়ায় যেতে অনেকেই ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করেছেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, একজন অভিবাসন প্রত্যাশীর সাধারণ অভিবাসন খরচের সঙ্গে রয়েছে অ্যাপ্লিকেশন ফি, ভিসা ফি, ওয়ার্ক পারমিট ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, বিদেশে বিপণন ও লিয়াজোঁ অফিস খরচ, প্রশিক্ষণ খরচ, বিমান ভাড়া, অগ্রিম আয়কর, প্রশিক্ষণ ও ভাষা পরীক্ষা, ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার ফি, আনুষঙ্গিক খরচ, তথ্য নিবন্ধন ফি, রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ, ইন্স্যুরেন্স ফি, ইমিগ্রেশন ট্যাক্স ও ভ্যাট।
এই খরচের মধ্যে থাকলে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সমস্যার জায়গা অনির্ধারিত খরচগুলো অর্থাৎ লুকায়িত খচরগুলো। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মোট খরচের ৭৮ শতাংশই চলে যায় মধ্যস্বত্বভোগী, অবৈধ মধ্যস্থতাকারী অথবা গমনেচ্ছু দেশের কিংবা নিজ দেশের সাব এজেন্টদের পকেটে।
ভিসা বাণিজ্যে বাড়ছে অভিবাসন ব্যয় ॥ নেত্রকোনার কাইয়ুম ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে সৌদি আরব গেছেন। কাইয়ুম বলেন, যত টাকা খরচ করে গিয়েছিলাম, সেটাও যদি কামাই না করা যায়, তাহলে সেখানে বেকার বসে বসে খাবার খরচের কি মানে? কাইয়ুমের অভিযোগ, শুধু সৌদি আরব নয়, ভিসা বাণিজ্য আছে বিভিন্ন শ্রমবাজারে। বিভিন্ন দেশ থেকে ভিসা কিনে এনে চড়া দামে বিক্রি করা হয় অভিবাসী কর্মীদের কাছে। আর তাতে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যায় কয়েকগুণ বেশি। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে ভিসা বাণিজ্য এখনো চলমান আছে।
অভিবাসন ব্যয় কমালে প্রভাব পড়বে ॥ অভিবাসন ব্যয় সংক্রান্ত বিবিএসের জরিপে উল্লেখ করা হয়, অভিবাসন ব্যয় কমলে প্রবাসীদের উপার্জন বৃদ্ধি এবং নিজ দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারে। অভিবাসন ব্যয় হ্রাস করলে ঋণগ্রস্ত হয়ে বিদেশে যাওয়া ও সম্ভাব্য শোষণের ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের সুরক্ষার উন্নতিবিধান হতে পারে। অভিবাসন ব্যয় সবচেয়ে বেশি হয় অভিবাসনের জটিল প্রক্রিয়ায়, যেখানে ‘প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী’ উভয় দেশেই নিয়োগকারী জড়িত থাকে।
অদক্ষ কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় তুলনামূলক বেশি হতে পারে, তারা প্রবাসে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। অভিবাসীকর্মী হিসেবে নিয়োগ ব্যয় কিছু কিছু দেশে ব্যয়বহুল, এ নিয়োগ ব্যয় শুধু প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণেই তা নয়, বরং অনেক সময় অভিবাসন প্রক্রিয়ায় ‘উৎস ও গন্তব্য’ উভয় দেশেই অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা ও সুরক্ষা দেওয়ার ‘অভিবাসন চেইনে’ চুক্তি প্রতিষ্ঠায় অকৃতকার্যতার কারণেও নিয়োগ ব্যয় বেশি হয়ে থাকে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক ড. জালাল উদ্দিন সিকদারের মতে, রেমিটেন্স পাঠাতে হুন্ডির প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে অভিবাসন ব্যয় অনেকাংশে দায়ী। তিনি বলেন, নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি টাকা খরচ করে বিদেশ যেতে হচ্ছে। এই টাকা চড়া সুদে ঋণ নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকে সম্পদ বিক্রি করে পাড়ি জমান বিদেশে।
তাই যে কোনো মূল্যে উপার্জনের একটা চাহিদা তৈরি হয়। যেদিন থেকে কাজ শুরু করেন, সেদিন থেকেই দেশে টাকা পাঠানোর পরিকল্পনা করেন কর্মীরা। আর হুন্ডিতে বিনিময় মুদ্রা বেশি হওয়ার কারণে তারা সেই মাধ্যমেই টাকা পাঠাতে আগ্রহী হন।
সিন্ডিকেটের কারণে নির্ধারিত খরচে কর্মীরা বিদেশে যেতে পারছেন না। এতে বিদেশ গমনেচ্ছুরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সরকারও হারাচ্ছে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা। ফলে, সরকারের পুরো উদ্যোগটিই ভেস্তে যাচ্ছে।
সম্প্রতি দুদকের অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী বিদেশগামী কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সাত হাজার টাকায় করার কথা থাকলেও বিনিময় ইন্টারন্যাশনালের মেডিক্যাল সেন্টারটি ১২ থেকে ৩৬ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ ব্যক্তি ওই মেডিক্যাল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। কিছু ক্ষেত্রে একেকজনের একাধিকবারও পরীক্ষা করানো হয়।
নতুন সিন্ডিকেটের পাঁয়তারা ॥ ফ্যাসিস্ট সরকারের অসাধু সিন্ডিকেট চক্র বর্তমান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করে পুনরায় সিন্ডিকেট চালুর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করছে বায়রা। তাদের দাবি বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মৃধার নেতৃত্বে নতুন সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে।
সিন্ডিকেট ভাঙা গেলে মালয়েশিয়াতে মাত্র দেড় লাখ টাকায় শ্রমিক পাঠানো সম্ভব। কিন্তু সিন্ডিকেট নিয়ে গত এক দশক ধরে এত বড় কেলেঙ্কারি হওয়ার পরও এখনো সেটা ভাঙা সম্ভব হয়নি। যখনই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়, চুক্তি হয়, তখনই ওই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়। এমনই অভিযোগ করেছেন বায়রার একটি প্রতিনিধি দল। অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মৃধার সঙ্গে মুটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে অভিবাসন খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের একটি দৌড়াত্ম্য তো রয়েছেই। সিন্ডিকেট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ না করলে অভিবাসন খরচ কমানো সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতে যে অভিবাসন খরচ, সেটি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
সরকার প্রত্যেকটা দেশের জন্য নির্ধারিত খরচ বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু কাগজে-কলমেই সেটা আছে। যারা বিদেশে লোক পাঠায়, তারা অনেক সময়েই অনেকগুণ বেশি টাকা নেন। এর কারণ, বিদেশে যেমন মধ্যস্বত্বভোগী আছে, দেশেও তেমনই নানা স্তরে দালালদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। ফলে, আট থেকে ১০ লাখ টাকাও লাগে বিদেশে যেতে। এছাড়া পদে পদে আছে ভোগান্তি-হয়রানি। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই এর শুরু।
এরপর রিক্রুটিং এজেন্সির দালাল ও প্রতারক এজেন্সি, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসা কেনাবেচা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্রে সব ক্ষেত্রে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত কী।
সিন্ডিকেটের বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামতউল্লাহ ভুইয়া বলেন, সিন্ডিকেটের বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক। যে কোনো মূল্যে সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে সরকার। নতুন সিন্ডিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আপনাদের (বায়রা কর্মকর্তাদের) অভিযোগ গ্রহণ করা হলো। সরকার এ বিষয়ে তৎপর।
অভিবাসন ব্যয় কমাতে সরকারের উদ্যোগ কী জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদেশ যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের হাতের নাগালে প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকায় সিন্ডিকেটের কারণে তাদের মিথ্যা আশ্বাসে কর্মীর অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। ফলে, গন্তব্য দেশে কর্মীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও প্রতিকূলতা দূর করাসহ সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ে নিরাপদ, নিয়মিত ও স্বচ্ছ অভিবাসন নিশ্চিত করতে জেলা ভিজিলেন্স টাস্কফোর্স কমিটি এবং জেলা অভিবাসন সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক এই কমিটির প্রধান। প্রতি ৩ মাসে একবার এই কমিটির মিটিং করার কথা রয়েছে।
সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, সিন্ডিকেটের দরুন চূড়ান্তভাবে বহির্গমন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও ১৭ হাজার কর্মীসহ মোট ৫০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেনি। সিন্ডিকেটের অনিয়মের কারণে অসংখ্য কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার পরও চাকরি, বেতন ও বাসস্থান না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে রামরুর চেয়ারপার্সন অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে প্রবাসীরা তাদের অধিকার পাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, যেখানে একজন কর্মী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় যেতে পারছে, সেখানে সিন্ডিকেট করে কর্মীর কাছ থেকে আদায় করছে ৫-৬ লাখ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি। তাতে প্রবাসীদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।
বায়রার সাবেক কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, এ সিন্ডিকেট নির্মূলে আসন্ন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আগের সমঝোতা স্মারকের দুটো ধারা বাদ দিতে হবে। অন্যান্য সোর্সিং দেশের ন্যায় মালয়েশিয়ার সরকারের পরিবর্তে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি পছন্দ করবে। কেননা, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়। বরং সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করতে হবে এবং কম খরচে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।