মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
পোশাক শিল্পের অস্থিরতার মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিজিএমইএর প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, পোশাক শিল্প হচ্ছে অর্থনীতির চালিকা শক্তি। একে যে কোনোভাবে সচল রাখতে হবে। এর সঙ্গে একটা বিশাল গোষ্ঠীর কর্মসংস্থান জড়িত উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
পোশাক শিল্পের মালিকরা গোষ্ঠী বিশেষ এ শিল্পের অস্থিরতা সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ব্যাপারে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতার কামনা করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রকিবুল আলম, পরিচালক শোভন ইসলাম, নুরুল ইসলাম, আফসার হোসেন প্রমুখ।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিদের মধ্যে ছিলেল এসএম ফজুলল হক, কাজী মুনির, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এবং বিজিএমইএর স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, আবুল কালাম প্রমুখ।
সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএর নেতারা পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিবের কাছে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব বিজিএমইএর প্রতিনিধি দলকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পোশাক শিল্প-কারখানায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে তারেক রহমান সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
হিটলারের সঙ্গে কি সংলাপ করা যায়- প্রশ্ন রিজভীর : দেশে একটি স্থিতিশীল পরিবেশের জন্য কেউ কেউ শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ করা দরকার বলে বলছেন জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হিটলারের সঙ্গে কি সংলাপ করা যায়? আবার কি আমরা ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খানকে ডেকে নিয়ে এসে সংলাপ করব? আর এসব বলা লোক সৈয়দ জামিল আহমেদকে শিল্পকলা একাডেমির ডিজি বানানো হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কেন?
মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত তিনটি পরিবারের মাঝে অর্থ সহায়তা প্রদান করতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সৈয়দ জামিল কয়েকদিন আগে বলেছেন পালিয়ে থাকা রামেন্দ্র মজুমদার, নাসির উদ্দিন বাচ্চু এদের নিয়ে আসা দরকার। আমার প্রশ্ন তারা পালিয়েছেন কেন? আমরা তো দেখছি যারা ভদ্র আওয়ামী লীগার, তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
রিজভী বলেন, সোমবার ২৫ জন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ২৫ জন ডিসির সবগুলোই ছিল ছাত্রলীগের। এরা তো গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করবে না। আজকে যারা আয়নাঘর করেছে, সাগর-রুনির হত্যাকা-কে যারা ধামাচাপা দিয়েছে, একের পর এক কুকর্ম করেছে, তাদেরই তো এরা প্রশ্রয় দেবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদের দুর্বলতার সুযোগে কিংবা ভালো মানসিকতার সুযোগে ওই পরাজিত স্বৈরাচারের লোকেরা যেন কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠা না পায়। তিনি বলেন, হিটলারের যারা সহযোগী ছিল, তাদের কি পরবর্তী সরকার কোনো জায়গা দিয়েছিল? এটা তো আমরা কখনো শুনিনি।
রিজভী বলেন, তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নানা কথা বলছেন। সৈয়দ জামিল আহমেদ এ সমস্ত বুদ্ধিজীবীকে নিয়ে কিসের রাষ্ট্র তৈরি করতে চান। আবার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চান? শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনলে হয়তো আপনাদের আবার সুবিধা হবে, কিন্তু গোটা জাতি আবার ক্রীতদাস হয়ে যাবে।
এ সময় রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মিথুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে- ফারুক: ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ ভারতের আগ্রাসী বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফারুক বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মন বড়। তারা ক্ষমা করতে জানে। তবে বাংলাদেশ নিয়ে তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য কেউ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ নানারকম সংকটে পড়েছে। তবুও সেখানকার মানুষ বলে, এখনো কেন শেখ হাসিনার বিচার হচ্ছে না। এই একমাস পাঁচদিনে শেখ পরিবারের কাউকে বিচারের আওতায় আনলে মানুষ বিশ্বাস করত। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলব অপরাধীরা কোথায়?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে ফারুক বলেন, আপনারা নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিন। দেশবাসী একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা যাতে দেশে আর রাজনীতি করতে না পারে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।