ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতি মাসেই সমন্বয় করা হবে ॥ প্রতিমন্ত্রী

ফেব্রুয়ারির শুরুতে ফের বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

ফেব্রুয়ারির শুরুতে ফের বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

.

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠছে, তখনই বাড়ানো হয় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম। এক সপ্তাহের মাথায় বাড়ে শিল্প খাতে গ্যাসের দামও। সরকারের নির্বাহী আদেশে গ্যাস-বিদ্যুতের বাড়তি দাম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই আবারও বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই আরও অন্তত ১০ শতাংশ বাড়ানো হবে দাম। এর আগে চলতি মাসে ৫ শতাংশ করে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ১৯ পয়সা। এবার আরও ৪০ পয়সা পর্যন্ত বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের নামে প্রতি মাসেই এমনভাবে দাম বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছাবে তা নিয়ে শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। তবে পরিস্থিতি যাই হোক গ্রাহকদের ওপর চাপ পড়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
চলতি মাসের ১২ তারিখ সরকারের নির্বাহী আদেশে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ৫ শতাংশ। যা চলতি ‘বিল মাস’ থেকেই কার্যকর হচ্ছে। তখনই বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়, এবার থেকে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হবে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়। কোনো গণশুনানি নয় বরং সরকারের নির্বাহী আদেশেই এ সিদ্ধান্ত হবে। তবে কথাটা সমন্বয় বলা হলেও বিশ্ববাজারের জ্বালানির মূল্য নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশে দাম কমানোর কোনো লক্ষণ নেই। বরং প্রতি মাসেই বাড়ার লক্ষণই প্রবল। যার ইঙ্গিত মিলেছে শুক্রবার খোদ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের এক বক্তব্যেও। এদিন এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। এর আগেও আমরা বলেছি প্রতি মাসে আমরা কিছু সমন্বয় করবো। সেটাই এখন চলছে। প্রতি মাসেই আমরা এটা অল্প অল্প করে সমন্বয় করব।

তবে এর বিনিময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সেচের জন্য অনেক জায়গায় সারাদিন ধরে পাম্প চালান অনেকেই। আমরা একটা সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আপনারা সেচের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন। তবে কিছু কিছু জায়গায় এটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এটা কোনো সমস্যা নয়, আমরা ঠিক করছি। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আরও ভালো থাকবে, বিশেষ করে আগামী মাস থেকে।
এর আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় সরকারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনে থাকা ক্ষমতাবলে, সরকার, ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের সরবরাহকৃত বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার পুনর্নির্ধারণ করা হলো। পুনর্নির্ধারিত মূল্য মোতাবেক গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বেড়ে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা, ০-৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ টাকা ৪০ পয়সা, ৭৬-২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৫ টাকা ৭২ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ১ পয়সা, ২০১-৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৩০ পয়সা, ৩০১-৪০০ ইউনিটের জন্য ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা, ৪০১-৬০০ ইউনিটের জন্য ৯ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ১১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৩ পয়সা করা হয়েছে। তখন গণশুনানি হলেও সিদ্ধান্ত হয় নির্বাহী আদেশে।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট ইস্যুতে গত বছরের প্রায় পুরোটা সময় অস্থির অবস্থায় কেটেছে বিদ্যুৎ বিভাগের। লোডশেডিং, সাশ্রয়সহ নানা পদক্ষেপেও স্থিতিশীলতা আসেনি শীত আসার আগে পর্যন্ত। এরই মধ্যে গত বছরের শেষের দিকে বাড়ানো হয় বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার। সঙ্গে সঙ্গেই লোকসানের শঙ্কায় খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়ানোর জন্য ওঠে-পড়ে লাগে বিতরণ কোম্পানিগুলো। বিইআরসিতে জমা পরে দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনাও। এরই প্রেক্ষিতে গণশুনানিও করে বিইআরসি। শুনানিতে পাইকারি পর্যায়ের পর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দর ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে বিইআরসি। এই সুপারিশ কার্যকর হলে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ত ১ টাকা ২১ পয়সা। নিয়ম অনুযায়ী শুনানির ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যুতের নতুন দামের ওপর আদেশ ঘোষণা করার কথা বিইআরসির। কিন্তু এর আগেই সরকারের পক্ষ থেকে নতুন দামের ঘোষণা দেয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতা আগামী মাসেও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জনকণ্ঠকে বলেন, কোম্পানিগুলোর আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা এর আগে শুনানি করেছিলাম। কিন্তু যেহেতু সরকারের হাতে দাম বাড়ানো-কমানোর নির্বাহী ক্ষমতা রয়েছে তাই এক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। নির্বাহী আদেশে যদি আগামী মাসেও দাম বাড়ে এক্ষেত্রেও আমাদের কিছু করার নেই।
গত বছরের ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি হারে দাম বৃদ্ধি নিয়ে গণশুনানি করে বিইআরসি। বিদ্যুতের একক ক্রেতা হিসেবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এ গণশুনানি করা হয়। গ্যাসের তৎকালীন মূল্য ধরে পিডিবি তার প্রস্তাবে প্রতি ইউনিটের দাম ৬৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করে। গ্যাসের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি হলে ৯ দশমিক ১৪ টাকা এবং ১২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলে ৯ দশমিক ২৭ টাকা করার প্রস্তাব করে পিডিবি। এর প্রেক্ষিতে রিভিউ শেষে গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি। প্রতি কিলোওয়াট ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা নতুন দর নির্ধারণ করা হয়। এতে করে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম বাড়ে ১ টাকা ৩ পয়সা। শতাংশের হিসাবে যা ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ। যা কার্যকর হয় ডিসেম্বর মাস থেকেই।
শুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে পিডিবি। সংস্থাটি গ্রাহক পর্যায়ে গড় মূল্যহার ২৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ তথা এক টাকা ৯০ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় দাম বেড়ে দাঁড়াত ৯ টাকা তিন পয়সা। বর্তমানে এ হার ৭ টাকা ১৩ পয়সা। পাশাপাশি ডিমান্ড চার্জ ও পোস্ট পেইড গ্রাহকদের জামানত বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এছাড়া সকল থ্রি ফেজ এলটি গ্রাহকের জন্য পাওয়ার ফ্যাক্টর সারচার্জ আরোপসহ আরও কিছু প্রস্তাব করে।
এছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য ২০ দশমিক ২৯ শতাংশ বা এক টাকা ৩৫ পয়সা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। আর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) গড় মূল্যহার ২০ শতাংশ এবং ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ও নদার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) বাল্ক মূল্য বৃদ্ধির অনুপাতে গ্রাহক পর্যায়ে অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১০ সাল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ৯ বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১০ সালের মার্চে প্রথম বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে সময় বিদ্যুতের গড় দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩ টাকা ৯২ পয়সা। পরের বছর (২০১১ সাল) গ্রাহক পর্যায়ে দুই দফা বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে বাড়ানো হয় ৫ শতাংশ ও ডিসেম্বরে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। এতে বিদ্যুতের গড় দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৪ টাকা ৬৭ পয়সা।
২০১২ সালেও খুচরা বিদ্যুতের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়। এর মধ্যে মার্চে বাড়ে ৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ ও সেপ্টেম্বরে ১৫ শতাংশ। এতে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে বিদ্যুতের গড় মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ৫ টাকা ৭৫ পয়সা। এরপর ২০১৪ সালের মার্চে বিদ্যুতের দাম ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ৬ টাকা ১৫ পয়সা। আর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তা ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয় ৬ টাকা ৩৩ পয়সা। একইভাবে এদিকে ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে গ্রাহক পর্যাযে বিদ্যুতের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে সময় বিদ্যুতের গড় মূল্যহার ৬ টাকা ৮৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওইবারই প্রথম বিদ্যুৎ বিতরণকারী সব কোম্পানির জন্য অভিন্ন মূল্যহার নির্ধারণ করা হয়। এতে ঢাকার চেয়ে বেশি গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের দাম বেশি হারে বাড়ে।

এর প্রভাবে গড় মূল্যহার কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে দাঁড়িয়েছিল গড়ে ৬ টাকা ৭৭ পয়সা। আর সর্বশেষ ২০২০ সালের মার্চে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় মূল্যহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে গড় মূল্যহার দাঁড়ায় ৭ টাকা ১৩ পয়সা।
সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ভর্তুকি কমাতেই নেয়া হচ্ছে এমন সিদ্ধান্ত। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কমেছে। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এ বছর সে বরাদ্দ নেমে এসেছে ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কম। মূলত ভর্তুকি কমাতে এবং তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করতেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, কারণ উৎপাদনের ক্ষেত্রে দাম প্রভাবিত হচ্ছে। সরকার আর কত এ খাতে ভর্তুকি দেবে? এক জায়গায় তো থামতে হবে। শুধু তাই নয় বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর সঙ্গেও বিদ্যুতের দামের সমন্বয় জরুরি ছিল। তবে আমরা চেয়েছি গ্রাহকদের ওপর যেন একবারে বেশি করে চাপ না আসে। সেজন্য একবারে নয় বরং দফায় দফায় দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এরকমভাবে দাম বাড়তে বাড়তে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে করে আগে একবারে দাম বাড়লে একবারেই দ্রব্যমূল্যে প্রভাব পড়লেও এবার প্রতি মাসেই একটু একটু করে অন্যান্য পণ্যেরও দাম বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হলো দাবি করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, যেটা সাধারণ বা নি¤œআয়ের মানুষের আয়সীমা ছাড়িয়ে যাবে। এভাবে দফায় দফায় দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই। আমাদের সাধারণ মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ইতোমধ্যে। তাদের আর কোনো চাপেই কোণঠাসা করতে পারবে বলে মনে হয় না। তাই এই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করে একটা যৌক্তিক পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণ করা হোক।
একই কথা বলেন অপর জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে একটা সংকট চলছে তা ঠিক আছে। ব্যয়বহুল বলে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে, একই কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ। সম্প্রতি গ্যাসের দাম বেড়েছে। এরপর জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। সেই ধাক্কা এখনো সামাল দিতে পারছে না জনগণ। এসব দাম বৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। যা মোকাবিলা করা কঠিন।  

 

×