ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বহুমুখী সার্ভিস দিয়েও বিটিসিএলকে টেনে তোলা যাচ্ছে না

সমুদ্র হক

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

বহুমুখী সার্ভিস দিয়েও বিটিসিএলকে টেনে তোলা যাচ্ছে না

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল সাবেক টিএ্যান্ডটি) ভয়েস কলে দেশজুড়ে ১১ ডিজিটের নতুন নম্বর, আধুনিক অন্তর্জাল (ইন্টারনেট) সেবাসহ বহুমুখী কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেও গ্রাহকদের ধরে রাখতে পারছে না। বর্তমানে সরকারি দফতর ও অফিসগুলোতে এবং বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানে বিটিসিএলের ল্যান্ড ফোন সংযোগ রয়েছে। সেখানে পর্যায়ক্রমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ও ভিপিএন সেবা চালু করা হচ্ছে।

তবে বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মালিকানার প্রতিষ্ঠান এবং বাসা-বাড়িতে বিটিসিএলের সংযোগ রাখা হচ্ছে না। সেখানে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটালের ভিন্ন ডিভাইসের সংযোগ নেওয়া হচ্ছে। বাসা-বাড়িতে বিটিসিএলের ভয়েস কল সংযোগ অস্বাভাবিক হারে নেমে এসেছে। বিটিসিএলের ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার আগ্রহ তেমন নেই।
অনেক বাড়িতেই সব সদস্যের আলাদা সেল ফোন (মোবাইল ফোন) রয়েছে। স্মার্ট ফোনের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। ভয়েস কলের অধিকাংশ এখন অন্তর্জালের ওয়াইফাই ও ডেটা লাইনে হয়। যে কারণে ল্যান্ড ফোনের প্রয়োজন পড়ে না। বিটিসিএল গ্রাহকদের ল্যান্ড ফোনে আগ্রহী করতে বিটিসিএল থেকে বিটিসিএল ভয়েস কল ফ্রি আনলিমিটেড করে দিয়েছে। বিটিসিএল থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলার রেট কমিয়েছে। তার পরও আগ্রহ বাড়ছে না।

কারণ আনলিমিটেড যার সঙ্গে কথা বলবেন সেখানেও বিটিসিএলের ল্যান্ড সংযোগ নেই। এ ছাড়াও বিটিসিএল থেকে কোনো কল না করলেও মাসে ১৫০ টাকা লাইন রেন্ট ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ১৭৩ টাকা পরিশোধ করতেই হবে। এই অর্থে অনেকের এক মাসের কথা বলা হয়ে যায়। বেশি কথার জন্য তো কল ভিডিও কলের নেট লাইন রয়েছে। বগুড়া বিটিসিএলে যেখানে ৩৫ হাজার সংযোগ ছিল সেখানে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজারে নেমে এসেছে। বিটিসিএলের রাজস্ব অফিস সূত্র জানায় প্রায় প্রতিদিনই প্রাইভেট ল্যান্ড লাইন সারেন্ডার করা হচ্ছে।
বিটিসিএল সারাদেশে সার্বজনীনভাবে ০২ কোডে ১১ ডিজিটের ভয়েস কল ফোন নম্বর চালু করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পুরনো নম্বর নতুন ১১ ডিজিটে রূপান্তরিত হয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকগণ। যিনি নতুন নম্বর পেয়েছেন তাকে ফোন করে জানানো হয়েছে। বিটিসিএলের গ্রাহকগণ নিজেরটি ছাড়া পরিচিতজন ও প্রতিষ্ঠানের নতুন ১১ ডিজিটের ফোন নম্বর জানতে পারছেন না। পূর্বে প্রতিটি এক্সচেঞ্জে কারও ফোন নম্বর জানতে ১৭ লোকাল ইনকোয়ারিতে এবং ফোনের অভিযোগ দিতে ১৮ কমপ্লেনে ফোন করলে অপারেটর জানিয়ে দিতেন। এখন এই নম্বরও ১১ ডিজিটের হয়েছে। যা অনেক গ্রাহক জানেন না।
জরুরি পরিষেবা ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, থানা, বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নতুন ১১ ডিজিটের ফোন নম্বর জানানো হয়নি। যারা ভুক্তভোগী তাদের অনেকে যাও বিটিসিএলের ফোন রাখার চিন্তা করতেন তারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ইন্টারনেটসহ অনেক সূযোগ-সুবিধার প্রচার করার পরও গ্রাহকগণ আগ্রহী হচ্ছেন না।
সাধারণ গ্রাহক পরিচিতজনের নতুন ১১ ডিজিটের নম্বর কি ভাবে জানবেন এই বিষয়ে কথা হয় বিটিসিএলের একজন প্রকৌশলীর সঙ্গে। তিনি জানান বিটিসিএলের একটি ডেটাবেজ নম্বর ইনফরমেশন পোর্টাল চালু হয়েছে। ইংরেজিতে নম্বর.বিটিসিএল.জিওভি.বিডি টাইপ করে সার্চ দিলে একটি পেজ আসবে। যেখানে কোনো গ্রাহকের কোডসহ পুরনো নম্বর দিলে নতুন নম্বর দেখা যাবে। এই সাইটে গিয়ে দেখা যায় বেশিরভাগ নম্বর আপডেট করা হয়নি।
বিটিসিএল জানায়, সারাদেশে শক্তিশালী বিস্তৃত অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের আওতায় জেলা পর্যায় থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ও ভিপিএন সেবা চালু করেছে। এ ছাড়াও ইন্টারনেটে দ্রুত গতির সেবার ফাইবার অপটিক্যালে গিগাবাইট প্যাসিভ অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক (জিপিওএন) চালু করা হয়েছে।

গ্রাহক ঘরে বসে বিটিসিএলের ওয়েস সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে দ্রুত ইন্টারনেটের এই সংযোগে নিতে পারেন। কর্তৃপক্ষ ঘরে গিয়ে সংযোগে দেবে। বিটিসিএল শীঘ্রই ট্রিপল প্লে সার্ভিস (ইন্টারনেটের সঙ্গে আইপিটিভি বা লাইভটিভি সার্ভার চালু করবে। উন্নত প্রযুক্তির এই বিষয়গুলো অনেকেই জানেন না।

×