ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শুরু বৃহস্পতিবার

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শুরু বৃহস্পতিবার

রোহিঙ্গা

ছয় থেকে আটজন রোহিঙ্গা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের প্রথম দল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়তে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন একথা জানান। এছাড়া ইউরোপের দেশ রোমানিয়াতে আগামী বছর এক লাখ শ্রমিকের কার্যাদেশ এসেছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা অনুযায়ী রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস বাংলাদেশে আসেন গত ৩ ডিসেম্বর। পরদিনই তিনি দুইদিনের সফরে কক্সবাজারের উখিয়া ও ভাষানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি নির্যাতিত, ভাসমান, এতিম এবং নিহত রোহিঙ্গাদের পরিবারের সদস্যদের মত বিনিময় করেন। একইসঙ্গে স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্টির সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। এছাড়া জাতিসংঘ, সেখানে কার্যরত বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস বলেন, মিয়ানমারের গণহত্যার শিকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে পুনর্বাসনের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যদিও রোহিঙ্গা এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ চায় রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই সর্বোচ্চ সমাধান। তাদের যথাযথ মর্যাদা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রত্যাবাসনই সবচেয়ে ভালো পন্থা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি সম্ভব নয়। তাই বিকল্প হিসেবে এখন তাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। বাইডেন সরকারের  যুক্তরাষ্ট্রে রিফিউজি পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের কাজ এগিয়ে চলছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভাসমান ও ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের শুরুতে পুনবার্সনের চেষ্টা চলছে। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রাইলট প্রকল্প হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করতে চায় সেই দেশের সরকার। তবে ঠিক কতো রোহিঙ্গা সেখানে পুনর্বাসন করা হবে সেটি নির্ধারিত না হলেও ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো রোহিঙ্গা সেখানে পুনর্বাসিত হবে বলে আলোচনা হয়েছে। 

ড. এ কে মোমেন বলেন, মার্কিন পররাষ্টমন্ত্রীকে প্রতিবছর এক লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে সেখানে পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়েছিল। সংখ্যা কম হলেও প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়া ইতিবাচক। ড. মোমেন বলেন, আসামে দুই দিনের সফরে সেখানকার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক  হয়েছে। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশের কাস্টমসে অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করছেন। এছাড়া গোহাটি-সিলেট ও ঢাকা রুটে সরাসরি বিমান চলাচলের বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোমানিয়া বাংলাদেশে নির্মাণ খাতে আগামী বছরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নেবে। চলতি বছরেও সেখানে ১৪ হাজার শ্রমিক ভিসা পেয়েছে। ভিসা সহজের জন্য আগামী বছরেও রোমানিয়া অস্থায়ী কনস্যুলেট অফিস খুলবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঘিরে আশঙ্কা মিডিয়ার সৃষ্টি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার কোনো কিছুতেই ভয় পায় না। জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। দেশটি রুটিন ওয়ার্ক হিসেবেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দেশটি নিজেই আর্থিক দুরাবস্থায় ভুগছে। 

১০ ডিসেম্বর ঘিরে কূটনীতিক পাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে না। কোন প্রয়োজন নেই।


 

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×