ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কান্ট্রি ডিরেক্টরের বৈঠক

উন্নয়ন প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলার দেবে এডিবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

উন্নয়ন প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলার দেবে এডিবি

উন্নয়ন প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলার দেবে এডিবি

চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে চলতি অর্থবছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে দুই বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পর দেশের বিদ্যুত ও জ্বালানি, বন্দর, সড়ক যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও সেবা খাতের বড় বড় প্রকল্পে  দেশী-বিদেশী যৌথ বিনিয়োগ করছে সরকার।
এডিবির এই ঋণে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এডিবির ঋণ পাওয়া গেলে ডলার সঙ্কটও কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যে কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এডিমন গিন্টিং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ওই সময় এডিবির ঋণের বিষয়টি আলোচনায় আসে। চলতি অর্থবছরের দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পে এ অর্থবছরে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা প্রকিয়াধীন আছে।

পরে এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়- চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশকে প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। চলতি অর্থবছরের মধ্যেই ঋণের টাকা বরাদ্দ হবে।  
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর ক্ষতিকর প্রভাব উত্তরণে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য এডিবির প্রশংসা করেন। এডিবি এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারকে ২৭ দশমিক ৫৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া এডিবি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রী এডিবিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এডিবিকে আরও উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশের জন্য এটা প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও এডিবির মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলা বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন পূরণে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা দক্ষ, যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছেন। ওই সময় এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে অন্যতম সেরা উদাহরণ স্থাপন করেছে। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর আগামী ২৬-৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এডিবি বোর্ডের ৫৫তম বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণে সম্মতি দেয়ায় অর্থমন্ত্রীকে অগ্রিম ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। আগামী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ও এডিবির সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপনের বিষয়েও আলোচনা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের নেয়া কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

এডিমন গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এডিবির দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং এডিবি বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এ দেশের গ্রামীণ ও নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এডিবি। বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি প্রধানত বিদ্যুত, শিক্ষা, পরিবহন, জ্বালানি, পানিসম্পদ, কৃষি, স্থানীয় সরকার, সুশাসন, আর্থিক এবং বেসরকারী খাতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

×