যানজটমুক্ত
স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর ঢাকার প্রবেশমুখে তীব্র যানজটের কারণে ঢেলে সাজানো হচ্ছে সড়ক ব্যবস্থাপনা। রাজধানীর যানজটের চাপ সামাল দিতে পদ্মা সেতু থেকে ঢাকা অভিমুখী প্রবেশপথের রাস্তার দুই ধারের ফুটপাথের দোকান পসরা বিশেষ করে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অংশের ফুটপাথ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এমনকি পদ্মা সেতুর দুই পাড় এলাকায় বিশেষ করে এক্সপ্রেসওয়েতেও ইতোমধ্যেই যানজট মোকাবেলা করে চলেছে পুলিশ প্রশাসন। অদূর ভবিষ্যতে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার দিকে দৃষ্টি রেখেই পরিকল্পনা করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। যানবাহন চলাচলের আধিক্যের কারণে যানজটের আশঙ্কা নিরসনকল্পে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সড়কপথে খুব সহজে দেশের দক্ষিণ জনপদে পৌঁছানোর দুয়ার খুলে গেছে। এতে রাজধানীর ওপর দিয়ে উভয়মুখী যানবাহনের চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এখনই যানজট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর রাজধানী ঢাকার পোস্তগোলা, জুরাইন, যাত্রাবাড়ী এবং পুরান ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে যা পুলিশের পক্ষে সামাল দেয়াটা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর যে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে তা দ্রুত নিরসন করতে নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আপাতত এ্যাড-হক সমাধান নিয়ে কাজ করছে সেতু বিভাগ। যানজট নিরসনের জন্য পোস্তগোলা, জুরাইন, যাত্রাবাড়ী এবং বাবুবাজার এলাকায় অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করে যানজট নিরসনের কাজ করছে পুলিশ। তবে আগামী দুই থেকে তিন বছর মেয়াদের পরিকল্পনায় তৈরি করা হচ্ছে আউটার রিং রোড এবং ইনার সার্কুলার রুট নির্মাণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। অন্য জেলাগামী যানবাহনগুলোকে রাজধানীর প্রবেশমুখের আগে যাতে ডাইভার্ট করা যায় সেটাও পরিকল্পনায় আছে।
স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান ফর ঢাকার (আরএসটিপি) আওতায় রাজধানীতে যানজট কমাতে সমীক্ষা করা, নক্সা প্রণয়ন ইত্যাদির পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। করোনার কারণে গত দুই বছর এসব পরিকল্পনার কাজে হাত দিতে না পারার দরুন যে যানজটের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে তার মোকাবেলা করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু গত ২৫ জুন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরের দিন গত ২৬ জুন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার প্রতিটি প্রবেশমুখে বাড়তি চাপ দেখা গেছে। হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে দীর্ঘ সময় যানচলাচল ছিল স্থবির। এর প্রভাবে রাজধানীর মতিঝিল, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, চাঁনখারপুল, কাকরাইল, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, তেজগাঁও, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, বাড্ডা, রামপুরা ও মগবাজার ফ্লাইওভারে যানবাহনের বাড়তি চাপ ছিল।
মাওয়া-পদ্মা সেতুগামী যানবাহনের চাপ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে ও নিচে। যানবাহনের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। ঢাকার বাইরে থেকে আগের চেয়ে বেশি গাড়ি ঢুকছে। বেশিরভাগ ব্যক্তিগত গাড়ি। আগে এত গাড়ি ঢাকায় ঢুকত না, এখন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আসতেছে। ২১টি জেলার মাওয়া রুট ব্যবহারকারী বাসসহ যানবাহনগুলো এতদিন ফেরিতে পারাপার হতো।
এখন বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে যানবাহন আসছে কেরানীগঞ্জ থেকে বুড়িগঙ্গা সেতু আর বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে ঢুকছে ঢাকায়। একই পথে ঢাকা থেকে যানবাহন ছুটছে পদ্মা সেতুর দিকে। কদমতলী ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক পীযূষ কুমার মালো বলেন, চুনকুটিয়ায় হাইওয়ে সড়ক দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে নামা ও ওঠার যে লেইন আছে তা থেকে প্রচুর গাড়ি ওই লেন ধরে যাওয়া-আসা করেছে। এমনকি পোস্তগোলার বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে যাত্রাবাড়ী আসতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে।
রাজধানীর গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া এলাকায় দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর গাড়ির চাপ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। মানুষও রাস্তায় নেমেছে প্রচুর। আগের চেয়ে এখন ডাবল কাজ করতে হচ্ছে। আগে যে গাড়িগুলো মাওয়া ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আসত এখন ওপারের গাড়ি সরাসরি ঢাকায় ঢুকছে। আবার অনেকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে বাড়ি যাবেন বলে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন তারা এখন ঈদের মতো বাড়ি যাচ্ছেন। তাই রাস্তায় প্রচ- চাপ রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আসা কিছু গাড়ি ঢাকায় ঢুকছে, কিছু ফ্লাইওভার ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম রোডের দিকে চলে যাচ্ছে। অফিস আদালত খোলার সময়টায় সেতু হয়ে আসা গাড়ি বাড়ায় চাপ বেশি মনে হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। অনেক গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করবে আবার বের হবে, সেখানে ঢাকায় চাপ একটু হবেই, সেটা মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করাসহ পরিকল্পনা করে এ্যাড-হক ভিত্তিতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, পদ্মা সেতুর দুই পাড়েই যানজট, ভোগান্তি, দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু হওয়ার পর পদ্মা সেতু ব্যবহারকারী যানবাহন ও যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনগুলোকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, যা টোল আদায়ে চরম অব্যবস্থাপনার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বগাইল টোল প্লাজাতেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে, ধলেশ্বরী ও বগাইল টোল প্লাজা, বগাইল টোল প্লাজা এলাকাতেও টোল আদায়ে সমস্যা না হওয়ায় ভোগান্তি ও দুর্ভোগ শুরু হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে একটি বড় বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারে নির্দিষ্ট হারে টোল দিতে গিয়ে আপাতত একটু সমস্যা ও ভোগান্তি হচ্ছে, যা সাময়িক, এটা থাকবে না।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এখন যেসব যাত্রী বা পণ্যবাহী গাড়ি শিমুলিয়া-বাংলাবাজার এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া হয়ে দক্ষিণের বিভিন্ন গন্তব্যে যায়, সেসব যানবাহন সেতু দিয়ে পদ্মা পার হচ্ছে, তাতে কমে আসছে যাত্রার সময়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পণ্যবাহী যানবাহনের একটা অংশ হতে যাচ্ছে ভারতের। দেশটির পশ্চিমাংশ থেকে পূর্বাংশে পণ্য পরিবহন হতে যাচ্ছে এই পথে। এডিবির ধারণা অনুযায়ী, শুরুর দিকে প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও, পরে তা আরও বাড়বে।
এমনকি যানবাহন চলাচলের সংখ্যা ৭৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ বা ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে সরাসরি সড়ক পথে দক্ষিণবঙ্গে যেতে হলে ঢাকার ওপর দিয়েই পদ্মা সেতুতে উঠতে হচ্ছে। আবার ফিরতি পথেও সেসব গাড়িকে রাজধানী পার হতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম বা সিলেটগামী যানবাহনও ঢাকার যাত্রাবাড়ী হয়েই যাচ্ছে। ঢাকাকে এড়িয়ে যাওয়ার পথ না থাকায় পুরো চাপ পড়ছে রাজধানীর ওপর, যদিও ঢাকায় তাদের হয়তো থামার প্রয়োজনই হতো না বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন পদ্মা নদী পার হতে হতো ফেরিতে। তাতে অনেক সময়ক্ষেপণ হতো। ফলে এক সঙ্গে অনেক গাড়ি ঢাকায় প্রবেশের সুযোগ ছিল না। কিন্তু সেতু চালু হওয়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের গাড়ি দ্রুতই ঢাকা চলে আসছে। পদ্মা সেতু থেকে নেমে বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার জন্য রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে ঢাকার সড়কগুলোকেই। একইভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঢাকার ওপর দিয়েই পদ্মা সেতুর দিকে যাচ্ছে গাড়ি।
তাতে ঢাকার প্রবেশ পথ, বিশেষ করে বাবু বাজার ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জগামী রাস্তা, পোস্তগোলা থেকে নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার রাস্তায় যানজট বাড়ছে। এমনিতেই নিত্যদিনের যানজট সামলাতেই যেখানে ঢাকা হিমশিম খাচ্ছে, রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে যেখানে প্রায়ই জট লেগে থাকছে, বাড়তি গাড়ি সেখানে সেতুতে পৌঁছতে দীর্ঘ সময়ের দুর্ভোগ, ভোগান্তি তো পোহাতে হবেই।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামছুল হক বলেছেন, বর্তমান অবকাঠামোর মধ্যে এর কোন সমাধান তিনি দেখছেন না। যে কোন ব্রডব্যান্ড দিয়ে কানেকশন দিলে ক্যাপিটালে প্রবেশের জন্য লিংক রোড দিয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয়ার সুযোগ থাকে। আমরা দেখছি যে সময়টা ফেরির জন্য পদ্মায় ব্যয় হতো, সেই সময়টা এখন যাবে ঢাকায়। দুদিন আগেও আমি ফ্লাইওভারে ৪০-৪৫ মিনিট বসেছিলাম। এখন নতুন যে ট্রাফিক ফ্লো হবে, সেটার চাপ নেয়ার মতো সক্ষমতা নেই।
ঢাকার যানজট সামলাতে ব্যর্থ হলে পদ্মা সেতুর সুফল অনেক ক্ষেত্রে নষ্ট হতে পারে বলেও সতর্ক করলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপক। লোকাল উপযোগিতা তৈরি হলেও সম্পূরক সার্বিক অর্থনৈতিক বেনিফিট যেটা, সেটা কম হবে। এখন ঢাকায় অতিরিক্ত যানজট তৈরি হওয়ার নতুন এলিমেন্ট হলো, রিং রোড নেই, বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। এই ফসল সম্পূর্ণ ঘরে তুলে আনতে পারব না।
ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য ২০০৪ সালে সরকারের একটি মহাপরিকল্পনায় (এসপিটি) নগরীকে ঘিরে চক্রাকার পথ তৈরির সুপারিশ করা হয়েছিল। পরে ২০১৫ সালে সংশোধিত এসটিপিতেও (আরএসটিপি) রাজধানীর চারদিকে সার্কুলার রোড করার সুপারিশ করা হয়। ওই পরিকল্পনা নিয়ে ২০১৫ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সেই কাজ শেষ হলেও নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। অথচ এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরকে এড়িয়ে উত্তর-দক্ষিণের জেলাগুলোর চলাচলের একটি পথ তৈরি হতে পারত।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পরিবহন বিশেষজ্ঞ হাদীউজ্জামান বলেছেন, আরএসটিপিতে ইনার সার্কুলার রুট ছিল অগ্রাধিকার প্রকল্প। সেখানে আটটি রেডিয়াল সড়কের কথা আছে, যার একটি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। এ সড়ক তৈরি হয়েছে পদ্মা সেতুর ‘ফরওয়ার্ড লিঙ্ক’ হিসেবে। ‘ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্ক’ হিসেবে ইনার সার্কুলার রোড হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। তিনি বলেছেন, পদ্মায় ফেরি পার হয়ে এতদিন ঢাকার দিকে গাড়ি আসত ধাপে ধাপে। এখন সেতু হওয়ায় গাড়ি ঢাকায় আসবে খুব দ্রুত, সংখ্যাও বেশি হবে। এবার ঢাকা থেকেও একইভাবে বের হতে চাইবে। তাতে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা পড়বে উভমুখী সঙ্কটে।
ইনার সার্কুলার রুটের গাবতলী সোয়ারিঘাট হয়ে কেরানীগঞ্জের সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ অগ্রাধিকার দিয়ে করে ফেলা উচিত। বিদেশী অর্থায়ন না পেলে প্রয়োজনে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে করতে হবে, এটা করা জরুরী বলে মনে করেন এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রকল্প অনুযায়ী কাজ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। যেহেতু পদ্মা সেতু ২৫ জুন চালু হয়েছে সেই হিসেবে ট্রাফিকের অগ্রাধিকার বিবেচনায় আর্থিক সক্ষমতার মধ্যে ইন্টারমিডিয়েট ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, পদ্মা সেতুর পাশাপাশি ডাইভারসানের জন্য আলাদা প্রজেক্ট নিয়ে থাকলেও দৃশ্যমান কিছু হয়নি। এখানে আলাদা রিং রোড, ডাইভারশন রোড, এমনকি পদ্মা সেতু থেকে গাড়িগুলো ঢাকায় প্রবেশ না করে অন্য পথ দিয়ে প্রবেশের পরিকল্পনা নিতে হবে। সেখানে আমাদের পুলিশ তখন দায়িত্ব পালন করছে। যতটুকু রাস্তা আছে সেটাতে আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করছি। যখন রাস্তা বাড়বে, তখন আমাদের দায়িত্ব বাড়বে। ঢাকায় নতুন করে পরিকল্পনা নেয়ার তেমন কিছু নেই। ঢাকার প্রবেশ মুখগুলোতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা তৎপর আছেই।
৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু স্বপ্নের পদ্মা নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এতে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলসহ ৪১ জেলার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন প্রতিদিন যানবাহন চলাচলের সংখ্যা আনুমানিক ২৫ হাজারে উন্নীত হচ্ছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে প্রতিদিন ৪৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের সংখ্যায় উন্নীত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। পদ্মা সেতু যানবাহনের জন্য খুলে দেয়ার ফলে নদী পারাপারে অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় হচ্ছে, জীবনের ঝুঁকিও কমে আসছে ঠিকই। কিন্তু রাজধানীতে তুলনামূলক গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে কোন রাস্তায় কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে, সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন। রাজধানীতে প্রবেশের রাস্তাগুলোতে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষা, সুপারিশ ও আশু করণীয় নিয়ে সরকার যে কর্মপরিকল্পনা করছে তার বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে যাতায়াতের সময় কমিয়ে দিচ্ছে বটে। কিন্তু এই সেতু চালু হওয়ার পর যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হতে পারে বলেও যে শঙ্কা রয়েছে তা ক্রমেই বাস্তবতার মুখ দেখতে যাচ্ছে। সেতুটি উদ্বোধনের পর থেকে কয়েক বছরের মধ্যে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে এক্সপ্রেসওয়ের সংক্ষিপ্ত রুটের কারণে ঢাকা-আরিচা রুট ৪০ শতাংশ আকর্ষণ হারাবে। এর ফলে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মসৃণ যাত্রার পর অভ্যন্তরীণ যানবাহনগুলো রাজধানীর দুটি প্রবেশপথ- যাত্রাবাড়ী ও বাবুবাজারে আটকে থাকবে। যার ফলে এই রুটে ভ্রমণে অতিরিক্ত সময় লেগে যাবে।
পরিকল্পনা ॥ রাজধানীর যানজট এড়াতে একটি আউটার রিং রোডের পরিকল্পনা করেছে সরকার। যেখানে থেকে অন্য জেলাগামী যানবাহনগুলোকে রাজধানীর প্রবেশমুখের আগে ডাইভার্ট করা যায়। স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান ফর ঢাকার (আরএসটিপি) আওতায় রাজধানীতে যানজট কমাতে পদ্মা সেতু থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বাইপাস হিসেবে রিং রোডের দক্ষিণ অংশের উন্নয়ন করা ছিল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তবে এই সড়কটির নির্মাণকাজ এখনও শুরু হয়নি। সরকার সবেমাত্র এই সড়কটির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ করে একটি নক্সা প্রণয়ন করেছে। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ নতুন রাস্তা হতে যাচ্ছে তাই কর্তৃপক্ষকে আগে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। জমি প্রস্তুত হলেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
দীর্ঘ ৪৮ কিলোমিটার রাস্তাই সমাধান ॥ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত ৪৮ কিলোমিটার সড়কটি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে শুরু হয়ে কেরানীগঞ্জের কালাকান্দিতে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে মিলিত হবে। কলাকান্দি থেকে এটি সৈয়দপুর ও মদনপুরে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর দিকে যাবে, যা এন৫, এন৮ এবং এন১-কে সংযুক্ত করবে। পদ্মা সেতু থেকে নামার পর অন্য জেলাগামী যানবাহনগুলো এসব সড়কে গেলে তাদের আর রাজধানীতে প্রবেশ করা লাগবে না। ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার রাস্তা তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু থেকে মদনপুর পর্যন্ত আগে থেকেই আছে, তবে রাস্তাটির আরও উন্নয়নের প্রয়োজন। নতুন ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি হেমায়েতপুর থেকে কালাকান্দি হয়ে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু পর্যন্ত চলবে। এই ৩৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হবে। এদিকে মদনপুর থেকে একটি ঢাকা বাইপাস সড়ক রয়েছে যা গাজীপুরের কোড্ডা পর্যন্ত যায়, এই সড়কটি আউটার রিং রোডের একটি অংশ এবং এই চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে চলছে। রিং রোডের আরেকটি অংশ হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর থেকে বাইপাইল থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত যাবে, এটিও রিং রোডের একটি অংশ যা আগে থেকেই আছে। সুতরাং, আউটার রিং রোডের ১৩২ কিলোমিটারের মধ্যে, শহরের চারপাশে ট্রাফিক ডাইভার্ট করার জন্য আমাদের মাত্র ৪৮ কিলোমিটার নির্মাণ এবং উন্নয়ন করতে হবে। নতুন ৩৬ কিলোমিটার রাস্তাটি জাপান সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে নির্মাণ করবে। প্রথমে কলাকান্দি থেকে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে এবং বাকি অংশ পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করা হবে। শীতলক্ষ্যা থেকে মদনপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার বিদ্যমান অংশের উন্নয়ন করবে আরএইচডি। অন্যদিকে, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নিরাণ কাজ শেষ হতে আরও ছয় মাস সময় লাগতে পারে। ব্রিজ থেকে কোড্ডা পর্যন্ত রাস্তা তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই চলছে। যা শেষ হতে আরও তিন বছর লাগবে। আউটার রিং রোডের সামগ্রিক দক্ষিণ অংশে ভূমি মালিকদের জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণসহ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাজেটের মধ্যে ১১ হাজার কোটি টাকা নতুন রাস্তা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হবে এবং আরএইচডি ১২ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়নে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।ডবল ফ্লাইওভার এবং লুপসহ মদনপুরে একটি বিশাল মোড় থাকবে।
দুই বছরের মধ্যে শুরু হতে পারে নতুন সড়ক নির্মাণ কাজ ॥ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উন্নয়ণ কাজ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে জাপানী প্রকৌশলীরা পরিকল্পনাটি যাচাই-বাছাই করছেন। শীঘ্রই জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই প্রক্রিয়া চলমান থাকাকালীন, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জকে সংযোগকারী মুক্তারপুর সেতুর পাশে জাপান সেখানে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। সরকার প্রাথমিকভাবে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুই বছর সময় লাগবে এবং রাস্তা নির্মাণে আরও দুই বছর সময় লাগবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সরকার একটি এ্যাড-হক সমাধান নিয়ে কাজ করছে ॥ যেহেতু আউটার রিং রোডের দক্ষিণ অংশের নির্মাণ কাজ শেষ করতে বিলম্ব হবে বিধায় সরকার এখন পোস্তগোলা-চাষারা এবং গাবতলী-সদরঘাট সড়কসহ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আরও ভালো অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কংয়ের জন্য বিদ্যমান কিছু রাস্তার উন্নয়নে মনোনিবেশ করা হচ্ছে। এ সংযোগে গাবতলী সেতুকে আট লেনে উন্নীত করা হবে। এটি গ্রিডলকগুলোকে সহজ করতে সাহায্য করবে কারণ যানবাহনগুলোকে সেখানে ঘুরিয়ে দেয়া যেতে পারে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবি। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রাবাড়ী থেকে মূল যানজট শুরু হবে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ইকুরিয়া থেকে যান চলাচল করবে পোস্তগোলা ও বাবুবাজারে। গাবতলীতে যানবাহন চলাচলের জন্য বাবুবাজারের সড়ক ও ছোট ব্রিজগুলো মেরামত করা হবে। পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে চাষাড়া পর্যন্ত রাস্তা ও সংস্কার করা হবে। যাত্রাবাড়ীর সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রামমুখী রাস্তা ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। বাবুবাজার সেতুটি শহরের পশ্চিম দিকে গাবতলী, ধানম-ি ও কল্যাণপুরে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হবে। সেতু থেকে রাস্তা প্রশস্ত করা হবে। সব সবজি বাজার ও বাদামতলী ফলের বাজার অন্যত্র স্থানান্তর করা হতে পারে। এছাড়াও কেরানীগঞ্জে স্থানীয় রাস্তা আছে যেগুলো উন্নত করা হবে যাতে বসিলা দিয়েও যানবাহন চলাচল করতে পারে।
পদ্ম সেতু চালুর পর যানজটের সমাধানের পরিকল্পনা ॥ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হয়েছে। যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দেয়ার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যাতায়াত ও গাড়ির গতি ঠিক রাখতে রাস্তায় সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে। মাওয়া পার হওয়ার পর যানবাহনগুলো যাতে স্বল্প সময়ে রাজধানীতে ঢুকতে পারে, টার্মিনালে পৌঁছাতে পারে, যেন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। টার্মিনালগুলোতে ধারণক্ষমতা পর্যালোচনা করে গাড়ির সংখ্যা পর্যালোচনার পাশাপাশি কী ধরনের বাড়তি গাড়ির চাপ হতে পারে, সে বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। সব বিষয় মাথায় রেখেই গাড়ির চাপ সামলে কিভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়, গাড়িগুলোর আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হয়, সে বিষয়ে পরিকল্পনা এবং কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যে পরিকল্পনা তৈরি করেছে তাতে রাজধানীতে ঢোকার জন্য মূলত দুটি রাস্তা রয়েছে, যার একটি বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে এবং অন্যটি শ্যামপুর জুরাইন হয়ে। বর্তমানে সে সব রাস্তা দিয়ে কোন্ ধরনের যানবাহন চলাচল করছে, সে বিষয়ে সার্ভে করা হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফেরি পারাপারের কোন ঝামেলা না থাকার কারণে গাড়িগুলো মাওয়া হয়ে রাজধানীতে চলে আসতে পারছে। যেসব রুট দিয়ে গাড়ি রাজধানীতে প্রবেশ করছে কিংবা রাজধানী থেকে বের হচ্ছে, সেসব রুটে যেন কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়েও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার কারণে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে ও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। যে সব রোড দিয়ে গাড়ি চলাচল বেশি হয়, সে সব রোডের দিকে বেশি নজর দেয়া হচ্ছে। রাস্তাগুলোর পয়েন্ট-টু-পয়েন্টে ভিত্তিক পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে আসা গাড়িগুলোর রাতে ঢাকায় ঢোকার এন্ট্রি পয়েন্ট ফ্রি রাখা গেলে যানজট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। কোন গাড়ির যেন ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ধীর গতির এবং যাত্রী ওঠাতে ও নামাতে না পারে সে বিষয়গুলো নজরে রেখেই কাজ করার পরও যানজটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে অদূর ভবিষ্যতে ইনার রিং রোড, আউটার রিং রোড, ডাইভারশন ইত্যাদির পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হলে যানজট তো হবেই না, রাজধানী ঢাকার যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।