ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর দুদিনের উৎসবের সমাপ্তি

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৫ অক্টোবর ২০২০

খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর দুদিনের উৎসবের সমাপ্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর শিল্প-সংস্কৃতিচর্চার তীর্থকেন্দ্র সেগুন বাগিচার শিল্পকলা একাডেমি। মহামারীর কারণে সাত মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার থেকে আবার খুলেছে একাডেমি। নাট্যচর্চার প্রাণকেন্দ্রটিতে এখন বইছে স্বস্তির সুবাতাস। নাটকের মহড়া থেকে চলছে নাট্য প্রদর্শনী। সেই সুবাদে খুলে দেয়ার দিনটি থেকেই শুরু হয় খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠী আয়োজিত দুদিনব্যাপী প্রেমাঞ্জলি অনুষ্ঠান। নাট্যদলটির প্রতিষ্ঠাতা এ কে এ কবীর স্মরণে অনুষ্ঠিত উৎসবের শেষ দিন ছিল শনিবার। এদিনের আয়োজনে মঞ্চস্থ হয়েছে চারটি নাট্যদলের নাটক। স্বল্প ব্যয়ে, স্বল্প সময়ের ধারণাকে উপজীব্য করে পরিবেশিত হয়েছে প্রযোজনাগুলো। উৎসবের সমাপনী সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় প্রাচ্যনাটের প্রয়োজনা ‘ফাউস্ট অথবা অন্য কেউ’। নাটকটির ভাবনা এসেছে নাটকে অভিনয় করা ছয় অভিনয়শিল্পীর মাধ্যমে। তারা হলেন তানজি কুন, চেতনা রহমান ভাষা, প্রজ্ঞা তাসনুভা রুবাইয়াৎ, গোপী দেবনাথ ও ফয়সাল ইবনে মিজান (রাতুল)। নাটকের ঘটনাপ্রবাহ উঠে এসেছে মানুষের স্বার্থপরতা ও হানাহানির চিত্র। ¯্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতায় যাদের শ্রেষ্ঠতম হবার কথা, তারা নিয়ামক হয়ে উঠল যত ধ্বংসযজ্ঞ, যুদ্ধ আর হাহাকারের। মানুষ ভুল পথে চলে যায় ঠিকই, কিন্তু কোন এক সময় ভুল বুঝতে পেরে আবার সঠিক পথেই ফিরে আসে। মেফিস্টোফিলিস ঈশ্বরকে চ্যালেঞ্জ করে বলে, ঈশ্বরের সবচেয়ে অনুগত বান্দাকেও তার আনুগত্যের পথ থেকে সরিয়ে দেয়া সম্ভব। কারণ মানুষ এমন এক সৃষ্টি, পশুত্বে যে পশুকেও হার মানায়! প্রকৃষ্ট জ্ঞানের অন্বেষণ ও ঈশ্বরের উপাসনায় নিবেদিত ফাউস্ট তার চারপাশের মানুষের বস্তুগত লোভ-লালসা আর স্বার্থপর জীবন-যাপনে অসুখী। কিন্তু সেও মনে মনে চায় সাফল্য, সম্পদ ও সুনাম। সর্বসুখের লোভে তাড়িত হয়ে মেফিস্টোফিলিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ফাউস্ট। যদিও চুক্তির পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, সেটা কেউ জানে না। আর এদিকে ঈশ্বর হয়তো আশা করে আছেন, ভুল পথে চলে যাওয়া মানুষেরা একদিন সঠিক পথে ফিরবেই...। আজকের এই পুঁজিবাদ, বিশ্বায়নের যুগে এভাবেই কতশত মেফিস্টোফিলিস তাদের সাজানো পরিকল্পনার জালে জড়িয়ে ফেলে ফাউস্ট, মার্গারেট, ওয়াগনার, মার্থা অথবা অন্য কাউকে। খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠী পরিবেশিত নাটকের শিরোনাম ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’। প্রযোজনাটির রচনা ও নির্দেশনায় এ কে এ কবীরের। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহীন, খোকন, জুয়েল, শুভ্র, আসাদ, রানু আরা, লিটু, মিঠু, বাসার, ইভা, বীথি, সহিফা ও ইব্রাহিম। মঞ্চস্থ হয় মৈত্রী থিয়েটারের নাটক ‘চা অথবা কফি’। রমানাথ রায়ের রচনায় প্রযোজনাটির নির্দেশনায় ছিলেন নিয়াজ্জ আহম্মেদ। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিয়াজ আহম্মেদ, হাফিজুর রহমান, সূচনা, এ্যানী, রাজু, লালন ও আভা। সর্বশেষ মঞ্চস্থ হয় উৎস নাট্যদলের নাটক ‘পতাকায় বঙ্গবন্ধু’। রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন ইমরান হোসেন ইমা। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ইমু, লিজা, নাহিদ, আপন, হেলাল, অপু ও অর্ক। উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার এ কে এ কবীরের এর লেখা গান, কবিতা ও নাটকের অংশবিশেষ পরিবেশিত হয়। এছাড়া স্মৃতিচারণের মাধ্যমে এ কে এ কবীরের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
×