ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৩৩৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে চার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

দেশে রাস্তা নির্মাণে মাস্টারপ্ল্যান করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

দেশে রাস্তা নির্মাণে মাস্টারপ্ল্যান করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী রাস্তা নির্মাণে মাস্টারপ্ল্যান করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে যত্রতত্র রাস্তা নির্মাণ বন্ধ হবে। বুধবার অনলাইনে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রকল্পের অস্বাভাবিক ব্যয় বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে অস্বাভাবিক ব্যয় হয়- এটা আপনি কোথায় পেয়েছেন? মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী অন্য একটা বিষয়ে অবজারভেশন রেখেছেন সেটা হচ্ছে, আপনারা রাস্তাঘাট তৈরিতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু রাস্তাগুলোর কোয়ালিটি মেনটেন করতে হবে। তিনি মেনটেনের দিকে নজর দিতে বলেছেন। নতুন রাস্তা করে আপনারা দেশের ফসলি জমি নষ্ট করে দিচ্ছেন। মুস্তফা কামাল বলেন, হয়ত তিন কিলোমিটার সেভ করতে গিয়ে পুরো রাস্তা ফসলি জমি দিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যটাকে আরও জোরদার বা অর্থবহ করার জন্য সারাদেশে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে। বর্তমানে দেশে কী পরিমাণ রাস্তা আছে, আর আগামী ১০, ২০ বা ৫০ বছরে কত রাস্তা করতে হবে এ মাস্টারপ্ল্যানে সেগুলো থাকবে। মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য আজকে কমিটির বৈঠক থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম বলেন, মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য একটি কমিটি করতে বলা হয়েছে। আমরা দেখি কীভাবে কী করা যায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পুরো সরকারের এ্যাক্টিভিটিজগুলো সমন্বয় করে। তাই এটার দায়িত্ব আমাদের ওপর পড়েছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অতিরিক্ত রাস্তা নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জমি সুরক্ষা করতে হবে। বেশি রাস্তা নির্মাণ করলে পানি চলাচলও বাধাগ্রস্ত হয়। বাড়ির পাশ দিয়ে রাস্তা নিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত রাস্তা নির্মাণ করা যাবে না। এই ধরনের মানসিকতার বাইরে আসতে হবে। ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চার ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন ॥ ৩৩৪ কোটি ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৩ টাকা ব্যয়ে চার ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এছাড়াও একটি বাতিল প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বুধবার অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২৩তম সভায় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। সভাশেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সভায় অনুমোদনের জন্য মোট চারটি প্রস্তাব এবং বাতিলের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদিত চারটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৩৩৪ কোটি ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৮০৪ টাকা এবং ঋণের পরিমাণ বিশ্বব্যাংক এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে ১০৫ কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৯ টাকা। অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাস্তবায়নাধীন ‘ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রোজেক্ট (ডিসিএনইউপি) প্রকল্পের জন্য পাঁচটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। পরামর্শ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- (১) দোহা ইঞ্জিনিয়ারিং কো. লিমিটেড (২) জাংগলিম আর্কিটেক্ট কো. লিমিটেড, কোরিয়া (৩) দেব কনসালটস লিমিটেড, বাংলাদেশ (৪) ডিজাইন প্ল্যানিং এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানিং লিমিটেড এবং (৫) তানিয়া করিম এন আর খান এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটসের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৪২ টাকা। তিনি বলেন, আজকের সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের দুটি প্রস্তাব ছিল। দুটি প্রস্তাবই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক এর কুষ্টিয়া শহরাংশ ৪-লেনে উন্নীতকরণসহ অবশিষ্টাংশ যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের পূর্ত কাজ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান জহির লিমিডেটকে দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৪১ কোটি ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৪ টাকা। সভায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অপর প্রস্তাবে ‘শরীয়তপুর (মনোহরবাজার)- ইব্রাহিমপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের পূর্ত কাজ সম্পাদনে একটি মাত্র দরপত্র জমা পড়ায় ক্রয় প্রস্তাবটি বাতিলের জন্য উত্থাপন করা হলে আমরা বাতিল করে দিয়েছি। আর নতুনভাবে ক্রয়কার্য পুনঃপ্রক্রিয়া করে নতুন প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। প্রস্তাবটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার ১০৭ টাকা। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের অধীন ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএপিএফসিএল) জন্য ৩০ হাজার মেট্রিকটন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক মুনতাজাত, কাতার থেকে ২৫ হাজার মে.টন (১০%+) ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৬১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৭ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
×