স্টাফ রিপোর্টার ॥ উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ডেটোনেটর, বিস্ফোরক, কমান্ডো চাকু, জিহাদী বইপত্র ও শক্তিশালী গ্রেনেড তৈরির উপকরণসহ পুরনো জেএমবির তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতারে করেছে র্যাব-২। গ্রেফতারকৃতরা ঢাকায় একজন পীরকে হত্যার জন্য গাজীপুর থেকে ঢাকায় এসে একত্রিত হয়েছিল। টার্গেটকৃত ওই পীরকে হত্যার জন্য কয়েক দফায় ছদ্মবেশে রেকি করেছিল গ্রেফতারকৃতরা। অভিযানকালে ৭ থেকে ৮ জন পালিয়ে গেছে। তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন বেগুনবাড়ি পোস্ট অফিস রোডের ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকা থেকে মোঃ মফিজুল ইসলাম ওরফে তুষার ওরফে তাওহীদ (২৯), মোঃ রকিবুল ইসলাম ওরফে রকিবুল মোল্লা (২৩) ও মোঃ ইলিয়াছ আহমেদকে (১৯) গ্রেফতার করে। অভিযানকালে ৭ থেকে ৮ জন পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য, জিহাদী বই, গ্রেনেড তৈরির বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, কমান্ডো চাকুসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার হয়।
বুধবার দুপুরে র্যাব-২ এর পরিচালক লে. কর্নেল মোঃ ইফতেখারুল মাবুদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তারা পুরনো জেএমবির অনুসারী। বিভিন্ন স্থানে নাশকতা চালানোর জন্য উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক মজুদ করেছিল। তাদের দৃষ্টিতে পীর ও ফকিররা ইসলামের আদর্শের পরিপন্থী। তাই তাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল এ গ্রুপটি। তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ঢাকার একটি পীরের মাজার। ওই পীরের আস্তানায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল তারা। সে মোতাবেক ছদ্মবেশে তারা আস্তানাটি রেকি করেছিল। গ্রেফতারকৃতদের গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা ২০ জন। এদের অধিকাংশই গাজীপুর এলাকার বাসিন্দা।
গত ২ বছর ধরে গ্রুপটি সক্রিয়। শুরুর দিকে এ গ্রুপের দলনেতা ছিল ইয়াছিন। ইয়াছিন গত বছরের ১৩ মার্চ র্যাব-১০ এর হাতে কয়েক সহযোগীসহ গ্রেফতার হয়। এরপর থেকে গ্রুপটির নেতৃত্ব দিচ্ছে সোহেব ওরফে সোয়াইব। সেই গ্রুপটি পরিচালনা করছে। তারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম, থ্রিমাসহ অন্যান্য স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে পারস্পারিক যোগাযোগ রাখে। পীর ছাড়াও গ্রুপটির অন্যতম টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাদের সমমনা অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। অভিযানের সময় কয়েকজন পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এই সেনা কর্মকর্তা বলছেন, জঙ্গীরা নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অনেক জঙ্গী গ্রেফতার ও নিহত হয়েছে। অনেক জঙ্গী আত্মপোগনে গেলেও তাদের তৎপরতা বন্ধ হয়নি। তারা বিভিন্ন স্থানে হামলার উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।