
প্রচণ্ড গরমে ঘেমে একাকার? মুখটা শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার? আপনি হয়তো বুঝতেও পারছেন না—আপনার শরীরে পানি কমে যাচ্ছে! এই পরিস্থিতিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। এটি শুধু অস্বস্তি নয়, অনেক সময় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে ৬০–৭০ শতাংশই পানি। এই পানির ভারসাম্য নষ্ট হলে শরীরের ভেতরের সব প্রক্রিয়াই বিঘ্নিত হয়। তাই পানিশূন্যতা শুরুতেই বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
কীভাবে বুঝবেন শরীরে পানি কমে গেছে?
1. পানির অভাব হলে শরীর নিজেই কিছু সতর্ক সংকেত দেয়। যেমন—
2. অস্বাভাবিক তৃষ্ণা: একবার পানি খেলেও বারবার তৃষ্ণা পাচ্ছে? সাবধান।
3. মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া: ঠোঁট ফাটে, জিভে আর্দ্রতা থাকে না।
4. ঘন ও গাঢ় রঙের প্রস্রাব: দিনে ৪-৫ বার প্রস্রাব হচ্ছে না বা প্রস্রাবের রং গাঢ়? পানি কম খাচ্ছেন।
5. চোখ বসে যাওয়া ও কালি পড়া: পানির অভাবে চোখ ফাঁপা ও ক্লান্ত দেখায়।
6. মাথা ঘোরা ও দুর্বল লাগা: রক্তচাপ পড়ে যায়, তাই হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরে।
7. ত্বকে টান ধরলে সহজে না ওঠা: শরীরের আর্দ্রতা কমে গেলে স্কিন টারগর কমে যায়।
8. মনোযোগে ঘাটতি ও মুড খারাপ: পানির অভাবে মস্তিষ্কে অক্সিজেন কমে যায়।
কারা বেশি ঝুঁকিতে?
🔹 শিশু ও বয়স্করা
🔹 গর্ভবতী নারীরা
🔹 যাঁরা গরমে বা রোদের নিচে বেশি সময় থাকেন
🔹 খেলোয়াড় ও ম্যানুয়াল শ্রমিকরা
🔹 যাঁদের ডায়রিয়া বা বমির সমস্যা হচ্ছে
প্রতিরোধ ও করণীয়
🔹 দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন
🔹 বেশি ঘাম হলে স্যালাইন খান
🔹 ফলের রস, ডাবের পানি, স্যুপ—এসব রাখুন ডায়েটে
🔹 ঘাম ঝরানোর পরপরই পানি খান
🔹 শিশুকে নিয়মিত তরল খাওয়ান
কখন হাসপাতালে যাবেন?
🔹 শিশু প্রস্রাব করছে না
🔹 বারবার বমি হলে
🔹 খুব বেশি দুর্বলতা
🔹 উচ্চ জ্বর হলে
🔹 বিভ্রান্তি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
পানিশূন্যতা অল্প থেকে শুরু হলেও সময়মতো চিকিৎসা না নিলে তা কিডনি, হার্ট এমনকি মস্তিষ্কের ক্ষতিও করতে পারে। তাই গরমকালে নিজের ও পরিবারের সবার পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
Mily