
ছবিঃ সংগৃহীত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি সামরিক যানে বোমা বিস্ফোরণে সাতজন সেনা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবারের এই হামলার জন্য পাকিস্তান সরাসরি ভারতকে দায়ী করেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলা চালিয়েছে। বিএলএ-কে ‘ভারতের মদদপুষ্ট গোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও পাকিস্তান সরকার এর পক্ষে কোনও সরাসরি প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। তবে ভারত ও বিএলএ— কেউই এ বিষয়ে এখনো মন্তব্য করেনি।
পাক সেনাবাহিনী জানায়, একটি নিরাপত্তা অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় সেনাবাহিনীর একটি কনভয়কে লক্ষ্য করে এই বোমা হামলা চালানো হয়। এতে আরও অন্তত পাঁচজন আহত হন, যাদের হেলিকপ্টারে করে কোয়েটার সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
২০২৫ সালের শুরু থেকে বেলুচিস্তান ও পাশের প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ২০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এর আগে মার্চ মাসে বিএলএ কুয়েটা থেকে পেশাওয়ারগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক করে, যেখানে ৪০০ এর বেশি যাত্রী ছিলেন। ওই হামলায় অন্তত ৩১ জন প্রাণ হারান।
এই ঘটনাগুলোর পটভূমিতে রয়েছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁও অঞ্চলে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি বন্দুক হামলা, যেখানে ২৫ জন ভারতীয় পর্যটক এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তান-সমর্থিত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশ বাণিজ্য স্থগিত করেছে, সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করেছে এবং একে অপরের নাগরিক ও কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ মঙ্গলবার দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে অংশ নেন। এ সময় দেশের সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া পাকিস্তান গত তিন দিনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে, আর ভারত বুধবার থেকে বিভিন্ন রাজ্যে বেসামরিক নিরাপত্তা মহড়া শুরু করেছে, যার মধ্যে সাইরেন বাজানো ও জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ার মহড়া অন্তর্ভুক্ত।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয় পক্ষকে সতর্ক করে বলেন, ‘এখন যুদ্ধ নয়, সংযমের সময়।’ তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
সূত্রঃ আল-জাজিরা
আরশি