ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হিম হিম বাতাসে ত্বকের যত্ন

শিউলী আহমেদ

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ৬ নভেম্বর ২০২২

হিম হিম বাতাসে ত্বকের যত্ন

.

হেমন্ত এসে গেছে। হেমন্তের সকালটা খুব মায়াবী হয়। আর হিম হিম মিষ্টি বাতাস বয় প্রকৃতিতে। হেমন্ত এসে জানিয়ে দেয় শীতের আগমনী বার্তা। কৃষাণ-কৃষাণীর মনে দুলতে থাকে নবান্ন উৎসবের আয়োজন। এই হিমেল হাওয়ার আবেশে দুলতে থাকা আনমনা মন নিজের যত্নের কথা ভুলে যায়। হঠাৎ যখন চামড়ায় টান পরে, তখন মনে হয় এখনি প্রয়োজন ত্বকের যত্ন...
শীতের এই আগমনী বার্তা সবার আগে জানতে পারে ত্বক। সকাল-সন্ধ্যায় হাত-মুখ ধোয়ার পর, গোসলের পর চামড়ায় টান লাগে। হাত-মুখের ত্বক কুচকে যায়। তবে আগে থেকে যত্ন নিলে ত্বকের এই সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাই অবহেলা না করে এখনি যত্ন নিন-
ত্বক পরিষ্কার রাখুন : এ সময় শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকে। ত্বকে ময়লা জমে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। তাই ঘরে এসেই ভালো করে ত্বক পরিষ্কার করুন। তবে অন্যান্য সময় ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে যেমন ২/৩ বার করে স্ক্রাব দিয়ে পরিষ্কার করতেন। এখন তা করা যাবে না। তার বদলে ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন।
ক্লিনজারের ব্যবহার : এখন সাবান এড়িয়ে চলুন। ঘরেই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ক্লিনজার তৈরি করে সংরক্ষণ করতে পারেন। মসুর ডাল, আতপ চাল আর কমলার শুকনো খোসা একসঙ্গে বেটে বা ব্লেন্ড করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে মুখে লাগিয়ে না শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পরে আলতো করে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়দার সঙ্গে কাঁচা দুধ ও লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। পরে ধুয়ে নিয়ে মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন : এ সময় রোদটা তীব্র হয়। তাই বাইরে যাওয়ার আগে ভালো মানের সানস্ক্রিন লাগিয়ে বের হবেন। এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আপনার ত্বক রক্ষা পাবে। ত্বকের ধরনের সঙ্গে মিল রেখে এসপিএফ-এর মাত্রা দেখে সানস্ক্রিন কিনুন। এসপিএফ- এর মাত্রা না মিললে রোদে পোড়া থেকে ত্বক রক্ষা পাবে না। শ্যামবর্ণ হলে এসপিএফ ২০ হলেই হবে। আর ফর্সা হলে ৩০। মুখ ধুয়ে ভালো করে মুছে আগে ময়েশ্চারাইজার দিন। তারপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তবে বাইরে বের হওয়ার অন্তত ২০-৩০ মি আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। না হয় কোনো কাজে আসবে না। ত্বক তৈলাক্ত হলে ওয়াটার বেসড, আর শুষ্ক হলে অয়েল বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন : এ সময় দরকার একটু ভারি ক্রিম যা অতিরিক্ত তেলতেলে না করেই আপনার ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করবে। কেনার সময় ক্রিম একটু হাতে ঘষে নিলেই বুঝতে পারবেন কোনটা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী।
ময়েশ্চারাইজার : এখন ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার খুব জরুরি। কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন গোসলের পানিতে মিশিয়ে সেই পানিতে গোসল করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। বাইরে থেকে ফেরার পর হাত-মুখ ধুয়ে হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
পায়ের যতেœ : হাত-মুখের যত্ন নিতে গিয়ে পায়ের যত্নটা আড়াল হয়ে যায়। শীতে অনেকেরই পা ফাটে বা খসখসে হয়ে যায়। এখন থেকেই পায়ের যত্ন নিলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। গোসলের পর পায়ের গোড়ালিতে সরিষার তেল/অলিভ অয়েল/গ্লিসারিন লাগাতে পারেন। অনেকে আঠালো ভাবের জন্য এসব লাগাতে চান না। ফলে পা রুক্ষ হয়ে যায়। তারা লোশনের সঙ্গে মিশিয়ে পায়ে লাগাতে পারেন। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর অন্তত আধা ঘণ্টা আগে পায়ে লোশন, ক্রিম বা অলিভ অয়েল লাগাবেন। তাতে ত্বক নরম থাকবে। যাদের গোড়ালি খসখসে হয়, চামড়া উঠে, তারা আগে থেকে যত্ন নেয়ার ফলে সেই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন। গোড়ালি ফাটার সমস্যাও কমে যাবে। পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যয়াম শরীর ও ত্বকের জন্য খুব উপকারী। আঁশ জাতীয় খাবার খাবেন। আর প্রচুর পানি পান করবেন।

 

×