ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় যে ৫টি সাধারণ ফল

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ২৮ জুলাই ২০২৫

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় যে ৫টি সাধারণ ফল

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হৃদরোগ। যদিও সবসময় এই রোগ প্রাণঘাতী না হলেও, কোটি কোটি মানুষ এর কারণে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। কিন্তু সচেতন জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন এনে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। এর মধ্যে ফল খাওয়া একটি কার্যকর উপায়, কারণ ফল ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর যা রক্তনালিকে সুস্থ রাখে, খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং প্রদাহ হ্রাস করে। নিচে এমন ৫টি ফলের কথা জানানো হলো, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে বিশেষ উপকারী:

১. আপেল
আপেল শুধু জনপ্রিয় নয়, বরং হৃদয়ের জন্যও দারুণ উপকারী। এতে রয়েছে পেকটিন ফাইবার, যা শরীরের ক্ষতিকর ‘এলডিএল’ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। এছাড়াও আপেলের ফ্ল্যাভোনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ রোধ করে ও রক্তনালিকে রক্ষা করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন আপেল খেলে করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, রক্তনালির কার্যকারিতা বাড়ে এবং ধমনীতে চর্বি জমা হওয়া রোধ হয়। আপেল স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যায়, আবার সালাদেও ব্যবহার করা যায়।

২. সাইট্রাস ফল
কমলা, লেবু, মালটা, গ্রেপফ্রুট ও লাইম জাতীয় সাইট্রাস ফল শুধু ভিটামিন সি নয়, বরং ফ্ল্যাভোনয়েড ও দ্রবণীয় ফাইবারে পরিপূর্ণ। এ উপাদানগুলো খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্তনালির সুস্থতা বজায় রাখে।

নিয়মিত সাইট্রাস ফল খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ধমনিতে চর্বি জমার ঝুঁকি কমে এবং প্রদাহ কমে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।

৩. বেরি
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি ইত্যাদি বেরিতে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা তাদের উজ্জ্বল রঙের উৎস এবং হৃদযন্ত্রের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।

বেরি নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরল কমে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং প্রদাহের মাত্রা কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, বেরির নির্যাস নয়, আসল ফল খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।

৪. ডালিম
ডালিমে থাকা পলিফেনলস নামক উদ্ভিদজাত উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, যা ধমনির প্রাচীর রক্ষা করে এবং রক্তপ্রবাহ উন্নত করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ডালিমের রস পান করলে রক্তচাপ কমে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এছাড়া এটি এলডিএল কোলেস্টেরলের অক্সিডেশন ঠেকায়, যা ধমনিতে ব্লকেজ হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

৫. আঙুর
গাঢ় রঙের আঙুরে রেসভারেট্রল ও ফ্ল্যাভোনয়েড নামে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা রক্তনালি শিথিল করে, প্রদাহ রোধ করে এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে।

আঙুর বা আঙুরের রস নিয়মিত গ্রহণ করলে রক্তচাপ ভালো থাকে, ধমনির স্বাস্থ্য উন্নত হয় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমে। গবেষণায় প্রমাণিত, আঙুরে থাকা রেসভারেট্রল হৃদযন্ত্র সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কেন এসব ফল হৃদরোগ প্রতিরোধে কাজ করে?

ফাইবার: কোলেস্টেরল কমায় ও হজম শক্তি বাড়ায়

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: রক্তনালির ক্ষতি করে এমন ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে

অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান: ধমনিতে প্রদাহ কমায়

পটাশিয়াম: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

ভিটামিন সি ও ই: ধমনির প্রাচীর রক্ষা করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে

সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া 

নোভা

×