ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

রাঙ্গাবালীতে নতুন ভবনের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

আ: রহিম গাজী, রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৯, ২৮ জুলাই ২০২৫

রাঙ্গাবালীতে নতুন ভবনের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

ছবিঃ সংগৃহীত

রাঙ্গাবালীর বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের ৪৪ নম্বর চরগঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ১৫০ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করছে পাঠদান। যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা—এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের।

স্থানীয় মেহেদী হাসান ও জহির হাওলাদার বলেন, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির ভবনটি নির্মিত হলেও ঠিকাদারের অবহেলায় বালু, ইট, রড লবণ পানি পেয়েছে। যার কারণে নির্মাণসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায় এবং সেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ভবনটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে ভবনটি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে, দরজা-জানালা ভেঙে গেছে, পিলার থেকে রড বেরিয়ে এসেছে, দেয়ালে ফাটল—সব মিলিয়ে পুরো স্কুল ভবন আজ এক আতঙ্কের নাম। কোথাও কোথাও মেঝেও দেবে গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে ক্লাস করছে, তেমনি শিক্ষকরাও প্রতিনিয়ত আতঙ্ক নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আমাদের বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবনের অনুমোদন হয়েছে। ২০২১ সালে এর কাজ শুরু হয়েছে, যা ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শেষ হয়নি।

স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সাহরিমা সুলতানা জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, আর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। শিক্ষক সংকট না থাকলেও শ্রেণিকক্ষ ও অবকাঠামোর ভয়াবহ সংকটে সুষ্ঠু পরিবেশে পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাঃ সাওদামনি জানায়, মাঝে মাঝে ছাদের পলেস্তারা খসে মাথায় পড়ে। ক্লাসরুমে উপর থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি পড়ে—আমাদের ভিজে ভিজে পড়ালেখা করতে হয়।

স্থানীয়দের দাবি, ৪৪ নম্বর চরগঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন ভবনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে শিশুদের জন্য নিরাপদ পাঠদান নিশ্চিত করা হোক।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ দাস বলেন, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ—বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভবনটির ঠিকাদার মোঃ শামীমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব দাশ পুরকায়স্থ বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এবং ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ফোন দিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবন ও নতুন ভবনের কাজের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

ইমরান

×