
ছবি: সংগৃহীত
মুখের ঘা একটি সাধারণ সমস্যা যা অত্যন্ত ব্যথাদায়ক হতে পারে এবং খাবার গ্রহণে অসুবিধা সৃষ্টি করে। স্টেরয়েড ক্রিম বা মাউথওয়াশ ব্যবহারের বদলে কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ এই বিষয়ে কিছু কার্যকর পরামর্শ দিয়েছে।
১. নারকেল তেল বা দুধ
কীভাবে ব্যবহার করবেন? নারকেল তেল বা দুধ মুখের ঘায়ে লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট রেখে দিন।
কীভাবে কাজ করে? নারকেলে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
২. মধু
কীভাবে ব্যবহার করবেন? সরাসরি ঘায়ে মধু লাগান দিনে ২-৩ বার।
কীভাবে কাজ করে? মধুতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও হিলিং প্রপার্টি, যা দ্রুত ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
৩. তুলসি পাতা
কীভাবে ব্যবহার করবেন? ২-৩টি তুলসি পাতা চিবিয়ে রস ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? তুলসির অ্যান্টিসেপটিক গুণ সংক্রমণ রোধ করে।
৪. এলোভেরা জেল
কীভাবে ব্যবহার করবেন? তাজা এলোভেরা জেল সরাসরি ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? এলোভেরার কুলিং ইফেক্ট ব্যথা কমায় এবং টিস্যু রিপেয়ার করে।
৫. লবণ পানির কুলি
কীভাবে ব্যবহার করবেন? এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে কুলি করুন।
কীভাবে কাজ করে? লবণ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ঘা শুকানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
৬. দারুচিনি পাউডার
কীভাবে ব্যবহার করবেন? এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? দারুচিনির অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
৭. ঠাণ্ডা দুধ বা দই
কীভাবে ব্যবহার করবেন? ঠাণ্ডা দুধ পান করুন বা দই মুখে রাখুন।
কীভাবে কাজ করে? দুগ্ধজাত পণ্যে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া মুখের pH ব্যালেন্স ঠিক রাখে।
৮. আমলকী বা ভিটামিন সি
কীভাবে ব্যবহার করবেন? আমলকীর রস বা ভিটামিন সি ট্যাবলেট চুষে খান।
কীভাবে কাজ করে? ইমিউনিটি বুস্ট করে এবং ঘা দ্রুত সারায়।
৯. লবঙ্গ তেল
কীভাবে ব্যবহার করবেন? কটন বাডে লবঙ্গ তেল লাগিয়ে ঘায়ে স্পর্শ করুন।
কীভাবে কাজ করে? লবঙ্গে থাকা ইউজেনল নামক উপাদান ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করে।
১০. হলুদ ও গোলাপ জল
কীভাবে ব্যবহার করবেন? হলুদ গুঁড়ো ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্যথা কমায়।
১১. পুদিনা পাতা
কীভাবে ব্যবহার করবেন? পুদিনা পাতা চিবিয়ে রস ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? পুদিনার মেন্টল প্রভাব জ্বালাপোড়া কমায়।
১২. বেকিং সোডা
কীভাবে ব্যবহার করবেন? বেকিং সোডা পানিতে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ঘায়ে লাগান।
কীভাবে কাজ করে? মুখের অ্যাসিডিটি কমিয়ে ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
যদি মুখের ঘা ২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, অথবা যদি এর সাথে অতিরিক্ত ব্যথা, জ্বর বা মুখ ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মনে রাখবেন: "প্রাকৃতিক উপায়ে চিকিৎসা করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম, কিন্তু সমস্যা গুরুতর হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।" বারবার মুখের ঘা হলে পুষ্টির অভাব (যেমন ভিটামিন B12, আয়রন) বা অন্যান্য অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
সাব্বির