
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান ব্যস্ত জীবনে ২৪ ঘণ্টা যেন অনেক সময়ই যথেষ্ট মনে হয় না। কাজ, যাতায়াত ও নানা দায়িত্বের ভিড়ে অনেক সময় একসঙ্গে থাকার সুযোগ হয় না। তবে সম্পর্ক মজবুত রাখতে দীর্ঘ সময় নয়, দরকার শুধু কিছু সচেতন অভ্যাস।
দম্পতি বিষয়ক একজন অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানীর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যারা সুখী সম্পর্ক বজায় রাখেন, তারা প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও কিছু ছোট ছোট কাজ করে থাকেন—যা অধিকাংশ দম্পতি ভুলেই যান। এবং এগুলোর জন্য আলাদা করে সময় বের করার দরকার পড়ে না; বরং এগুলোর মূল উপাদান হচ্ছে সচেতনতা ও অভ্যাস।
নিচে এমনই ৫টি বিষয় তুলে ধরা হলো:
১. দিনের শুরুতে একটি ছোট্ট যৌথ রুটিন গড়ে তোলা
সকালের সময়টা সাধারণত তাড়াহুড়ায় কেটে যায়—ঘড়ির অ্যালার্ম, কাজের সময়সীমা, আর বাসা ছাড়ার প্রস্তুতি। ফলে দুজন একসঙ্গে থাকার সময় বলতে গেলে বিছানায় ওঠা আর বিদায়ের আগের একটুখানি চুমু।
কিন্তু সুখী দম্পতিরা এ সময়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহার করেন। কেউ কেউ হয়তো একটু আগে ঘুম থেকে উঠে কিছু সময় আদর-ভালোবাসায় কাটান, কেউ বিছানা গুছাতে গুছাতে স্বপ্নের কথা বলেন, আবার কেউ কফি হাতে নিরবতায় পাশাপাশি বসেন।
মূল বিষয় হলো—তারা অন্তত কিছুটা সময় একসঙ্গে শুরু করেন। এটিই প্রতিদিনের স্টার্টিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে ঘনিষ্ঠতার।
২. দিনের মধ্যে একে অপরকে ভাবনায় রাখা
দিনের ব্যস্ততার মাঝে দীর্ঘ কথাবার্তার সুযোগ না থাকলেও, একজনকে জানানো—"তোমাকে মনে পড়ছে"—এই ছোট্ট বার্তাই অনেক বড় প্রভাব ফেলে।
সুখী দম্পতিরা মাঝেমধ্যেই একে অপরকে ছোট মেসেজ পাঠান, মজার মিম শেয়ার করেন বা অফিসের কোনো মজার ঘটনা বলেন—শুধু এটা জানানোর জন্য যে তারা একে অপরকে নিয়ে ভাবছেন। এতে করে সম্পর্কের উষ্ণতা বজায় থাকে।
৩. নিজেকে সময় দেওয়া—একসঙ্গে সময় কাটানোর আগে
দিনের সব চাপ বা মানসিক ক্লান্তি প্রায়ই সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে। তাই অনেকেই কাজের শেষে কয়েক মিনিট নিজের সঙ্গে একা সময় কাটান—হাঁটেন, একটু ব্যায়াম করেন কিংবা পছন্দের কিছু দেখেন। এই সময়টা ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে রিচার্জ করার জন্য।
এতে করে পরে সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো হয় আরও ধৈর্যশীল ও সজাগভাবে। একা সময় কাটানো অনেক সময় সম্পর্ককে আরও গভীর করে।
৪. প্রতিদিন একসঙ্গে নির্বিচারে সময় কাটানো
সন্ধ্যা বা রাতের বেলা প্রায়ই বিভিন্ন কাজে আলাদা হয়ে যায়—একজন হয়তো মোবাইল স্ক্রল করছেন, অন্যজন ঘর গোছাচ্ছেন।
কিন্তু যারা সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেন, তারা প্রতিদিন অন্তত একবার একসঙ্গে কিছু না কিছু করেন—হোক সেটা একসঙ্গে খাবার খাওয়া, ছোট্ট খেলা খেলা, বা প্রিয় কোনো অনুষ্ঠান দেখা।
এই সময়টা একান্তভাবে নিজেদের জন্য বরাদ্দ থাকে—সন্তান, মোবাইল বা অন্য দায়িত্ব থেকে দূরে।
৫. দিন শেষে সংক্ষিপ্ত মানসিক সংযোগ
প্রতিদিনের শেষে দম্পতিরা একে অপরকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কেমন আছো?”, “আজকের দিনটা কেমন গেলো?” কিংবা কখনো ছোট্ট কোনো দুঃখপ্রকাশ বা কৃতজ্ঞতার বার্তা দেন।
এটা কোনো জটিল আলোচনার সময় নয়, বরং একটি ছোট্ট চেক-ইন, যাতে ছোট সমস্যা জমে বড় না হয়ে যায়।
এই অভ্যাসটি সপ্তাহ শেষে জমে থাকা মানসিক দূরত্ব কমায় এবং সম্পর্ককে আরও গভীরভাবে দৃঢ় করে তোলে—ক্লান্তি ছাড়াই।
আবির