
ছবি: সংগৃহীত।
রক্ত ঘন হওয়া বা অতিরিক্ত পাতলা হওয়া—দু’টোই স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। অনেকেই রক্তের ঘনত্ব সম্পর্কে না জেনেই দিনের পর দিন শরীরের ভেতরে একটি নীরব বিপদ বয়ে নিয়ে চলছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, রক্ত বেশি ঘন হলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ে। আবার রক্ত অতিরিক্ত পাতলা হলে সামান্য আঘাতেই অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে, যা হতে পারে প্রাণঘাতী।
তাই আগেভাগেই বুঝে নেওয়া জরুরি—আপনার রক্ত ঘন না পাতলা, এবং কোন লক্ষণে আপনি সতর্ক হবেন।
রক্ত ঘন হলে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
- মাথা ভার লাগা বা ঘন ঘন মাথাব্যথা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- হাতে-পায়ে ঠান্ডা ভাব
- দম নেয়ার ক্ষেত্রে অস্বস্তি
- হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
- শরীরের ক্ষতস্থানে দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধা
রক্ত পাতলা হলে যেসব উপসর্গ দেখা যায়:
- সামান্য কেটে গেলেও রক্তপাত দীর্ঘস্থায়ী হয়
- নাক বা মাড়ি দিয়ে বারবার রক্ত পড়া
- চোখে বা শরীরে নীলচে দাগ পড়ে
- সহজেই শরীরে ক্ষতের চিহ্ন বা ফোলা ভাব
- গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তপাত
- ওষুধে প্রতিক্রিয়ায় অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভব করা
কেন রক্ত ঘন বা পাতলা হয়?
- শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন
- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
- থাইরয়েড সমস্যা
- অতিরিক্ত আয়রন বা ভিটামিন কে সাপ্লিমেন্ট
- নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- জেনেটিক বা জন্মগত সমস্যা
করণীয় কী?
- বছরে অন্তত একবার রক্ত পরীক্ষা (CBC, PT-INR) করান
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- নিজের ইচ্ছেমতো রক্ত পাতলানো ওষুধ গ্রহণ করবেন না
- ধূমপান, অ্যালকোহল ও প্রসেসড খাবার পরিহার করুন
- প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো সাপ্লিমেন্ট খাবেন না
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
- যদি রক্তপাত সহজে থামে না
- যদি মাথা ঘোরানো, দুর্বলতা বা বুক ধড়ফড়ানি দেখা দেয়
- শরীরে হঠাৎ অজানা দাগ পড়ে
- গর্ভাবস্থায় রক্তপাত বা ক্লটিং হলে
- পরিবারের কারও রক্ত জমাট বা রক্তপাতজনিত রোগের ইতিহাস থাকলে
রক্তের ঘনত্ব স্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। একে অবহেলা করা মানে নিজের অজান্তেই একটি নীরব রোগকে দাওয়াত দেওয়া। তাই লক্ষণগুলো বুঝে চিকিৎসা নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন, সচেতনতা ও সময়মতো পদক্ষেপই পারে জীবন বাঁচাতে।
নুসরাত