
ছবি: সংগৃহীত
অনেকেই স্বাস্থ্য উন্নয়নের আশায় নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্ট খান। হোক তা শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রোটিন পাউডার, বা ত্বক ও চুল ভালো রাখার জন্য মাল্টিভিটামিন। কিন্তু এই ছোট ছোট ট্যাবলেট ও গুঁড়োর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে যকৃত (লিভার) ও কিডনির জন্য মারাত্মক বিপদ। ভুলভাবে বা অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে শরীরের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিঃশব্দে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, যার পরিণাম হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা।
নিচে এমন পাঁচটি সাধারণ ভুল তুলে ধরা হলো, যেগুলোর মাধ্যমে অনেকেই অজান্তেই নিজেদের শরীরকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন:
১. ‘প্রাকৃতিক’ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ, কিন্তু মিথস্ক্রিয়া যাচাই না করা: কমফ্রি, কাভা, বা উচ্চমাত্রার গ্রিন টি এক্সট্র্যাক্টের মতো হারবাল সাপ্লিমেন্টগুলো প্রাকৃতিক বলেই নিরাপদ। এই ধারণা অনেকের। কিন্তু এগুলো যকৃতের জন্য বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত যখন অন্যান্য ওষুধ বা সাপ্লিমেন্টের সঙ্গে একসাথে নেওয়া হয়। এতে যকৃত অতিরিক্ত চাপে পড়ে এবং কিডনির উপরও পড়ে বাড়তি চাপ।
২. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার গ্রহণ: প্রোটিন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণে তৈরি হয় নাইট্রোজেন বর্জ্য, যেটা কিডনিকে ফিল্টার করতে হয়। স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির ক্ষেত্রেও দীর্ঘমেয়াদে এটি কিডনি কার্যকারিতার অবনতি ঘটাতে পারে। পানির পর্যাপ্ততা ছাড়া বেশি প্রোটিন গ্রহণ আরও ক্ষতিকর।
৩. একাধিক সাপ্লিমেন্টে একই উপাদান থাকা বুঝতে না পারা: অনেক মাল্টিভিটামিন বা ইমিউনিটি বুস্টারে ভিটামিন এ, আয়রন বা সেলেনিয়ামের মতো উপাদান থাকে। একাধিক সাপ্লিমেন্ট একসাথে নিলে এসব উপাদান মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যকৃতের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত আয়রন শরীরে জমে গিয়ে যকৃতের প্রদাহ বা ফাইব্রোসিস তৈরি করতে পারে।
৪. ফ্যাট বার্নার ও ‘ডিটক্স’ সাপ্লিমেন্টের উপর নির্ভরতা: ডিটক্স বা ওজন কমানোর সাপ্লিমেন্টে থাকা উপাদান যেমন ক্যাফেইন অ্যানহাইড্রাস, সাইনেফ্রিন বা ড্যান্ডেলিয়ন এক্সট্র্যাক্ট শরীরের পানির ভারসাম্য নষ্ট করে কিডনিকে ক্লান্ত করে তোলে। অনেক সময় এসব সাপ্লিমেন্ট যকৃতকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মুখে ঠেলে দেয়।
৫. বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যা উপেক্ষা করে নিজে নিজে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা থাকলে সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। যেমন: ক্রিয়েটিন কিডনির ক্ষতি বাড়াতে পারে, আর উচ্চমাত্রার ভিটামিন ডি বা ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর বা ক্যালসিফিকেশন তৈরি করতে পারে।
শহীদ