
ছবিঃ সংগৃহীত
আমরা সাধারণত হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা দেখেই হার্টের রোগকে বিচার করি। কিন্তু কার্ডিওলজিস্টদের মতে, আসল বিপদ লুকিয়ে আছে আপনার প্রতিদিনের অভ্যাসে। দেরিতে রাত জাগা, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, শরীরচর্চার অভাব বা অনিয়মিত খাবার — এ ধরনের অভ্যাস আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি নিঃশব্দে বাড়িয়ে দিতে পারে, তা আপনি যেকোনো বয়সের, লিঙ্গের বা বাহ্যিকভাবে সুস্থই হোন না কেন।
“অনেকেই মনে করেন, হার্টের রোগ কেবল বয়স্ক বা অসুস্থ দেখায় এমন মানুষদের হয়। কিন্তু বাস্তবে, দীর্ঘ সময় ধরে তৈরি হওয়া এই রোগ তরুণ, রোগা বা ‘সুস্থ-দেখানো’ মানুষের মধ্যেও হতে পারে। বংশগততা, স্ট্রেস এবং জীবনধারা — এই সবই বড় ভূমিকা রাখে। প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো উপায়,” বললেন ডা. বিক্রান্ত খেসে, কার্ডিওলজিস্ট, অ্যাপোলো ক্লিনিক, খারাদি।
কেজে সোমাইয়া হাসপাতাল ও রিসার্চ সেন্টারের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. নীতিন বোতের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ৫০ বছরের কম বয়সিদের মধ্যে হৃদরোগের ঘটনা বেড়েছে, যা প্রমাণ করে যে এটি শুধু বয়স্ক বা পুরুষদের রোগ নয়।
“আমরা এখন অনেক তরুণ রোগী, এমনকি মহিলাদের মধ্যেও হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। এর কারণ মানসিক চাপ, জীবনধারা এবং হরমোনাল পরিবর্তন। আরও একটা ভুল ধারণা হলো—ওষুধ খেলেই জীবনধারায় পরিবর্তন দরকার নেই। এটা একেবারেই ভুল। ওষুধ ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে হলে অভ্যাস বদল করতেই হবে,” বলেন ডা. বোত।
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় যে সব দৈনন্দিন অভ্যাস:
কার্ডিওলজিস্টরা পরামর্শ দিচ্ছেন, হৃদ্যন্ত্রকে সুস্থ রাখতে দৈনন্দিন অভ্যাস খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। নিচে কিছু সাধারণ কিন্তু ক্ষতিকর অভ্যাস দেওয়া হলো:
- পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
- অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
- শারীরিক কার্যকলাপের অভাব
- খাবার বাদ দেওয়া বা সময়মতো না খাওয়া
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
- অতিরিক্ত সময় স্ক্রিনের সামনে কাটানো
- ধূমপান বা পরোক্ষ ধূমপান
- কম পানি পান
- অনিয়মিত খাওয়া
- ক্লান্তি বা বুক ধড়ফড় করার মতো উপসর্গ উপেক্ষা করা
এই অভ্যাসগুলো দেখতে সাধারণ হলেও, দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে।
মারিয়া