ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ধূমপান নয়, এই ৫ লুকানো অভ্যাসেই আপনার বয়স ছুটছে দৌড়ে!

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ৯ জুলাই ২০২৫

ধূমপান নয়, এই ৫ লুকানো অভ্যাসেই আপনার বয়স ছুটছে দৌড়ে!

ছবি: সংগৃহীত

অনেকেই মনে করেন ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বা শরীরচর্চার অভাবই বয়স বাড়ার মূল কারণ। কিন্তু গবেষণা বলছে, আরও কিছু গোপন অভ্যাস রয়েছে, যা অজান্তেই শরীরের বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করছে। জেনে নিন এই অজানা কারণগুলো—

১. নিয়মিত দুঃস্বপ্ন বা খারাপ ঘুম

নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন দেখা দ্রুত বার্ধক্য ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় বলা হয়, দুঃস্বপ্ন ধূমপান, স্থূলতা বা খাদ্যাভ্যাসের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক বাস্তবতা আর স্বপ্ন আলাদা করতে পারে না, ফলে বারবার দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙে যাওয়া শরীরের জন্য বড় ধকল।

সমাধান: রাতে ঘুমানোর আগে ভয়ের সিনেমা এড়িয়ে চলুন, মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা ‘বক্স ব্রিদিং’ অনুশীলন করুন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নার্ভ সিস্টেম শান্ত হয় এবং দুঃস্বপ্নের আশঙ্কা কমে।

২. ঠিকমতো দাঁত পরিষ্কার না করা

দাঁতের যত্ন শুধু হাসি সুন্দর রাখে না, এটি শরীরের সার্বিক সুস্থতার জন্যও জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দাঁত না মাজলে শরীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দেখা দেয়, যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক এমনকি স্মৃতিভ্রষ্টতার কারণ হতে পারে।

সমাধান: প্রতিদিন অন্তত দু'বার দুই মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করুন, ফ্লোরাইডযুক্ত পেস্ট ব্যবহার করুন এবং দাঁতের ফাঁকে সুতা বা ছোট ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন। মুখে দুর্গন্ধ, মাড়ি থেকে রক্তপাত, দাঁত আলগা হয়ে যাওয়া—এগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হন।

৩. উচ্চ শব্দে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার

দীর্ঘ সময় উচ্চ শব্দে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহারে স্থায়ী শ্রবণ সমস্যা হতে পারে। শ্রবণশক্তি হারানো শুধু কানে অসুবিধা নয়, এটি একাকীত্ব বাড়ায় এবং স্মৃতিভ্রষ্টতার ঝুঁকি বাড়ায়।

সমাধান: প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ৫ মিনিট বিরতি নিন, ডিভাইসের ভলিউম লিমিটার ব্যবহার করুন, এবং নয়েজ-ক্যানসেলিং হেডফোন ব্যবহার করুন, যাতে কম ভলিউমেই সাউন্ড শোনা যায়।

৪. সারাদিন বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা

ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় বসে থাকা ‘নতুন মহামারি’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি বসে থাকলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তবে শুধু দাঁড়িয়ে থাকাও সমাধান নয়, কারণ এতে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা হতে পারে।

সমাধান: প্রতি ঘণ্টায় অন্তত কয়েক মিনিট হাঁটুন বা স্ট্রেচিং করুন। নিয়মিত ছোট ছোট নড়াচড়া রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে, হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে এবং শারীরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৫. ঘন ঘন ডায়েট পরিবর্তন বা ওজন ওঠানামা

ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই একবার কমিয়ে আবার বাড়িয়ে ফেলেন, যাকে বলা হয় ‘ইও-ইও ডায়েটিং’। গবেষণায় দেখা গেছে, এই অভ্যাস হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া ওজন ওঠানামায় পেশি কমে গিয়ে শরীরের গঠন নষ্ট হয়।

সমাধান: ওজন কমানোর সময় পেশি ধরে রাখতে স্ট্রেংথ ট্রেনিং করুন। লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্বল’ নয়, বরং শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান শরীর গড়া। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আবির

×