৪০–এর পর শরীরের পরিবর্তন শুরু হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে আসে, আর সেই সঙ্গে নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। ঠিক এই সময়ে আমাদের খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু খাবার আছে, যা ৪০ পেরোনোর পর নিয়মিত না খেলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ের খাদ্য তালিকায় সেসব খাবার রাখা অত্যন্ত জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স ৪০-এর উপরে গেলে শরীরের ফাংশন পাল্টে যায়। এতে হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এসব ঝুঁকি কমানোর জন্য ডায়েটে কিছু বিশেষ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
প্রথমেই আসুন দেখি, কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলাটা মন্দ। রেড মিট বা লাল মাংস, যেমন গরু, ভেড়া কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন সসেজ, বেকন, হট ডগ ইত্যাদি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। WHO বলছে, এই ধরনের খাবার দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারসহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত সাদা আটা ও পাস্তা, যা শরীরে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, শরীরের ওজন বেড়ে যেতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
চর্বিযুক্ত খাবার, বিশেষ করে ট্রান্স ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার যেমন গভীর ভাজা খাবার, ময়দাপণ্য, মার্জারিন শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এগুলো হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য জটিলতার আশঙ্কা বাড়ায়। আর চিনি যুক্ত পানীয় যেমন সোডা, জুস কিংবা স্পোর্টস ড্রিঙ্ক অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে, যা কিডনি ও মেটাবলিক ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্যদিকে, বয়স বাড়লে আমাদের খাদ্যের মধ্যে রাখার কথা এমন কিছু খাবারও আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। যেমন ফল, সবজি, বাদাম,অলিভ অয়েল। এগুলো শরীরে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সরবরাহ করে, যা দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকার জন্য অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৪০-এর পর আমাদের ডায়েটে যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক ও হোল ফুড রাখা উচিত। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অতিরিক্ত চিনি থেকে দূরে থাকলেই শরীর অনেকটাই সুস্থ থাকে। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করাও জরুরি, কারণ এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
আপনার শরীর যেন ভালো থাকে, তার জন্য বয়সের সঙ্গে খাদ্যের মান ও গুণগত মানের দিকে মনোযোগ দিন। বয়স শুধু একটি সংখ্যা, কিন্তু সুস্থতা আপনার জীবনের গুণগত মানের মাপকাঠি। তাই সময়ের দাবি অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন, নিজের শরীরকে ভালো রাখুন।
আফরোজা
