
ছবি: সংগৃহীত
চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। হিট স্ট্রোক একটি জীবন-হুমকির মতো অবস্থা, যেখানে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তাই এই গরমে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কিছু জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
১. পর্যাপ্ত পানি ও তরল পান করুন: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। তীব্র গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে দ্রুত পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়, যা পানিশূন্যতা তৈরি করে। শুধু পিপাসা পেলেই নয়, নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করুন। স্যালাইন, ফলের রস (যেমন লেবুর শরবত, ডাবের পানি) পান করা যেতে পারে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (চা, কফি) এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো শরীরকে আরও পানিশূন্য করে তোলে।
২. হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন: গাঢ় রঙের এবং টাইট পোশাক তাপ শোষণ করে শরীরকে আরও গরম করে তোলে। তাই হালকা রঙের, সুতির এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। এটি বাতাস চলাচলে সাহায্য করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
৩. দিনের বেলায় ঘরের ভেতরে থাকুন: বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত, যখন সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে, তখন যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন। যদি বাইরে যেতেই হয়, তবে ছাতা, টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
৪. শারীরিক পরিশ্রম সীমিত করুন: তীব্র গরমে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন। যদি ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম করতেই হয়, তবে সকালের খুব ভোরে বা সন্ধ্যার পর যখন তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকে, তখন করুন।
৫. ঠাণ্ডা রাখুন শরীর: নিয়মিত ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করুন বা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিন। কপালে, ঘাড়ে এবং বগলে ঠাণ্ডা ভেজা কাপড় রাখলে শরীর দ্রুত ঠাণ্ডা হয়।
৬. সুষম খাবার গ্রহণ করুন: তাজা ফল এবং শাকসবজি বেশি করে খান, কারণ এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজ থাকে। ফাস্ট ফুড, তৈলাক্ত ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়।
৭. শিশুদের ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন: শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা তাপমাত্রার প্রতি বেশি সংবেদনশীল। তাদের পর্যাপ্ত পানি পান করানো হচ্ছে কিনা এবং তারা যেন সরাসরি রোদে না থাকে, তা নিশ্চিত করুন। তাদের হালকা পোশাকে রাখুন এবং ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করুন।
৮. অসুস্থ বোধ করলে সতর্ক হোন: যদি তীব্র তৃষ্ণা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস বা ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত শীতল স্থানে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই সহজ নির্দেশনাগুলো মেনে চললে তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব এবং সুস্থ ও সতেজ থাকা যাবে।
সাব্বির