ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

দুর্ভোগে ১০ হাজার পরিবার

তিস্তার পানি কমলেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

জামাল বাদশা, লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ২২:২৭, ৩০ জুলাই ২০২৫

তিস্তার পানি কমলেও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

পাঁচটি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

উজানের ঢলে হঠাৎ করে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে মঙ্গলবার রাতেই বিপৎসীমা অতিক্রম করলে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বর্তমানে তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমলেও ব্যারাজের ভাটি এলাকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে।

এর আগে গত রাত ১২টার দিকে তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে (৫২.২২ সেমি) উঠে যায়। ফলে হাতীবান্ধার ধুবনী ও ডাউয়াবাড়ি এলাকায় তিনটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বুধবার সকাল ১১টায় পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী, সদর ও পাটগ্রাম উপজেলার অন্তত ১০টি ইউনিয়নের ৫ হাজারেরও বেশি পরিবার এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, মাছের ঘের, ঘরবাড়ি ও স্কুল। তিস্তার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আদর্শপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবর্ধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবর্ধন হায়দারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং হাতিবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি পূর্বপাড়া সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, সানিয়াজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 
মহিষখোঁচা আদর্শপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলে, ‘স্কুলে গেছিলাম। ক্লাসরুমে পানি থাকায় বাড়িতে চলে আসলাম। মহিষখোঁচা এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি থাকায় আমাদের ক্লাস করাতে ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে সমস্যা হয়েছে।

একই এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী হাওয়া বেগম বলেন, গতকাল দুপুরের পর থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পায়। পরে বিকেলে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে। চুলা ডুবে গেছে তাই আজ রান্নাও বন্ধ।  হাতিবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়া জমির ধান ডুবে গেছে। এখন শুধু পানি আর হতাশা। পানি নদ কমলেও নষ্ট হতে পারে ফসল।
এদিকে তিস্তার পানির চাপ সামলাতে ডালিয়া ব্যারাজের সব কপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সনীল কুমার রায় বলেন, পানি রাতেই বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। ধুবনী এলাকায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পানি কিছুটা কমেছে।

বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে?  আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে নদীভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন,, প্লাবিত এলাকাগুলোর খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হচ্ছে। প্রয়োজনে সহায়তা প্রদান করা হবে।

প্যানেল হু

আরো পড়ুন  

×